ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পার্বত্য শান্তি চুক্তি

২০ বছরেও কাটেনি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

২০ বছরেও কাটেনি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ১ ডিসেম্বর ॥ পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২০ বছর পূর্ণ হওয়ার সন্ধিক্ষণে পাহাড়ে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে এখনও রয়েছে বিতর্ক। অমীমাংসিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পাহাড়ে বেড়েছে অবিশ্বাস, টানাপোড়েন আর শঙ্কা। আর এ নিয়ে বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক। জানা গেছে, পার্বত্য জেলায় কয়েক দশকের সংঘাতের পর শান্তির পথে ফিরে আসার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। শান্তি চুক্তির ২০ বছরে এরই মধ্যে সরকারের ৩৩ বিভাগের মধ্যে ১৮টি বিভাগ জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বন ও পরিবেশ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, সাধারণ প্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসহ অনেক বিভাগ হস্তান্তর করা হয়নি ২০ বছরেও। এছাড়াও অস্ত্র জমা দেয়া জনসংহতি সমিতির সদস্যদের পুনর্বাসন, ভারত প্রত্যগত শরণার্থী এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি কারণে যারা আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু হয়েছে তাদেরও পুনর্বাসন করা হয়নি বলে দাবি জনসংহতি সমিতির। আরও জানা গেছে, চুক্তি নিয়ে আশা নিরাশা ও হতাশা থাকলেও শান্তিু চুক্তির পর সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে সব ধরনের সুবিধা ভোগ করছে পাহাড়ের মানুষ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। তবে অবৈধ অস্ত্র, খুন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অপহরণ, চাঁদাবাজির মতো ঘটনা এসবের কারণে এরই মধ্যে জনসংহতি সমিতির সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বেড়েছে দূরত্ব। এই বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কেএস মং বলেন, শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অবস্থা ভিন্নতার দিকে গেলে তার দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। চুক্তির পরে পাহাড়ে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে জীবন জীবিকার উন্নয়ন না হলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে আসে না। এছাড়াও পাহাড়ে চাষযোগ্য জমি অত্যন্ত কম তাই মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় জীবন জীবিকার উন্নয়নের জন্য কর্মসংস্থানের হার আরও বাড়ানো দরকার এমন মত স্থানীয়দের। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক ক্য বা মং মার্মা বলেন, পাহাড়ের মানুষের জীবন জীবিকার উন্নয়নে কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাহাড়ে শান্তি চুক্তি হয়েছে বলে সরকারী-বেসরকারীসহ সব প্রতিষ্ঠানে তাদের নিজেদের মতো কাজ করতে পারছে। শান্তি চুক্তিকে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ঠিকাদার, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, এমনকি খেটে খাওয়া জুম চাষীদের থাকা চাঁদা গ্রহণ করছে জনসংহতি সমিতি, এমন অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের। খাগড়াছড়িতে উদ্যাপন পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি থেকে জানান, খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হলো ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০ বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে র‌্যালি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে টাউনহল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এর আগে কেক কেটে র‌্যালির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এ সময় পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল জি এম সোহাগ, জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোঃ আলী আহম্মদ খান প্রমুখ।
×