ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিতর্কিত ভিডিও নিয়ে টেরেসা মের সঙ্গে বাদানুবাদের জের

ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর স্থগিত

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর স্থগিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগামী বছর পূর্ব নির্ধারিত যুক্তরাজ্য সফর পরিত্যক্ত হতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র সঙ্গে ট্রাম্পের বাদানুবাদের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবছে হোয়াইট হাউস। ব্রিটেনের একটি উগ্র ডানপন্থী গ্রুপের মুসলিম বিরোধী ভিডিও ট্রাম্প রিটুইট করার পর দুদেশের মধ্যে মে তার সমালোচনা করেন। এই ঘটনা দু’নেতার সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি করেছে। টেলিগ্রাফ ও গার্ডিয়ান। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরের কথা ছিল। কিন্তু সেই সফর এখন আর হচ্ছে না বলে মার্কিন কূটনীতিকরা নিশ্চিত করেছেন। ট্রাম্প ব্রিটেনের ‘ওয়ার্কিং ভিজিটের’ সময় লন্ডন নতুন মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন করবেন, তার সফরসুচীতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ট্রাম্পের এ সফর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হতো না। কারণ জনতার প্রতিবাদের মুখে আগেই তার সফরসূচী থেকে রানীর সঙ্গে সাক্ষাত বাদ দেয়া হয়েছিল। টেলিগ্রাফ পত্রিকা জানতে পেরেছে ট্রাম্পের জানুয়ারির সফর স্থগিত করা হয়েছে। কবে এই সফর হবে তার কোন তারিখ জানানো হয়নি। একজন সিনিয়র মার্কিন কূটনীতিক বলেছেন, ‘ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরের বিষয়টি পরিত্যক্ত হয়নি। তবে তা যে ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে হচ্ছে না তা নিশ্চিত। উগ্র ডানপন্থী ব্রিটিশ শ্বেতাঙ্গ গ্রুপ ব্রিটেন ফার্স্ট সম্প্রতি একটি মুসলিম বিরোধী ভিডিও আপলোড করেছে। ওই ভিডিওটি ট্রাম্প তার টুইটারে রিটুইট করেছেন। এ নিয়ে মে বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের উদ্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মে বেশ সতর্কভাবে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এতে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে ব্রিটেন ফার্স্টের ভিডিওটি রিটুইট করা ঠিক হয়নি।’ যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হোয়াইট হাউসে মে’র বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছেন। ব্রিটিশ কূটনীতিকরা আশা করছেন ট্রাম্প হয় টুইট করা ভিডিও ডিলিট করে দেবেন অথবা এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করবেন। ট্রাম্পের এ কাজের বিরোধিতা করলেও মে ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটেনের দীর্ঘদিনের সম্পর্কে যেন চিড় না ধরে। কিন্তু তারপর দুদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। আগামী বছর ট্রাম্প সফরে এলে তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হবে কি না তা নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়েছে এবং এতে সবদলের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। বিচারমন্ত্রী স্যাম জিয়ামাহ বিবিসি কোয়েশ্চেন টাইম অনুষ্ঠানে সম্প্রতি বলেছেন তিনি ট্রাম্পের ব্রিটেন সফরে আসা নিয়ে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না। তিনি বলেন, ‘তার পরিকল্পিত সফর নিয়ে আমি কিছুটা বিব্রত বোধ করছি। কারণ তিনি স্পষ্টতই বিভেদ সৃষ্টিকারী। এদিকে মে অতি সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ সফর করেন। বৃহস্পতিবার জর্দানের রাজধানী আম্মানে সাংবাদিকদের মে বলেন, ‘বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে যুক্তরাষ্ট্র ভুল করলেও আমরা কিছু বলব না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে ব্রিটেন ফার্স্টের ভিডিওটি রিটুইট করা ঠিক হয়নি। ব্রিটেন ফার্স্ট একটি ঘৃণা প্রচারকারী সংগঠন। এটি বিভিন্ন ব্রিটেনে বসবাসরত কমিউনিটিগুলোর মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। জাতি হিসেবে আমরা যে পারস্পরিক সহিষ্ণুতা ও শ্রদ্ধার যে মূল্যবোধ আমরা লালন করি গ্রুপটি সরাসরি বিরোধিতা করে থাকে।’
×