ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দখল-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে কেরানীগঞ্জের খাল

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

দখল-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে কেরানীগঞ্জের খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ১ ডিসেম্বর ॥ কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা খালটি পুনর্খননের পরও দখল ও ভরাট প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া বুড়িগঙ্গা নদীর শাখা খালটি মীরেরবাগ এলাকা থেকে কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটারজুড়ে ময়লা টুকরো কাপড় ও বর্জ্য ফেলার কারণে পুনরায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালটিতে দখল ও দূষণ বেড়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খালে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। খালটি পুনরুদ্ধারের জন্য ইতোপূর্বে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয় এবং এর পুনর্খনন ও তীর সংরক্ষণ কাজ করা হয়। কিন্তু প্রশাসনসহ কারও নজরদারি না থাকায় পুনরায় খালটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পূর্ব আগানগর এলাকায় শুভাঢ্যা খালের আশপাশ এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, কদমতলী, গোলামবাজার, ঝাউবাড়ী, নতুন শুভাঢ্যা এলাকায় খালে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ও গার্মেন্টসের টুকরো কাপড়। এছাড়া পূর্ব আগানগর জোড়া সেতুসংলগ্ন খালের তীরে একটি টিনশেডের টংঘরে জেনারেটরের ব্যবসা চলছে। জানা গেছে, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যৌথবাহিনী শুভাঢ্যা খালে বুড়িগঙ্গা নদীর মুখ থেকে চর কালীগঞ্জ, গোলাম বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের উভয় পাশে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। খালটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকারীরা খালের উভয়পাশে ১৮৬টি ছোট বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে এবং খালটি পুনরায় খনন করে সেখানে নাব্য সৃষ্টি করে। এরপর খালটিতে পুনরায় দখল ও দূষণের কারণে ২০১২ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে শুভাঢ্যা খালটি খনন ও উদ্ধারের কাজ শুরু করে। প্রায় মাসখানেক ধরে খালের খনন কাজ সম্পন্ন করে। তার কয়েক মাসের মধ্যেই আবার দখল ও দূষণের ফলে খালটি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। পরবর্তীতে খালটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড। কালিগঞ্জ খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি শরিফ উদ্দিন মিয়া (৫০) জানান, ৮/১০ বছর আগেও এ সময়ে আমরা খালে নৌকা চালিয়েছি। খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমরা এখানে নৌকা চালাতে পারছি না। খালের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ও মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় নৌকা চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া খালে পানির প্রবাহ কমে গেছে। গোলাম বাজার এলাকার বাসিন্দা আয়নাল হোসেন জানান, খালটিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে মশা-মাছি ও দুর্গন্ধে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এলাকার জনগণের স্বার্থে খালটি অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দূষণমুক্ত করা উচিত। এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা ভূমি ও রাজস্ব কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান (জুম্মন) বলেন, শুভাঢ্যা খালটি সংস্কার ও পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার ইতোপূর্বে ১০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু বর্তমানে প্রশাসনের নজরদারি ফাঁকি দিয়ে খালটি দখল ও দূষণ করছে তীরবর্তী লোকজন। আমরা অতি শীঘ্র প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে খালটি দূষণমুক্ত ও পানি প্রবাহের সৃষ্টি করব।
×