ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বৈরাচারের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছে বাধ্য হয়েই ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৮ নভেম্বর ২০১৭

স্বৈরাচারের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছে বাধ্য হয়েই ॥ কাদের

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি, ঘুষ, হত্যা, ধর্ষণের মতো অপরাধে দেশ ছেয়ে গেছে। দেশে আজ গণতন্ত্রেরও অপমৃত্যু ঘটেছে। মিলনের খুনীর মতো এমন হাজার হাজার খুনীর বিচার করলে দেশের গণতন্ত্রের এই অবস্থা হতো না। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করত। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তন সংলগ্ন সড়কদ্বীপে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ ডাঃ শামসুল আলম খান মিলনের ২৭ তম শাহাদাত বার্ষিকীতে এক আলোচনা সভায় শহীদ মিলনের মা বেগম সেলিনা আক্তার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২৭ বছর ধরে আমরা মিলন হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মিলন হত্যার দাবি এখন স্লোগানে পরিণত হয়েছে। শহীদ মিলনের সহযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করার সময় এসেছে। ‘শহীদ ডাঃ মিলন হত্যার পুনঃতদন্ত ও পুনঃবিচারের চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক ড. খালেকুজ্জামান, নব্বইয়ের গণআন্দোলনের ছাত্রনেতা আমিরুল হক আমির, শফি আহমেদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম তপন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (জাসদ) সাবেক সভাপতি ওবায়দুর রহমান চুন্নু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা কাওসার, জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক বীণা শিকদার, কবি মোহন রায়হান ও সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন। ড. খালেকুজ্জামান বলেন, যারা ক্ষমতার জন্য মিলনদের হত্যা করেছিল তারা আজও ক্ষমতার অংশ। বাংলাদেশের মতো স্বাধীন দেশে এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তারা শুধু ক্ষমতায়ই বসে আছে না তাদের ভাবাদেশ নিয়েই বসে আছে। তিনি বলেন, মিলন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী এক সমাজতন্ত্রী। মিলনের পথই বাংলাদেশের জনসাধারণের পথ। যে আদর্শের জন্য মিলন আত্মাহুতি দিয়েছিলেন সেটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সেই চেতনা আমাদের ধারণ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হবে। এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মিলন চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ডাঃ মিলনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। শহীদ মিলনের সমাধিতে ওবায়দুল কাদেরের শ্রদ্ধা ॥ এদিকে সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শহীদ মিলনের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) প্রাঙ্গণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অপশক্তির সঙ্গে আঁতাত করেছে বলেই বাধ্য হয়েই আমাদের স্বৈরাচারের সঙ্গে হাত মেলাতে হয়েছে। তা না হলে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের সঙ্গে হাত মেলাত না। তিনি বলেন, মিলন ছিল প্রকৃত ছাত্র রাজনীতির প্রতিকৃতি। দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে মিলন নিজের জীবন দিতেও দ্বিধা করেনি। তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আমরা দেখেছি কফিনের ভেতরে গণতন্ত্রের লাশ। গণতন্ত্র নয়, বিএনপির রাজনীতি আজ গভীর খাদের কিনারায়। সব কিছুতে ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়া মাঠের রাজনীতি ছেড়ে অস্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন, ঢামেক অধ্যক্ষ ডাঃ খান আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
×