ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘শুনবো শোনাবো’ শীর্ষক ধ্রুপদী সঙ্গীতানুষ্ঠানে মুগ্ধ দর্শক শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

‘শুনবো শোনাবো’ শীর্ষক ধ্রুপদী সঙ্গীতানুষ্ঠানে মুগ্ধ দর্শক শ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেঙ্গল সঙ্গীত উৎসব এবং ঢাকা ফোক ফেস্টের বাইরে রাতব্যাপী সঙ্গীত অনুষ্ঠান আয়োজনের খবর খুব কমই শোনা যায়। এই অবস্থায় রাতব্যাপী মনমুগ্ধকর ধ্রুপদী সঙ্গীত পরিবেশন করে এক ব্যতিক্রম সঙ্গীত উদ্যোক্তার পরিচয় দিল নবীন ধ্রুপদী শিল্পীরা। ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতা দর্শকদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল শিল্পী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন এই প্রজন্মের শিক্ষার্থী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পীরা। ‘আমরা শিক্ষার্থী শুনবো শোনাবো’ শীর্ষক এ মনোজ্ঞ ধ্রুপদী সঙ্গীতানুষ্ঠান সম্প্রতি পরিবাগের সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্রের ড. আসমা চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১১-৩০ মিনিট থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শিল্পীদের নানা পরিবেশনা উপভোগ করেন উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকরা। অনুষ্ঠানে বেঙ্গল ও ছায়ানটের ২০ শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করে উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকদের মুগ্ধ করেন। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের শুরুতেই শ্রোতা-দর্শকদের রাগ দুর্গা গেয়ে শোনান তরুণ শিল্পী তামনিয়া ইসলাম। তার সঙ্গে তবলা সঙ্গত করেন চিন্ময় ভৌমিক। এরপর বেহালায় রাগ বেহাগ বাজিয়ে শোনান শিল্পী রেজাউল করিম শ্যামল। সঙ্গতে ছিলেন প্রশান্ত কুমার দাস। এরপর পঞ্চকবির গান গেয়ে শোনান সুস্মিতা দত্ত। তার সঙ্গে তবলায় ছিলেন চিরঞ্জিত সাহা। একক তবলা পরিবেশন করেন অনুষ্ঠানের উদ্যোক্ত পৌষরাম সরকার। সঙ্গত করেন বাসুদেব চক্রবর্তী। তিনি পেস্কার কায়দা এবং রেলা বাজিয়ে শোনান। এরপর রাগ ইমন গেয়ে শোনান আল্ ইকরাম রাজু। সঙ্গত করেন প্রশান্ত ভৌমিক। উপস্থিত শ্রোতাদের রাগ ভীম পলশ্রী গেয়ে শোনান শিল্পী আরিফুর রহমান সম্রাট। তার সঙ্গে সঙ্গত করেন পৌষরাম সরকার। এরপর তবলা বাদন পরিবেশন করেন প্রশান্ত ভৌমিক। সঙ্গত করেন অভিজিত কু-ু। শিল্পী লতিফুন জুলিও রাগ ভৈরবীর আলাপ করে দুটো নজরুলের গান গেয়ে শোনান। তবলায় ছিলেন এম জে জে ভুবন। একটি বাংলা গান ও গজল পরিবেশন করেন বিটু শীল। তবলায় ছিলেন পৌষরাম সরকার। শিল্পী দেবযানি তার সুরেলা কণ্ঠে রাগ বিলাপ ঘানি টোরি পরিবেশন করেন। তবলায় সঙ্গত করেন তুসার কান্তি সরকার। সবশেষে রাগ দেশ পরিবেশন করেন অভিজিত কু-ু ও টিংকু শীল। তাদের সঙ্গে তবলা সঙ্গত করেন প্রশান্ত ভৌমিক। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পীদের শুভেচ্ছা জানান শিল্পী মোঃ জাকারিয়া শেখ জাস্টিন, মডেল ও নাট্যকর্মী মাহিন মহন্ত, উপস্থাপক শিপন, নাট্যকর্মী জুলফিকার হোসেন সোহাগ, ঢাবির মিউজিক অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী মোঃ সারোয়ার হোসেন সোহেল, সাউন্ডজোনের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন এবং তবলা শিল্পী আমিনুর রহমান স্বপন এবং ঢাকা মৌলিক নাট্যদলের সভাপতি, সংবাদকর্মী সাজু আহমেদ। এ প্রসঙ্গে আয়োজনের সমন্বয়কারী তবলাশিল্পী পৌষরাম সরকার বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল একদিন আমরা গল্প করবো গান করবো, আড্ডা দেব। দর্শক হব নিজেরা, পরিবেশনও করব আমরাই। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই আজকের এই আসর। আর তাই আসরের নামও দেয়া হয়েছে ‘আমরা শিক্ষার্থীÑ শুনবো শোনাবো’। আজকের এই পর্যায়ে আমি মিউজিকের বিষয়ে একটা কথাই বলতে চাই সেটা হলো- উপাসনা করার সময় মানুষ যেমন ভাবে না এটা করলে সে কত টাকা পাবে। তবে একটা উদ্দেশ্য তো নিশ্চয়ই থাকে, আমারও আছে আমার কাছে মিউজিকটা তেমনি। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সমমনা কয়েকজন নিজেদের চর্চার জায়গাটা ঝালিয়ে নিতে চাই। আয়োজনটা আমরা নিয়মিত করতে চাই। ধ্রুপদী সঙ্গীতটাকে ছড়িয়ে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যেই আমরা ধ্রুপদী সঙ্গীতের বিভিন্ন বিষয়ে চর্চাটা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সাফল্যের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আশীর্বাদ কামনা করি।
×