ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পথনাটক অভিনয় মৌসুমের ২৫ বছর, চলছে এবারের প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

পথনাটক অভিনয় মৌসুমের ২৫ বছর, চলছে এবারের প্রদর্শনী

জনকণ্ঠ ফিচার হেমন্তের কাল বটে। শীত অনুভূত হচ্ছে। তার চেয়ে বড় কথা, বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। এ সময়টি প্রসেনিয়াম আর্চের বাইরে এসে নাটক করার জন্য চমৎকার। প্রতিবারের মতো এবারও সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে পথনাটক পরিষদ। বিগত দিনের ধারাবাহিকতায় শীতকালীন নিয়মিত পথনাটক অভিনয় কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এবার ২৫ বছর পূর্ণ করল শীতকালীন নিয়মিত পথনাটক অভিনয় কর্মসূচী। নাটককে সাধারণ মানুষের আরও কাছে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯২ সালে এর যাত্রা শুরু। মহাকাল, ঢাকা নাট্যম ও দেশ নাটক সমন্বিতভাবে প্রদর্শনী শুরু করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথে ‘বাংলাদেশের পথনাট্য চর্চারত নাট্যদলসমূহ’ শিরোনামে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রতি শুক্রবার বিকেলে চলত নাটকের প্রদর্শনী। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আত্মপ্রকাশ করে পথনাটক পরিষদ। এরপর থেকে প্রতিবছর শীতকালে নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হয়ে আসছে পথনাটক প্রদর্শনীর। শুরু থেকে এই প্রদর্শনী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হলেও গতবছর সংগঠনের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনীর উদ্যোগ নেয়া হয়। সেই সূত্রে এবছর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শীতকালীন এই পরিবেশনা। বলার অপেক্ষা রাখে না, পথনাটক সমাজের অসঙ্গতি অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলে। সেই কবে কোন্কাল থেকে বলে আসছে। অথচ এখনও কাটেনি আঁধার। অশুভ অপশক্তি বিগত দিনের অর্জনগুলোও গ্রাস করতে চাইছে। হামলা হচ্ছে মন্দিরে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হচ্ছে। আদরের বোনটি, শিশুকন্যাটি ধর্ষিতা। এ অবস্থায় পথনাটকের প্রদর্শনী প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। আয়োজক পরিষদের সেøাগানÑ ‘জয় হোক মানুষের ক্ষয় হোক দুর্বৃত্তের।’ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী দিন পরিবেশিত হয় পাঁচটি পথনাটক। জয়নাল আবেদীনের রচনা ও কাজী শাহিদুর রহমানের নির্দেশনায় ‘ফিল্মি কারবার’ পরিবেশন করে মৈত্রী থিয়েটার। এস এম সোলায়মান রচিত ও মোহাম্মদ বারী নির্দেশিত ‘জনম দুখি মা’ পরিবেশন করে থিয়েটার আর্ট ইউনিট। সাজ্জাদ লিপন রচিত ও নির্দেশিত ‘সাদাকালো’ পরিবেশন করে রঙ্গপীঠ নাট্যদল। এইচ আর অনিক রচিত ও নির্দেশিত ‘যদি কিছু মনে করেন’ নিয়ে ছিল চন্দ্রকলা থিয়েটার। কর্মজীবী নারী নাট্যদল পরিবেশন করে স্বাধীন শাহ্্ রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘কলে বান্ধা জেবন।’ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন শরিবারও বেশ কয়েকটি দল তাদের নাটকে সমাজের নানা অসঙ্গতির চিত্র তুলে ধরে। এবারের আয়োজন সম্পর্কে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ গিয়াস বলেন, পথনাটকের ভাষা সহজ। সরল উপস্থাপনা। দর্শক খুব উপভোগ করছেন। আয়োজনটির ২৫ বছর পূর্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা আমাদের অনেক বড় সাফল্য। নাটককে মানুষের আরও কাছে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রদর্শনী আগামী বছরগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। চলমান প্রদর্শনী শেষ হবে আগামী ১ মে।
×