ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১০ মিশনে

রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ৩০ মিশন

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৯ নভেম্বর ২০১৭

রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ৩০ মিশন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে সাধারণত ৫৭টি দেশে পণ্য ও সেবা রফতানি হয়ে থাকে। এসব দেশে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে অর্জিত হয় রফতানির সামগ্রিক লক্ষ্যমাত্রা। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-অক্টোবর) ওই ৫৭ গন্তব্যের ৩০টিতেই অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। তবে বাকি ২০টি গন্তব্যে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ১০টি মিশনে ভাল প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মিশনগুলো হচ্ছে বেইজিং, দুবাই, জেনেভা, সিউল, হ্যানয়, ভিয়েনা, কোপেনহ্যাগেন, দারুসসালাম, ব্যাংকক ও আঙ্কারা। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা গেছে, আলোচ্য সময়ে দেশ থেকে সামগ্রিকভাবে রফতানি হয়েছে ১ হাজার ১৫০ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ এই সময়টাতে রফতানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসের পণ্য রফতানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এবারের রফতানি আয় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছিল ১ কোটি ৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। এ কারণেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও বার্লিন, ইয়াঙ্গুন, সিঙ্গাপুর, নয়াদিল্লী, কুয়ালালামপুর, প্যারিস, মস্কো, ম্যানিলা, জাকার্তা, লিসবন, ভিয়েনা, থিম্পু, রাবাত, হ্যানোয়, কাঠমান্ডু, ইসলামাবাদ, রিয়াদ, কলম্বো, বেজিং, দুবাই, জেনেভা এই ২০ গন্তব্যে গতবছরের তুলনায় রফতানি বেড়েছে। ইপিবির তথ্য অনুসারে, বিশ্বে বাংলাদেশের যে ১৮ মিশনে বাণিজ্যিক কর্মকা- আছে তার মধ্যে মাত্র ৬টি মিশন রফতানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছে। আর বাকি ৯ মিশনই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম থাকা যে ৬টি মিশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে সেগুলো হলো-বার্লিনম ইয়াঙ্গুন, অটোয়া, তেহরান, লন্ডন, মাদ্রিদ ও ওয়াশিংটন। আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি রফতানি আয় এসেছে বার্লিন থেকে। এই সময়ে ওই গন্তব্য থেকে মোট ২০২ কোটি ৫২ লাখ ডলার রফতানি আয় এসেছে। এরপরেই ওয়াশিংটনে রফতানি করে আয় হয়েছে ১৮৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। আর এই সময়ে লন্ডনে রফতানি করে এসেছে ১২৫ কোটি ডলার। অটোয়া মিশন থেকে আয় হয়েছে ২৫ কোটি ডলার, দিল্লীতে রফতানি করে আয় হয়েছে ২২ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও সারা বিশ্বে এক ধরনের নীরব মন্দা চলছে। এটিই রফতানি আয় কমার আসল কারণ। তবে রানা প্লাজা ধসের পরে বেশকিছু বায়ার ব্র্যান্ড তাদের ব্যবসা এখানে বন্ধ না করলেও সম্প্রসারণ করেনি। এটিও রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিনিয়োগ কম হচ্ছে। এর ফলে রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ প্রসঙ্গে রফতানিকারকদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী জনকণ্ঠকে বলেন, গতানুগতিক দেশের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রফতানি খাত। নতুন নতুন দেশের দিকে ব্যবসায়িক পরিসর বাড়াতে হবে। মিশনগুলো এ কাজে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে পারে। বিশেষ করে কোন দেশে কখন কোন ধরনের পণ্যের উপযোগিতা ও চাহিদা রয়েছে, সেটা তারা খুঁজে বের করে সে মোতাবেক ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিতে পারে। তবেই সফলতা আসবে।
×