ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে হাত-পা বাঁধা কৌঁসুলির লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রামে হাত-পা বাঁধা কৌঁসুলির লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শনিবার এক কৌঁসুলির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম ওমর ফারুক প্রকাশ বাপ্পী (৪০)। তার বাড়ি বান্দরবানের আলী কদমে। নগরীর চকবাজার থানা এলাকার কেবি আমান আলী সড়কের বড় মিয়া মসজিদের সামনের একটি ভবনের নিচতলা থেকে বাপ্পীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নারী কেলেঙ্কারির কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। কারণ নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী ও নিজের বাসায় এ ঘটনা না ঘটায় পুলিশ এমন ধারণা করছে। এর আগে গত জানুয়ারিতে বাপ্পী স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করায় তার স্ত্রী চট্টগ্রাম আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপর স্ত্রীকে হেনস্থা করতে বাপ্পী তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করেন। এদিকে, যে বাড়িতে বাপ্পী হত্যার শিকার হয়েছে সেটি তার ভাড়া বাসা নয়, তবে বাপ্পীর এক মক্কেলের স্ত্রীর ভাড়া বাসা কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। বাসার মালিকের পক্ষ থেকে জানা গেছে, এক মহিলা এই বাসাটি ভাড়া নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওই মহিলা বাসায় উঠেছে। ওই বাসাতেই এই হত্যাকা-। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চকবাজার থানায় কোন হত্যা মামলা দায়ের হয়নি। চকবাজার থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় ফোন করা হলে পুলিশ হত্যাকা-ের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। নগরীর চকবাজার থানাধীন কেবি আমান আলী সড়কের বড় মিয়া মসজিদের সামনের একটি ভবনের নিচতলা থেকে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে পুলিশ। সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী লাশের হাত ও পা বাঁধা পাওয়া গেছে। বাপ্পীর মুখেও স্কচটেপ মোড়ানো ছিল। এমনকি তার পুরুষাঙ্গটিও কেটে ফেলেছে হত্যাকারীরা। তবে নিহতের শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। যে বাসায় লাশ পাওয়া গেছে সেটি অন্য এক মহিলার ভাড়া বাসা। কিন্তু বাপ্পী কেন এ বাসায় এসেছে তা এখন প্রশ্নের বিষয়। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর থেকে চট্টগ্রাম আদালতে কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করে আসছিল বাপ্পী। তবে পরিবারের সঙ্গেও তার ভাল সর্ম্পক ছিলনা। কারণ চলতি বছরের প্রথমদিকে যৌতুক দাবির অভিযোগ তুলে তার স্ত্রী রাশেদা বেগম চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে। এরই জের ধরে বাপ্পীও কোতয়ালি থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে। এ বিষয়ে কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জনকণ্ঠকে জানান, লাশ যে বাসায় পাওয়া গেছে সেটি বাপ্পীর বাসা নয়। এক মহিলা ভাড়া নিয়েছে। তবে রাতে বাপ্পী ওই বাসায় গিয়েছে এমন তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে বাড়ির দারোয়ান। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা আলী আহমেদ মামলা দায়েরের পর তদন্তে নামবে পুলিশ। এছাড়াও এই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
×