ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

হঠাৎ সুরমার ভাঙ্গনে বিলীন বাড়ি জমি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

হঠাৎ সুরমার ভাঙ্গনে বিলীন বাড়ি জমি

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সুরমা নদীর কানাইঘাট অংশে ফের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বুধবার রাতে আচমকা ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে পৌরসভার বায়মপুর (গৌরীপুর) গ্রামের বেশ ক’টি বসতঘর ও ফসলি জমি। একই সঙ্গে সাতবাঁক ইউনিয়নের খেয়াঘাট থেকে ভবানীগঞ্জ পাকা সড়ক দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় জরুরীভিত্তিতে জান মাল রক্ষায় ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে সুরমা নদীর ভাঙ্গনকবলিত গৌরীপুর ডাইকে হঠাৎ করে ভাঙ্গন দেখা দেয়। একপর্যায়ে খেয়াঘাট থেকে ভবানীগঞ্জ পাকা সড়কের সুরমা ডাইকের অংশসহ কয়েকটি বসতবাড়ি ও গাছপালা সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘বায়মপুর গৌরীপুর সুরমা ডাইকের অংশ ভাঙ্গন প্রতিরোধে তারা বার বার পৌরমেয়রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কারও পক্ষ থেকে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া গৌরীপুর গ্রামের বাবুল আহমদ, সেলিম, নুর উদ্দিন, আব্দুল করিম, শাহীন আহমদসহ কয়েকজন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‘বুধবার রাতের নদী ভাঙ্গনে তাদের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌর কর্তৃপক্ষ গৌরীপুর সুরমা ডাইকের ছোট ভাঙ্গন অংশটি মেরামতের উদ্যোগ নিলে তারা আজ বাড়িঘর হারাতেন না। বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া ভিটে বাড়ির একাংশে তারা বসবাস করছেন। এ ব্যাপারে পৌর মেয়র বলেন, ‘গৌরীপুর সুরমা ডাইকের ভাঙ্গন প্রতিরোধে গত বছর পৌরসভার উদ্যোগে কাজ করা হয়েছিল। বুধবার থেকে সেখানে বাঁশের গড় মেরামতসহ অন্যান্য কাজ চলমান থাকা অবস্থায় এই ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে পৌর কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের গাফিলতি ছিল না, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল হককে দায়ী করে মেয়র বলেন, তিনি বরাদ্দে প্রাপ্ত টাকার কাজ করতে গড়িমসি করেছেন। যাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তাদের পৌরসভার পক্ষ থেকে নগদ ২১ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে। ভাঙ্গনের বিষয়টি তিনি স্থানীয় এমপি সেলিম উদ্দিন ও জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ারকে অবগত করেছেন। পৌর কাউন্সিলর শরিফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বার বার পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিনকে গৌরীপুর সুরমা ডাইকের ভাঙ্গনকবলিত অংশটি পৌর ফান্ড দিয়ে মেরামতের জন্য বলেছি। আমার এলাকার লোকজন বার বার মেয়রের শরণাপন্ন হলেও তিনি ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। গত বছর ভাঙ্গন প্রতিরোধে মেয়রে নিজাম উদ্দিন ১৬ হাজার টাকা দিয়েছিলেন, বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করলে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে এলাকার লোকজন মেয়রের শরণাপন্ন হলেও তিনি একটি বারও এই ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি। ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রানা ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্রায় ৭০ হাজার টাকা কাজ করেছিলাম। কিন্তু এখন মেয়র তার ব্যর্থতা আমার ওপর চাপাচ্ছেন।
×