ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

২২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৩০ নভেম্বর ২০১৭

২২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভবনের পাঁচটি শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষকদের দুটি কক্ষ প্রায় ২২ বছর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মাঝে মধ্যেই ছাদ থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর ঝরে পড়ে পলেস্তরা। বর্ষায় ছাদ ভিজে থাকায় ওই সময় বেশি আতঙ্কে থাকতে হয়। ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ায় এবং বিমে ফাটল দেখা দেয়ায় সর্বক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানিয়েও হয়নি কোন সুরাহা। বর্তমানে প্রায় আটশ’ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে ওই বিদ্যালয়ে। গত সাত বছর থেকে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলে গোদাগাড়ি উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে বিদ্যালয়টি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ষষ্ঠ শ্রেণীর ৩টি কক্ষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিমের পলেস্তরা সম্পূর্ণ খসে পড়ায় রড বেরিয়ে এসেছে এবং রডে মরিচা ধরে ক্ষয়ে গেছে। এছাড়াও শিক্ষকদের দুটি কক্ষের বিমে দেখা দিয়েছে ফাটল। ছাদের বিভিন্ন স্থানে বেরিয়ে আছে রড। ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আফিফা খাতুন, হৃদয় আহমেদ ও নাঈমসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থী জানায়, ক্লাস রুমে সব সময় ভয়ে থাকি। ছাদ থেকে মাথা ও বইয়ের ওপর পলেস্তরা খসে পড়ে তখন পড়ায় মনোযোগ দিতে পারি না। কখনও সামনের ব্লাক বোর্ডের দিকে আবার কখনও ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকি। কখন জানি মাথার ওপর ভেঙ্গে পড়ে ছাদ। বারবার উপরে তাকালে অনেক সময় শিক্ষক বকাবকি করেন। মনিরুজ্জামান, আব্দুল লতিফ, শামিম রেজাসহ কয়েক অভিভাবক জানান, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান জানান, ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়ের সাত কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। গত প্রায় ২২ বছর থেকে ভবনের ছাদের ও বিমের পলেস্তরা খসে পড়তে থাকে। নিজ উদ্যোগে কয়েকবার সংস্কার করা হয়। কিন্তু রডে মরিচা ধরায় পলেস্তরা বারবার খসে পড়ছে। তিনি জানান, ২০১২ সালে শিক্ষা অধিদফতরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়টি জানিয়ে সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়।ওই সময় বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকেও অবহিত হরা হয়। এরপর ২০১৫ সালের মে মাসে ভূমিকম্প হওয়ার পর শিক্ষা অধিদফতরের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সরেজমিনে দেখে গিয়ে উপজেলার এক নম্বর ক্ষতিগ্রস্তের তালিকাভুক্ত করেন বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটিকে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়টি জানালে তিনি বিদ্যালয় মাঠে টিনের ছাউনী করে ক্লাস নেয়ার পরামর্শ দেন।
×