ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রেন্ডি অনুষঙ্গ নাকফুল

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১ ডিসেম্বর ২০১৭

ট্রেন্ডি অনুষঙ্গ নাকফুল

মুনতাহা ইসলাম এই অঞ্চলে নাকফুল শুধু নাকফুলই না। এখানে নাকফুলের ঐতিহ্যগত অবস্থান রয়েছে। সাধারণত এদেশে বিয়ের পর নাকফুল আর চুড়ি পরে মেয়েরা। তবে এখন আর সেই আগের মতো নেই। সময়ের সঙ্গে যেমন অনেক কিছুই শিথিল হয়েছে তেমনি মেয়েরা ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে নাকফুল ব্যবহার করে হরহামেশা। আগে শুধু সোনা এবং রুপার নাকফুল পরত মেয়েরা। আকৃতি, নকশা বা রং বদলে নাকফুল বারবার ঠাঁই করে নিয়েছে এ দেশের সাধের গয়নার তালিকায়। নতুন চেহারা আর ধারা নিয়ে নাকফুল এখন আবার জনপ্রিয়। নাক ফোঁড়ানো নেই, তাই পরা হয় না নাকফুল। এ কথাকে বিদায় দেওয়া যায়। এখনকার নাকফুলগুলোর সুবিধাই হলো এটা। বানানোই হচ্ছে এমনভাবে যে কেউ পরতে পারবেন। নকশাগুলোতেও বেশ ভিন্নতা পেয়ে যাবেন। কখনও থাকছে দেশীয় নকশার ছোঁয়া, কখনও বা পেয়ে যাবেন অন্য দেশের নকশার ছোঁয়া। আজকাল পোশাক ও অনুষঙ্গে পড়েছে পশ্চিমা প্রভাব। সেখানে কান-গলা-হাতের গয়না পুরোপুরি মানায় না। আমাদের দেশি নাকফুল অদ্ভুত সুন্দর লাগে। পশ্চিমেরই আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, অতিরিক্ত ঝলমলে ধাতু যেমন সোনা, হিরার ব্যবহার এড়িয়ে চলা। সেই চাহিদা পূরণ করছে রুপা। অতিরিক্ত ঝলমলও করে না, আবার ঐতিহ্যবাহী নকশা ফোটালেও দারুণ মানায় যে কোন পোশাকের সঙ্গে। অবশ্য এটি যে সম্পূর্ণ পশ্চিমের রীতি, তা কিন্তু নয়।’ আমরা যারা রবিঠাকুরের ছোটবেলার স্মৃতিচারণা পড়েছি, সেখানে দেখেছি, সেই সময়ের নারীরাও সোনার গয়নার ওপরে একটি আলাদা কাপড় জড়িয়ে রাখতেন, যেন অতিরিক্ত চকচক না করে। গয়নার চাকচিক্য কমিয়ে অভিজাত রূপ দেওয়ার চর্চা আমাদের প্রাচীন রীতির অংশ। একটু সাদাটে ধরনের ধাতুতে তৈরি এই নতুন ধাঁচের নাকফুলগুলো মূলত তৈরি হয় দেশি ও জার্মান রুপায়। পাশাপাশি অন্য ধাতু যেমন পিতল বা দস্তায়ও তৈরি হচ্ছে। ধাতু যা-ই হোক, তাতে অক্সির কাজ বেশি দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য ধাতুতে নাক পেকে যাওয়ার কিংবা দাগ হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। বিশেষ কিছু আয়োজনে এই নাকফুলগুলো খুব মানায়। গায়ে হলুদ, মেহেদি উৎসব, পূজা কিংবা যেকোনো দেশী সাজের সঙ্গে পরতে এই নাকফুলগুলো কিনছেন তরুণীরা। তবে যারা কৈশোরের সীমা পেরিয়েছেন, তাদের মধ্যেই এগুলোর কদর বেশি। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণী, কর্মজীবী ও সদ্য বিবাহিতা নারীদের মধ্যে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বড় নাকফুল। এগুলোর ডিজাইনে থাকছে জয়পুরি কাজ, ফুল, পাতা ও তারার আকৃতি এবং নকশা। জ্যামিতিক ধাঁচের মাঝে আছে গোল, তিনকোণা কিংবা রেখার বিভিন্ন আকৃতি। শুধু নকশা নয়, কিছু নাকফুলে থাকছে রং ও পাথরের কারুকাজও। এই নাকফুল খুঁজতে গিয়েছিলাম চাঁদনি চকের গয়নাগুলোর দোকানে। নাচের ও অক্সি ধাঁচের গয়নার বিশেষায়িত দোকানগুলোতে পাওয়া গেল এমন নাকফুলগুলো। আজকালকার নাকফুলগুলোতে মাদ্রাজি একটা প্রভাব আছে। শুধু পাথর বা রুপার বসানো বা টিপ নাকফুল নয়; দক্ষিণ ভারতের ঝোলা, ভারি কাজ করা নাকফুলগুলোও অনেকে খুঁজছেন এখন। সামনে ওগুলোর জনপ্রিয়তাও বাড়বে বলে ধারণা করছেন তিনি। নকশাগুলো মূলত প্রভাবিত হতে পারে, ম্যাটেরিয়াল তো দেশেই পাওয়া যায়।
×