ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে পোপের আহ্বান;###;বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে ভাষণ;###;রোহিঙ্গা শব্দটি এড়িয়ে গেলেন পোপ;###;রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বিপুল সংখ্যক লোককে আশ্রয় দেয়ায় উচ্ছ্বসিত প্রশংসা;###;রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পোপের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশের পাশে থাকুন

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশের পাশে থাকুন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে এই শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। বাংলাদেশ সফরের প্রথম দিন বঙ্গভবনে এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এই আহ্বান জানান রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মগুরু। এদিকে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সোচ্চার হতে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর দরবার হলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে বক্তব্য দেন পোপ। স্পেনিশ ভাষায় তার দেয়া বক্তব্যের ইংরেজী অনুলিপি অনুষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। তবে বক্তব্যে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি এড়িয়ে যান পোপ। বাংলাদেশে আসার আগে মিয়ানমার সফরেও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করায় তার সমালোচনা হচ্ছে। রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রতি ইঙ্গিত করে পোপ ফ্রান্সিস তার বক্তব্যে বলেন, গত কয়েক মাসে রাখাইন থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে এবং তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সমাজ উদার মন এবং অসাধারণ ঐক্যের পরিচয় দিয়েছে। এটা ছোট কোন বিষয় নয়, বরং পুরো বিশ্বের সামনেই এটি ঘটেছে। পুরো পরিস্থিতি, মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট এবং শরণার্থী শিবিরগুলোতে থাকা আমাদের ভাই-বোন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, তাদের ঝুঁকির গুরুত্ব বুঝতে আমরা কেউই ব্যর্থ হইনি। এই সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসাটা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন পোপ। তিনি বলেন, কঠিন এই সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তবে শুধু রাজনৈতিক বিষয় সমাধানই নয়, বাংলাদেশে দ্রুত মানবিক সহায়তাও দিতে হবে। ভাষণের শুরুতেই পোপ সফরের আমন্ত্রণ জানানোয় রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি তার দুই পূর্বসূরি পোপ ষষ্ঠ পল, পোপ দ্বিতীয় জন পলের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন। বাংলাদেশকে ‘নবীন’ রাষ্ট্র উল্লেখ করে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, তারপরও পোপদের হৃদয়ে এই দেশের জন্য সবসময়ই বিশেষ স্থান রয়েছে। বাংলাদেশে আসার পথে এই দেশকে ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে তার কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল উল্লেখ করেন তিনি। এদেশে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা ছোট-বড় নদী আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পর্কেও জেনেছেন তিনি। পোপ বলেন, আমি মনে করি, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই আপনাদের বিশেষ পরিচয়ের ধারক। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে বিভিন্ন ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে কোন দেশ, জাতি কিংবা রাষ্ট্র একা এগিয়ে যেতে পারে না উল্লেখ করে পোপ বলেন, মানবজাতির সদস্য হিসেবে আমাদের একে অন্যকে প্রয়োজন এবং পরস্পরের ওপর নির্ভর করতে হয়। বাংলাদেশের জাতির জনকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন এবং এই আদর্শ সংবিধানে যুক্ত করার কথা বলেছিলেন। তিনি একটি আধুনিক, বহুত্ববাদী এবং অংশগ্রহণমূলক একটি সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে প্রতিটি মানুষ এবং জাতি মুক্ত, শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে বসবাস করতে পারবে, যেখানে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সমান অধিকার থাকবে। শুক্রবার রমনার সমাবেশের কথাও উল্লেখ করেন পোপ। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে যদিও আমার সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বক্তব্য দেয়া, তারপরও রমনায় বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাতও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেখানে সবাই একসঙ্গে শান্তির জন্য প্রার্থনা করব এবং শান্তির জন্য কাজ করতে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করব। সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশে প্রার্থনা করবেন পোপ ফ্রান্সিস। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সহাবস্থানের প্রশংসা করেন পোপ। তবে বিভক্তি তৈরি করতে কখনও কখনও ধর্মকে ব্যবহার করা হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তিনি গত বছর গুলশানে জঙ্গী হামলার কথা স্মরণ করেন। বাংলাদেশে ক্যাথলিকরা সংখ্যায় কম হলেও স্কুল, ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার মধ্যে দিয়ে এই দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ রেখে চলেছে বলে মন্তব্য করে ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মিয়ানমার সফর শেষে বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মেঘদূতে করে বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টায় ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছান পোপ। সেখানে তাকে স্বাগত জানান, বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। খ্রীস্টান রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা আর তোপধ্বনিতে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। পোপ বিমান থেকে নেমে আসার সময় ২১বার তোপধ্বনিতে তাকে স্বাগত জানানো হয়। দুটি শিশু ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ৮৮ বছর বয়সী খ্রীস্টান ধর্মগুরুকে। কিছুটা দূরে একদল শিশু তখন রবি ঠাকুরের আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে গানের সঙ্গে ঝালর নাড়িয়ে নৃত্য পরিবেশন করছিল। