ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সব্যসাচী দাশ

সাইমনের মানিব্যাক গ্যারান্টি

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৩০ নভেম্বর ২০১৭

সাইমনের মানিব্যাক গ্যারান্টি

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় বিনোদনের খবরে একটি নাম এবং ছবি বেশ নিয়মিত ছাপা হচ্ছে! মূলত মানুষটির বিরতিহীন কর্মযজ্ঞ এসব খবরের যোগান দিচ্ছে! বলছিলাম এই সময়ের ব্যস্ত নায়ক সাইমন সাদিকের কথা। নিয়মিত সিনেমার কাজ এবং শূটিংয়ে ব্যস্ত থাকছেন ঢাকাই সিনেমার এই জনপ্রিয় নায়ক। ব্যস্ততার মাত্রা কতটা প্রকট! কি অপেক্ষা করছে তার দর্শকদের সামনে! নিজের ব্যক্তিগত জীবন, ভক্ত, বাংলাদেশী সিনেমা, ব্যক্তিগত মতামত এসব বিষয় নিয়ে আনন্দকণ্ঠের কথা হয় এই বিজি মানুষটির। অবশ্য, গত সপ্তাহে স্বচক্ষে তার ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের নমুনা দেখার সুযোগ হয়েছিল। ভরদুপুরে এক ফাইটিং দৃশ্যে। একবার দুইবার তিনবার কখনও কখনও এরও বেশিবার এক দৃশ্য ধারণ করতে দেখেছি! ওটা ছিল শাহীন সুমনের ‘মাতাল’ সিনেমার শূটিং স্পটের অভিজ্ঞতা। তার সার্বিক খোঁজখবর ভক্ত থেকে সিনেমাপ্রেমীদের জানাতে টেলিফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমবার তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি, পরবর্তীতে নিজেই ফোন ব্যাক করেন। প্রথমেই প্রশ্ন করি কেমন আছেন ? সাইমন, ভাল, আপনি? ভাল। কোথায় আছেন, কি করছে? আমি জিমন্যাসিয়ামে ছিলাম। আপনার সার্বিক খবর বলেন? সাইমন, এক কথায় বলব সব মিলিয়ে ভালই আছি। তবে, একটু টাইট সময় পার করছি। আপনার শেষ হওয়া সিনেমার খবর বলেন। সাইমন, বেশ কয়েকটা সিনেমার কাজ শেষ হয়েছে এর মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘জান্নাত’ শওকত হোসেনের ‘নদীর বুকে চাঁদ’ এবং ‘কাবিন’ শেষ করেছি। তাজুল ইসলামের ‘গোপন সংকেত’ প্রায় অর্ধেকটা শেষ করেছি। শাহীন সুমনের ‘মাতাল’ করছি। ১ ডিসেম্বর থেকে বদিউল আলম খোকন ভাইয়ের সিনেমায় কাজ শুরু করব। নাম-ঠিক হয়নি কিন্তু চুক্তি হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের পরবর্তী সিনেমায়। আনন্দকণ্ঠ, আপনার এত কাজের ভিড়ে দর্শকদের চমকে দেয়ার মতো কী কোন কাজ আপনার বিবেচনায় অপেক্ষা করছে? হ্যাঁ, করছে। সিনেমা ‘জান্নাত’ দর্শকদের দারুণভাবে মুগ্ধ করবে। সম্পূর্ণ একটা ইউনিক গল্প। আমি নিজেই কয়েকবার জান্নাতের স্ক্রিপ্ট পড়েছি। প্রতিবারই ভীষণ ভাল লেগেছে। আপনার ভাল লাগার একটু পরশ যদি আগাম দর্শকদের দিতেন। সাইমন, সিনেমার নাম জান্নাত। কি করলে মানুষ জান্নাত পাবে বা জান্নাতবাসী হবে। এক্ষেত্রে আমাদের চিন্তা এবং ধর্মের প্রকৃত ব্যাখ্যা এবং ভুল চিন্তার মাশুল। আর এসবের সঙ্গে হৃদয় উত্তাল করা অবুঝ প্রেম। সব মিলিয়ে দশর্কদের দারুণভাবে মুগ্ধ করবে। এটা আমি জোরের সঙ্গে বলতে পারি। আসছে মাসের ১৫ তারিখে মালেক