ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে বললেন বক্তারা

খেলাপী ঋণের কারণ স্পষ্ট না করে অধিকাংশ ব্যাংক তথ্য গোপন করছে

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

খেলাপী ঋণের কারণ স্পষ্ট না করে অধিকাংশ ব্যাংক তথ্য গোপন করছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রকৃত খেলাপী ঋণ ২০ শতাংশ হলেও জিডিপিতে দেখানো হয় মাত্র ১২ শতাংশ। খেলাপী ঋণ বাড়ার প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না করে অধিকাংশ ব্যাংক খেলাপী ঋণের তথ্য গোপন করছে। রবিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনে-২০১৭ বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির। এ সময় তিনি বলেন, ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদ, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্ব এবং মূলধন সংরক্ষণে বিভিন্ন ধরনের নীতিমালা করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি বলেন, এই সম্মেলনে যেসব পেপার উপস্থাপনা করা হবে তার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন বিষয় উঠে আসবে। যা আমাদের নীতিমালা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। প্যানেল আলোচনায় ট্রাস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনউদ্দিন আহমেদ বলেন, অধিকাংশ ব্যাংকে খেলাপী ঋণের তথ্য গোপন করে থাকে। জিডিপিতে খেলাপী ঋণ ১২ শতাংশ দেখানো হয়ে থাকে। যদিও জিডিপিতে প্রকৃত খেলাপী ঋণ ২০ শতাংশ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খেলাপী ঋণের উপযুক্ত কোন কারণ স্পষ্ট নয়। কি কারণে খেলাপী ঋণ বাড়ছে সেটি তুলে আনতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদ নাকি ব্যবস্থাপনা কমিটির কারণে খেলাপী ঋণ বাড়ছে সেটা দেখতে হবে। বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মোঃ ইয়াসিন আলী বলেন, শরিয়াভিক্তিক ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে তাদের নিয়ম পালন করছে না। এই ব্যাংকগুলোর জন্য একটি আইন প্রণয়নের সময় হয়ে গেছে। এছাড়া বেসরকারী ব্যাংকগুলোতে ব্যাংকারদের চাকরির কোন নিরাপত্তা নেই। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। তিনি ব্যাংকিং খাতের ওপর বিভিন্ন সেশনে আলোচনার বিষয়বস্তুও রিভিউ পাঠ করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন ২০১৭ বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহ মোঃ আহসান হাবীব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ‘মাইক্রো ব্যাংকিং এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক একটি অধিবেশন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলি রুবাইয়াতুল ইসলাম। বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকস ও পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। আর বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এস কে সুর চৌধুরী। এ অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিআইবিএমের এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। দ্বিতীয় দিনে মধ্যাহ্ন ভোজের পর ‘ডিজিটাল টেকনোলজিস ফর ড্রাইভিং ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ফর দ্য লাস্ট মাইল: গ্লোবাল পারসপেকটিভ এ্যান্ড বেস্ট প্র্যাকটিসেস’ ও ‘প্রমোটিং ক্লায়েন্ট-সেন্ট্রিক এ্যাপ্রোচেস ইন ডিএফএস : প্রডাক্ট ইনোভেশন ফর লো ইনকাম গ্রুপস এ্যান্ড স্মল বিজনেসেস’ শীর্ষক দুটি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দিন আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর আবু হেনা মোহাঃ রাজী হাসান। সমাপনী অধিবেশনের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের মাধ্যমে শেষ হবে দুদিনের এ সম্মেলন।
×