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ পোপ ফ্রান্সিসকে নিয়ে মঞ্চে আসার পর ভ্যাটিকান ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়। পরে পোপ গার্ড পরিদর্শন করেন। গার্ড পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সবার সঙ্গে পরিচিত হন পোপ। গাড়িতে ওঠার আগে শিশুদের পরিবেশিত নাচও তিনি দেখেন। বিমানন্দরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র বাণিজ্যমিন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার, ঢাকায় ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক এবং ঢাকার আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন পোপকে স্বাগত জানতে। পোপের সফর উপলক্ষে ঢাকার পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকা সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। টার্মিনালের ওপরে এবং সামনে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের পতাকা দেখা যায়। ভিভিআইপি টার্মিনালের দুই পাশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রপ্রধান পোপ ফ্রান্সিসের দুটি বড় ছবি স্থাপন করা হয়। টার্মিনালের ওপরে বড় করে লেখা ছিল ‘স্বাগতম হে মহামান্য অতিথি’। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভারে যান পোপ ফ্রান্সিস। জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। সাভার থেকে ঢাকার ধানম-িতে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন পোপ। সেখানে ঘুরে ঘুরে জাদুঘরের বিভিন্ন প্রদর্শনী দেখেন এবং সেখানে রাখা পরিদর্শন বইয়ে সই করেন পোপ। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে বঙ্গভবনে যান পোপ। সেখানে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। পরে বঙ্গভবনের দরবার হলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য রাখেন। বারিধারার ভ্যাটিকান দূতাবাসে রাতে অবস্থান করেন পোপ ফ্রান্সিস। ঢাকা সফরকালে ভ্যাটিকান দূতাবাসেই অবস্থান করবেন পোপ। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ফ্রান্সিস পোপ ঢাকায় এসেছেন। গত ৩১ বছরের মধ্যে কোন পোপের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। পোপকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস এমন এক সময়ে ঢাকায় আসলেন, যে সময় বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলা করছে। এছাড়া পোপ ফ্রান্সিস প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকেই বাংলাদেশে এসেছেন। সে কারণে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পোপের সফরের সময় রোহিঙ্গা সঙ্কটকেই প্রাধান্য দেয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েই পোপকে ঢাকার বার্তা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিকে ঢাকার রমনা ক্যাথিড্রাল থেকে জানানো হয়েছে, পোপের সফরের প্রতিপাদ্য হলো শান্তি ও সম্প্রীতি। সরকারের অনুমোদন নিয়ে আয়োজকরা রোহিঙ্গাদের একটি ছোট গ্রুপকে ঢাকায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন। পোপের ঢাকা সফরের বিষয়ে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, পোপের ঢাকা সফর আমাদের জন্য গৌরব ও গর্বের। আমরা রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিপদে আছি। পোপের এ সফর আমাদের জন্য আলাদা গুরুত্ব বহন করে। রোহিঙ্গা সঙ্কটে পোপ আমাদের পাশে আছেন বলে আগেই জানিয়েছেন। সূত্র জানায়, গত ৩১ বছরের মধ্যে কোন পোপের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। তবে ১৯৭০ সালে পোপ ষষ্ঠ পল ঢাকায় এসেছিলেন। সে বছর ২৭ নবেম্বর অনানুষ্ঠানিকভাবে মাত্র এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতিতে বিমানবন্দরে অবস্থান করেছিলেন ষষ্ঠ পল। যাত্রা বিরতির সময়ে বাংলাদেশে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে মৃতব্যক্তিদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৮৬ সালে ঢাকায় আসেন দ্বিতীয় পোপ জন পল। এবার ঢাকায় আসেন পোপ ফ্রান্সিস। সফরের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশে প্রার্থনা করবেন পোপ ফ্রান্সিস। এরপর ভ্যাটিকান দূতাবাসে সাক্ষাত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বিকেলে তিনি যাবেন কাকরাইলের রমনা ক্যাথেড্রালে, সেখানে আর্চবিশপ হাউসে বিশপদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। শান্তি কামনায় আন্তঃধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত ঐক্য বিষয়ক সভায় অংশ নেবেন। সফরের শেষ দিন শনিবার সকালে তেজগাঁওয়ে মাদার তেরেসা হাউস পরিদর্শনে যাবেন পোপ। এরপর তেজগাঁও হলি রোজারিও চার্চে খ্রীস্টান যাজক, ধর্মগুরু ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে চার্চের কবরস্থান পরিদর্শন করবেন। দুপুরের পর ঢাকায় নটরডেম কলেজে তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করবেন। সফরের ইতিটেনে বিকেল ৫টায় শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়বেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু। তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে পোপের সহায়তা চাইলেন রাষ্ট্রপতি বাসস জানায়, রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আজ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বাসভূমে ফেরাতে এবং এ সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার সরকারের ওপর অব্যাহত চাপ প্রয়োগে পোপ ফ্রান্সিসের সহায়তা কামনা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে বিশ্বের ১২০ কোটি ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের নেতা পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে এক একান্ত বৈঠকে রাষ্ট্রপতি এ সহায়তা চান। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, বৈঠকে রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে সেক্ষেত্রে পোপের সক্রিয় সহায়তা কামনা করেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রশ্নে পোপের অবস্থানের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, রোহিঙ্গাদের তাদের পিতৃভূমিতে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতকরণে পোপ ফ্রান্সিস খুবই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ভ্যাটিকান সিটির আন্তরিক সমর্থনের কথা স্মরণ করে বলেন, ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে ভ্যাটিকান সিটির দূতাবাস খোলার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকান সিটির সম্পর্ক ধীরে ধীরে জোরদার হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ধর্ম যার যার কিন্তু এর উৎসবগুলো সবার।’ এর আগে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পোপ ফ্রান্সিসকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিব এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
×