ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি-জামায়াত ৭ই মার্চের ভাষণ মুছে ফেলতে চেয়েছিল ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০১:১২, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

বিএনপি-জামায়াত ৭ই মার্চের ভাষণ মুছে ফেলতে চেয়েছিল ॥ তোফায়েল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ৭ই মার্চের ভাষণকে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণার উৎস হিসেবে আখ্যায়িত করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত এই ভাষণকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না। সেই ঐতিহাসিক ভাষণ আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন এই ভাষণ থাকবে। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটরিয়ামে ‘বজ্রকণ্ঠ: মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রহমত উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। তোফায়েল আহমেদ বলেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর সবগুলোই লিখিত। কেবলমাত্র বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণই ছিল অলিখিত। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষণ শুধু বাঙালিদের জন্য নয়। এই ভাষণের বার্তা পৃথিবীর সকল নির্যাতিত, নিপীড়িত, মুক্তিকামী জনতার জন্য। তাই এই ভাষণ আজ কেবল বাংলাদেশের সম্পদ নয়, এটি আজ বিশ্ব সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু অতি সতর্কতার সাথে শব্দচয়ন করেছেন। সেদিন তিনি তার ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এই ভাষণ আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে অনুপ্রানিত করেছিল। মন্ত্রী বলেন, এই একটি ভাষণ বাঙালি জাতিকে এককাতারে নিয়ে এসেছিল। একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা নিরস্ত্র বাঙালিকে সশস্ত্র বাঙালি জাতিতে রূপান্তরিত করেছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান আর খালেদা জিয়ার আমলে এই ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। তারা এই ভাষণকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। আজকে সেই সত্য সেই ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ডের স্বীকৃতি পাওয়া শ্রেষ্ঠ ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন করতে গিয়ে তাঁকে বারবার কারাগারে যেতে হয়েছে। তিনি অত্যন্ত দূরদর্শী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ভেবে-চিন্তে কথা বলতেন এবং কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করতেন না। ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ইউনেস্কো স্বীকৃতি না দিলে বিশ্ব সম্প্রদায় এই মহান ভাষণ থেকে বঞ্চিত হতো। এই ভাষণ বিশ^ সম্প্রদায়ের কাছে পৌছে দেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ৭ মার্চের ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের স্বাধীনতার একটি ঐতিহাসিক দলিল সম্পর্কে জানার সুযোগ পেল। অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা পুরস্কারে বিজয়ী শিশু কিশোরদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচী পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
×