ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশসহ আহত ৩০

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ ॥ ধাওয়া পাল্টাধাওয়া

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ ॥ ধাওয়া পাল্টাধাওয়া

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। শনিবার কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও থানা অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এ সময় সাতক্ষীরা-যশোর সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি পাওয়ায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে সকাল ১০টার দিকে সরকারীভাবে অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছিল। এ সময় পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে চেয়ার ভাংচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, হামলা-পাল্টা হামলায় উপজেলা পরিষদ চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এ সময় ১৫ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি করে। এ সময় উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে কলারোয়া থানা অভ্যন্তরে ফের সংঘাত শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের সঙ্গে দলীয় নেতা ও কর্মকর্তাদের বৈঠক শেষে ফিরোজ গ্রুপ প্রতিপক্ষের লাল্টু গ্রুপকে সন্ত্রাসী ও আসামি বলায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে নেতাকর্মীরা। এতে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশসহ আরও ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেখানে লাঠিচার্জ করে। উপজেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, তার সমর্থক নেতা ভুট্টোলাল গাইন, স ম মোরশেদ, প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম, ছাত্রলীগের মোঃ রাসেল, শ্রমিক লীগের আবদুর রহিম, সোনাবাড়িয়া ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম ও আনারুল সেখানে যাওয়ামাত্র তাদের দেখে ফিরোজ স্বপন কটূক্তি করেন। উত্তেজনাকর অবস্থায় তাদের থানার মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়। কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন দুই দফা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার কারণে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে আনন্দ মিছিল ও অন্যান্য কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। উপজেলা চত্বরে অনুষ্ঠান চলাকালে কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে দলীয় সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম লাল্টু কিছু লোক নিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেন। ককটেলের শব্দে মুহূর্তেই শিশুরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় তিনিসহ প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম ফের শুরু করেই তা সমাপ্ত করেন। এরপর ইউএনও মনিরা পারভিনসহ অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তা ১২টি ইউপি চেয়ারম্যান, ১২ জন কাউন্সিলর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকসহ অনেকে দোতলায় মিটিং করছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ সময় আমিনুল ইসলাম লাল্টু, যুবলীগ সভাপতি শাহজাদা এবং সাবেক চেয়ারম্যান স ম মোরশেদসহ কয়েকজন নেতা উপজেলা অফিস ভবন ঘেরাও করে তা-ব শুরু করেন। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ইউএনও অফিস, চেয়ারম্যানের অফিস, এলজিইডি, পরিসংখ্যান অফিস, নির্বাচন অফিসসহ বেশ কয়েকটি অফিস ভাংচুর করে। উপজেলা চেয়ারম্যান অফিসের পিয়ন মশিয়ার রহমান এ সময় আহত হন। তিনি আরও জানান, লাল্টুর নেতৃত্বে গ্রুপটি তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
×