ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলার লোকগান, নাচ অসমের সত্রীয়া নৃত্য আনন্দঘন আয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

বাংলার লোকগান, নাচ অসমের সত্রীয়া নৃত্য আনন্দঘন আয়োজন

মোরসালিন মিজান দেখতে দেখতে ১২ বছর। বহ্নিশিখা জেগে আছে। সংগঠনের শিল্পীরা নিত্য চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। শহর ঢাকার উৎসব অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিচ্ছেন নিয়মিত। সেই ধারাবাহিকতায় পূর্ণ করল একযুগ। যুগপূর্তির শুভক্ষণে রবিবার শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানমালার। খুব বর্ণাঢ্য বা বিপুল বিশাল আয়োজন নয়। তবে যেটুকু উদ্যাপন, উপভোগ্য ছিল। বহ্নিশিখার শিল্পীদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভারতের অসম থেকে আসা সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট সঙ্গীত সত্রের শিল্পীরা। নাচ গানের আয়োজনে মুখরিত ছিল শীতের সন্ধ্যাটি। আলোচনা ও স্মৃতিচারণ দিয়ে শুরু হয় প্রথম পর্ব। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, নৃত্যজন মিনু হক প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান গোলাম কুদ্দুছ। অতিথিরা এক যুগপূর্তি উপলক্ষে বহ্নিশিখার শিল্পী সংগঠকদের শুভেচ্ছা জানান। অভিনন্দিত করেন। সকলের সহায়তায়, সকলকে সঙ্গে নিয়েই একযুগের পরিভ্রমণ বলে অনুষ্ঠানে জানান গোলাম কুদ্দুছ। নাতিদীর্ঘ আলোচনা শেষে শুরু হয় মূল পর্ব। মঞ্চে আসেন আয়োজক সংগঠনের একঝাঁক শিল্পী। পেছনের সারিতে ছিলেন গায়ক গায়িকারা। সামনের খোলা জায়গায় নৃত্যের পরিবেশনা। সম্মেলক গানের সঙ্গে নাচ। ‘প্রাণসখা’ শীর্ষক গীতিনাট্য। কয়েকটি গান জোড়া দিয়ে মালা গাঁথা হয়েছিল। এর সঙ্গে কোরিওগ্রাফি। নাচের মুদ্রায় লোক আচার ও ঐতিহ্য তুলে ধরার প্রয়াস নেন শিল্পীরা। ২০ মিনিটের মতো পরিবেশনা উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়। বহ্নিশিখার পরিবেশনা শেষে মঞ্চে আসেন কমলিকা চক্রবর্তী। অসমীয়া শিল্পী নিজেদের ভাষায়লোকগান গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল সঙ্গীত সত্রের পরিবেশনা। দলের মূল দুই শিল্পী নৃত্যগুরু রঞ্জুমনি সাইকিয়া ও রিঞ্জুমনি সাইকিয়া। সহশিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে আসেন তারা। পরিবেশন করেন সত্রীয়া নৃত্য। ভারতের ছয়টি ধ্রুপদী নৃত্যের অন্যতম একটি সত্রীয়া। সাড়ে ৫ শত বছরের পুরনো চর্চা। এই নৃত্যের মাধ্যমে মূলত কৃষ্ণবন্দনা ও পূজা অর্চনা হতো। ব্যবহার করা হতো ধর্ম প্রচারের কাজে। অর্ধশতক আগে এটি ডান্স ফর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর থেকে মঞ্চে পরিবেশিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের নৃত্যপ্রেমীরা তাই কৌতূহল নিয়ে দেখেন। ব্যতিক্রমী কোরিওগ্রাফি যারপরনাই মুগ্ধ করে রাখে আগতদের। পরে বাংলাদেশের লোকগান নিয়ে মঞ্চে ছিলেন সুনীল কর্মকার। অন্ধ বাউলের গান মন ভরিয়ে দেয়। এর আগে উৎসবস্থলে কথা হয় সঙ্গীত সত্রের প্রধান স্বপ্ননীল বড়ুয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৭ সালে। এর পর থেকে নিয়মিতভাবে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশে এসেছে প্রথমবারের মতো। এই দেশ, দেশের শ্রোতা দর্শক খুব পছন্দ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
×