আফসারীর বিগ বাজেটের সিনেমা ‘অন্তর জ্বালা’ দেশব্যাপী প্রায় ১৭৫টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে এই পরিচালক বলেছেন, সিনেমা দর্শকদের ভাল লাগবে, ব্যবসা সফল হবে। আর যদি না হয় তা হলে আমি মালেক আফসারী আর সিনেমা বানাব না। তার এই বক্তব্যে প্রচ- আত্মবিশ্বাসের ছাপ আমরা দেখেছি। আপনার সিনেমার ক্ষেত্রে এমন কিছু কি বলতে চান। সাইমন, দেখন আগেই বলেছি জান্নাত দর্শকদের ভাল লাগবে, আমার অভিনীত সব সিনেমার কথা কিন্তু নিজে থেকে বলি না। তবে হ্যাঁ, শেষমেশ দর্শকদের মানিব্যাক গ্যারান্টি দিতে পারি। এর মনে ভাল তাদের লাগবে এবং পয়সাও উসুল হবে। আনন্দকণ্ঠ, আচ্ছা একটা সিনেমা যখন ভাল হয় বা দর্শকদের মন জয় করে তখন পুরো কৃতিত্ব একরকম নায়কের গলায় ঝোলে! আবার যখন উল্টোটা ঘটে তখনও কিন্তু নায়কের ওপর বর্তায়। এই বিষয়টা আপনি কিভাবে দেখেন। সাইমন, দেখুন অভিনয়টা হলো গল্পের স্ক্রিপ্ট চরিত্রের জন্য কী ডিমান করছে, আর অভিনীত চরিত্র সেই ডিমানকে কতটুকু মূল্য দিতে পারছে তার ওপর ব্যাসিস করে। তার পরও দর্শক সেন্টিমেন্ট যে সব সময় গভীর হবে তা আমি ভাবি না। গত কয়েক বছর ধরে দু’-তিনটি করে সিনেমা ব্যবসায়ী সফলতা পাচ্ছে বা হিট হচ্ছে। এতে করে ভাল বা দক্ষ চিত্র পরিচালকের অভাব আছে বলে আপনি মনে করেন? সাইমন, না। আমাদের অনেক ভাল ভাল চিত্র পরিচালক আছে। কিন্তু বিভিন্ন সঙ্কীর্ণতা, প্রতিবন্ধকতা আমাদের এই পরিচালকগুলোকে উঠতে দেয় না। বিশেষ করে সিনেমার বাজেট একটা বিরাট ফ্যাক্ট। দেখন মাত্র ৭০-৮০ লাখ টাকায় পাঁচটা গান পাঁচটা ফাইটিং দৃশ্যের গল্পের সিনেমা অনায়াসে অনেক পরিচালক অবলীলায় বানিয়ে ফেলেন। ছবির যে দৃশ্যে বিশটা গাড়ি দরকার পড়ে সেখানে তারা চারটা গাড়ি দিয়ে কভার করেন। এতে করে ক্যামেরায় ‘আসল বিউটি’ ধরা পড়ে না। নাম নিয়েই আপনাকে উদাহরণ দেই, এই টাকার মধ্যে বলিউড চিত্র পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালী দুটো শটও তুলতে পারবে না। সে বিচারে আমাদের পরিচালকরা অনেক যোগ্য। আসল সমস্যা হলো প্রযোজনা সংস্থার। আমাদের দেশে ও রকমভাবে বিবেচনা করলে ভাল প্রযোজনা সংস্থার সংখ্যাই বা কয়টা! আমাদের ইন্ডাস্ট্র্রির নায়িকাদের খবর বলেন, আপনার বিবেচনায় কে কে ভাল কাজ করছেন? মাহিয়া মাহি ভাল অভিনেত্রী, পরীমনি খুব ভাল করছে। দর্শক এবং কজের বিবেচনায় এদের গ্রহণযোগ্যতা বেশ। সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে ভারতের সিনেমা চলছে, বিনিময়ে বাংলাদেশের সিনেমাও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলে চলছে। এই বিষয়টা আপনি কী ভাবে দেখছেন। সাইমন, না এ ব্যাপারে আমি এক মত নই! কেন না তার বিশাদ ব্যাখ্যায় না গিয়ে শুধু একটা কথাই বলব, সবার আগে আমার দেশ। আপনার ইচ্ছা এবং আশার কথা বলেন, আমার ইচ্ছা খুব ভাল সিনেমায় অভিনয় করার। আর আশা, দর্শকরা আরও বেশি হলমুখী হবে এই আমি সব সময় চাই।
×