ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাশরাফির ঝড়ো ব্যাটিং

সিলেটকে আবারও হারাল রংপুর

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৯ নভেম্বর ২০১৭

সিলেটকে আবারও হারাল রংপুর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কি অসাধারণ ব্যাটিং করছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। রংপুর রাইডার্সকে বারবার জেতাচ্ছেন। দলের প্রয়োজনে কখনও ওয়ানডাউনে নেমে। কখনও সাত নম্বরে নেমে। মঙ্গলবার যেমন সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষেও প্রয়োজনের মুহূর্তে নেমে রংপুরকে জেতালেন অধিনায়ক মাশরাফি। সিলেটকে আবারও হারাল রংপুর। ৪ উইকেটে জিতল। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর রাইডার্স। আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে সিলেট সিক্সার্স বিশাল স্কোরই গড়ে। ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৭৩ রান করে। বাবর আজম সর্বোচ্চ ৫৪ ও সাব্বির রহমান রুম্মন ৪৪ রান করেন। নাজমুল ইসলাম ৩ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯.৪ ওভারে ১৭৭ রান করে জিতে যায় রংপুর। ক্রিস গেইলের ব্যর্থতার মাঝেও জিয়াউর রহমানের ঝড়। ১৮ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রান করেন জিয়াউর। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দ্যুতি ছড়ানো ব্যাটিং। ৩৮ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৩ রান করেন ম্যাককালাম। এরপর রবি বোপারারও (২৪ বলে ৩৩) ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখা মিলল। তবুও জিততে মাশরাফির ব্যাটিং ঝড়ই লাগল। ১২ বলে জিততে যখন ২০ রানের দরকার, এমন মুহূর্তে রংপুর জিতবে সেই আশা যেন নিভে যেতে শুরু করে। কিন্তু মাশরাফি এমনই চমক দেখালেন, জিতেই গেল রংপুর। ১৯তম ওভারে একটি ছক্কা হাঁকান মাশরাফি। ওভারটিতে ১১ রানও হয়। তাতে জয়ের আশা জেগে ওঠে। ৬ বলে জিততে যখন ৯ রান লাগে তখন দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে দেন মাশরাফি। চতুর্থ বলে নাহিদুল ইসলাম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতা নিশ্চিত করেন। মাশরাফি (১০ বলে ২ ছক্কায় ১৭*) ও নাহিদুল (১৪*) মিলে রংপুরকে জেতান। টানা দুই ম্যাচে জিতে রংপুর। তাতে পয়েন্ট তালিকাতে আরও শক্ত অবস্থান দাঁড় হয়ে যায়। জিয়াউরের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং, ম্যাককালামের ব্যাটিং দ্যুতি, বোপারার দুর্দান্ত ব্যাটিং, মাশরাফির ব্যাটিং ঝড়ের পরও ম্যাচসেরা কোন ব্যাটসম্যান হননি। হয়েছেন স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। তিনি দুর্দান্ত বোলিং করেন। শুরুতেই যে সিলেটের ৩ উইকেট পড়ে তা শিকার করেন অপু। আর অপুর এই নৈপুণ্যেই বিপাকে পড়ে সিলেট। এই বিপদ উতরে গেলেও বড় স্কোর গড়লেও শেষ পর্যন্ত যে স্কোর গড়া হয় তা রংপুরকে হার মানানো যায়নি। অপু শেষ পর্যন্ত ৪ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন। অপুর স্পিন ভেল্কিতেই শুরুটা ভাল হয়নি সিলেটের। ১৪ রানে নুরুল হাসান সোহানকে হারানোর পর ৩০ রানের সময় নাসির হোসেন ও ৫৩ রানের সময় আন্দ্রে ফ্লেচার (২৬) আউট হয়ে যান। তাতে বিপাকে পড়ে সিলেট। এমনিতেই পয়েন্ট তালিকাতে সিলেটের অবস্থান খুব ভাল নয়। সিলেটপর্বে এত সুন্দর শুরুর পর ঢাকাও চট্টগ্রামপর্বে যেন সিলেটকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় একটি জয় খুব জরুরী। জয় না মিললে সেরা চারে থাকার সম্ভাবনা হারিয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শুরুতেই যদি বিপত্তিতে পড়ে দল তাহলে হারের সম্ভাবনাই জেগে ওঠে। এমন বিপত্তি থেকে দলকে পরক্ষণেই টেনে তোলেন বাবর আজম ও সাব্বির রহমান রুম্মন। দুইজন মিলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকেন। সুযোগ বুঝে বাউন্ডারিও হাঁকাতে থাকেন। চতুর্থ উইকেটে গিয়ে দুইজন মিলে ৭৪ রানের জুটিও গড়েন। যে জুটি দলকে ১২৭ রানেও নিয়ে যায়। এমন সময় বাবর আউট হয়ে যান। তবে সাব্বির ঠিকই উইকেট আঁকড়ে থাকেন। বাবরের পর রোজ হোয়াইটলিকে নিয়ে যেন বাকি সময়টুকু শেষ করবেন এমন ইঙ্গিতও দেন। কিন্তু ১৫০ রান হতেই সাব্বির আউট হয়ে যান। এরপর হোয়াইটলি ও টিম ব্রেসনান মিলে বাকি সময়টা কাটিয়ে দেন। রানও স্কোরবোর্ডে জমা করেন। হোয়াইটলি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ১৭ ও ব্রেসনান অপরাজিত ১৬ রান করেন। শেষে গিয়ে এ দুইজনের ২৩ রানের জুটিটিই বিশেষ কাজে লাগে। তাতে জয়ের ভীতও গড়া হয়। কিন্তু মাশরাফির ব্যাটিং ঝড়ে রংপুরই শেষ পর্যন্ত জিতে। স্কোর ॥ সিলেট-রংপুর ম্যাচÑ চট্টগ্রাম সিলেট সিক্সার্স ১৭৩/৫; ২০ ওভার (বাবর ৫৪, সাব্বির ৪৪, ফ্লেচার ২৬, হোয়াইটলি ১৭*, ব্রেসনান ১৬*; নাজমুল অপু ৩/১৮, মাশরাফি ১/৩৯)। রংপুর রাইডার্স ১৭৭/৬; ১৯.৪ ওভার (ম্যাককালাম ৪৩, জিয়াউর ৩৬, বোপারা ৩৩, মিঠুন ১৮, মাশরাফি ১৭*, নাহিদুল ১৪*; রাজু ১/২৫)। ফল ॥ রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাজমুল ইসলাম অপু (রংপুর রাইডার্স)।
×