ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ইস্রাফিলের মুনীর চৌধুরী সম্মাননা ও রুমার জাকারিয়া স্মৃতিপদক লাভ

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২৮ নভেম্বর ২০১৭

ইস্রাফিলের মুনীর চৌধুরী সম্মাননা ও রুমার জাকারিয়া স্মৃতিপদক লাভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় আধুনিক চেতনাসঞ্চারী এক নাট্যজন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী। সোমবার ছিল সংস্কৃতির এই আলোকবর্তিকার ৯২তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রদান করা হলো নাট্যদল থিয়েটার প্রবর্তিত মুনীর চৌধুরী সম্মাননা। এ সম্মাননা পেয়েছেন নাট্য নির্দেশক অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল শাহীন। একই আয়োজনে প্রদান করা হলো স্বাধীনতা-উত্তর দেশের নবনাট্যধারার পথিকৃৎ নাট্যজন মোহাম্মদ জাকারিয়ার নামাঙ্কিত পদক। তরুণ নাট্যকর্মীদের প্রেরণা জোগাতে নাট্যদলটি প্রদান করেছে মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক। এ পদক পেয়েছেন তরুণ নাট্যকার রুমা মোদক। পুরস্কারের সম্মানী হিসেবে ইস্রাফিল শাহীন পেয়েছেন পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং রুমা মোদক পেয়েছেন পঁচিশ হাজার টাকা। সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষক আইএফআইসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী শাহ্ আলম সারওয়ার। সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার সভাপতি ফেরদৌসী মজুমদার। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশকালে ইস্রাফিল শাহীন বলেন, এ পুরস্কার গৌরবের। তবে পুরস্কারের জন্য কখনও কাজ করি না। কিন্তু পুরস্কার পেলে নতুন কাজের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। আজীবন বাংলা নাট্যচর্চার জন্য কাজ করে যেতে চাই। রুমা মোদক বলেন, এ পুরস্কার আমি গ্রহণ করছি আমার নাট্যদল হবিগঞ্জের জীবনসংকেতের প্রতিটি সদস্যকে। সেই সঙ্গে যেসব নাট্যকর্মী মফস্বলে শহরের সকল প্রতিবন্ধতা পেরিয়ে কাজ করে চলেছেন, তাদের পক্ষে এ পুরস্কার গ্রহণ করছি। সম্মাননা ও পদক প্রদানের পর মুনীর চৌধুরীর নাটক ‘দ-ধর’র পাঠাভিনয় করে থিয়েটারের সদস্যরা। ১৯৮৯ সালে প্রবর্তিত হয় মুনীর চৌধুরী সম্মাননা। ইতিপূর্বে এ পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ জাকারিয়া, অমলেন্দু বিশ্বাস (মরণোত্তর), আবদুল্লাহ আল-মামুন, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়, সৈয়দ জামিল আহমেদ, রামেন্দু মজুমদার, মুক্তধারা, সাঈদ আহমদ, ফেরদৌসী মজুমদার, সৈয়দ শামসুল হক, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, সেলিম আল দীন, আলী যাকের, নিখিল সেন, আসাদুজ্জামান নূর, জিয়া হায়দার, মলয় ভৌমিক, পার্থপ্রতিম মজুমদার, আবদুস সেলিম, মনোজ মিত্র, আরণ্যক নাট্যদল, লিয়াকত আলী লাকী, মৃত্তিকা চাকমা, ম. হামিদ এবং কেরামত মাওলা। তরুণতর প্রতিভাকে উৎসাহিত করার জন্যে ১৯৯৭ সালে প্রবর্তিত হয় মোহাম্মদ জাকারিয়া স্মৃতিপদক। ইতিপূর্বে যা পেয়েছেন আহমেদ ইকবাল হায়দার, মান্নান হীরা, শিমুল ইউসুফ, ঠান্ডু রায়হান, খালেদ খান, দেবপ্রসাদ দেবনাথ, নাসিরুল হক খোকন, মাসুম রেজা, আমিনুর রহমান মুকুল, ফয়েজ জহির, জগলুল আলম, শুভাশিস সিনহা, বাবুল বিশ্বাস, অসীম দাশ, থিয়েটারওয়ালা, সুদীপ চক্রবর্তী, সামিনা লুৎফা নিত্রা, আইরিন পারভীন লোপা, আকতারুজ্জামান ও অভিজিৎ সেনগুপ্ত। জাদুঘরে ‘ভালোবাসো মোর গান’ ॥ সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ছিল নজরুলসঙ্গীতের আসর ‘ভালোবাসো মোর গান’। এ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ নজরুলসঙ্গীত সংস্থা। এ শ্রোতার আসরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইয়াকুব আলী খান, খায়রুল আনাম শাকিল, রেজাউল করিম, সঞ্জয় কবিরাজ, লায়েকা বশির, টুম্পা সমদ্দার, জান্নাত এ ফেরদৌসি লাকি এবং নুসরাত জাহান রুনা। ‘ভাই গিরিশচন্দ্র সেন : ক্ষণজন্মা পুরুষের পথ চলা’ ॥ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সোমবার বিকেলে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘ভাই গিরিশচন্দ্র সেন : ক্ষণজন্মা পুরুষের পথ চলা’ শীর্ষক স্মৃতিবক্তৃতার আয়োজন করে। এ বিষয়ে স্মৃতিবক্তৃতা করেন ড. মোহাম্মদ আলী খান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট চিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। স্বাগত ভাষণ দেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। স্মৃতিবক্তৃতায় ড. মোহাম্মদ আলী খান ভাই গিরিশচন্দ্র সেনের জন্ম, বেড়ে উঠা, লেখা পড়া ও লেখালেখির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, গিরিশচন্দ্র সেন ছিলেন সাদামাটা অথচ একজন বর্ণিল মানুষ। ৭৪ বছরের জীবনে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের অনুবাদ শুধু করেননি তিনি অসংখ্য গ্রন্থ অনুবাদ করেছেন এবং অনেক মৌখিক গ্রন্থের রচয়িতা। অনুবাদক হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় করেছেন। ১৮৮২ থেকে ১৮৮৬ এই পাঁচ বছর দীর্ঘ পরিশ্রমের পর তিনি পবিত্র কোরআন শরীফ বাংলায় অনুবাদে সক্ষম হন। হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, গুণী মানুষের কাছে রাষ্ট্র কিংবা ধর্ম বড় নয় তার কাছে সবথেকে বড় কাজ এজন্য গিরিশচন্দ্র সেন একজন বড় মানুষ। অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, ভারত উপমহাদেশে যে কজন চিন্তক নিজ কাজের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ভাই গিরিশচন্দ্র সেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি শুধু একজন অনুবাদক হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেননি, সমাজ পরিবতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ভাই গিরিশচন্দ্র সেনের মতো কিছু ক্ষণজন্মা মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল রাষ্ট্রের চিন্তা করেছিলেন। এজন্য ঐ সময়টিকে বাংলার রেনেসাঁ বললেও ভুল হবে না। কণ্ঠশীলনের আয়োজনে ‘স্বগত সংলাপ’ ॥ সোমবার সন্ধ্যায় কণ্ঠশীলনের আয়োজনে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো নির্বাচিত কবিতার আবৃত্তি অনুষ্ঠান ‘স্বগত সংলাপ’। সংগঠনটির নিমিয়ত এ আয়োজনের গতকালকের পর্বে নয়জন আবৃত্তিশিল্পী একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন। নির্বাচিত কবিদের জনপ্রিয় কবিতা দিয়ে সাজানো আয়োজনটি ছিল অত্যন্ত পরিপাটি।
×