ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেত্রকোনার ৫ রাজাকারের অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল

প্রকাশিত: ২০:১৭, ২৮ নভেম্বর ২০১৭

নেত্রকোনার ৫ রাজাকারের অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনার দুর্গাপুরের খলিলুর রহমান সহ চার আসামির বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা ,অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫ অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে পলাতক এক আসামি হাজির হওয়ার বিষয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২০ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে মৌলভীবাজার রাজনগর উপজেলার আকমল আলী তালুকদারসহ চার রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দী শেষ হয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবীর জেরার জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন নির্ধারন করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো:শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন, সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি ,শেখ মুশফেক কবির প্রমুখ। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট মাসুদ রানা। মামলায় আসামিরা হলেন- নেত্রকোনার দুর্গাপূর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মৃত নবী হোসেনের ছেলে মো. খলিলুর রহমান (৭২), তার ভাই মো. আজিজুর রহমান (৬৫), একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আশক আলী (৮২) এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মৃত কদর আলীর ছেলে মো. শাহনেওয়াজ (৮৮)। শুরুর দিকে মামলায় আসামি ছিলেন পাঁচজন। এর মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। খলিলুর রহমান ছাড়া বাকিরা গ্রেফতার রয়েছেন। প্রসিকিউশন সুত্রে জানা গেছে , আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পলাতক এক আসামি আজিজুর রহমানকে হাজির করার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন।এর আগে গত ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান আনোয়ারু হকের নেতৃত্বাধীন আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। গত ৩০ জানুয়ারি তদন্ত সংস্থা মামলার আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। আাসমিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে তদন্ত শুরু হয়ে ৩০ জানুয়ারি শেষ হয়।এ মামলায় একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জব্দ তালিকার দুইজনসহ মোট সাক্ষী ৮২ জন। আসামীদের বিরুদ্ধে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দু’জনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪-১৫টি বাড়িতে লুটপাট এবং সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় তারা এসব অপরাধ করেন বলে জানা গেছে।
×