ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে নয়ন হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

প্রকাশিত: ০১:১১, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

রংপুরে নয়ন হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ২

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেসটিগেশন (পিবিআই) দীর্ঘ ৩ বছর পর কলেজ ছাত্র নয়ন হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। এ হত্যাকান্ডে জড়িত দুই খুনি পীরগাছা থানাধীন তাম্বুলপুর গ্রামের মৃত জলিল ফকিরের ছেলে জুয়েল (২৮) এবং একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে তুষার(২২)কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই। এদের মধ্যে এক খুনি জুয়েল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি প্রদান করে কিলিং মিশনে অংশ নেবার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার দুপুরে রংপুর নগরীর কেরানীপাড়া মহল্লায় অবস্থিত পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নয়ন হত্যাকান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ননা দেয়া হয়। বক্তব্য দেন, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আব্দুল মজিদ। উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লা কাওছার, মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক হোসেন আলীসহ অন্যন্য কর্মকর্তাবৃন্দ। পুলিশ সুপার জানান, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সোনারায় গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র আল আমিন ওরফে নয়ন পার্শ্ববর্তী তাম্বুলপুর ফকিরের পাড়া গ্রামের ফকিরপাড়া গ্রামের জলিল ফকিরের মেয়ে রুনির সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। নয়ন গাইবান্ধা সরকারী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। তাদের প্রেমের বিষয়টি জানাজানি হলে রুনির বাবা মাসহ পরিবারের লোকজন কোন অবস্থাতেই বিষয়টি মেনে নেয়নি। তারা নয়নকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। তারই অংশ হিসেবে গত ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তারিখে নিহত নয়ন কলেজ ছুটি হওয়ায় গাইবান্ধা থেকে তার গ্রামের বাড়িতে আসে। ওই দিনই রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নিহত নয়নের প্রেমিকা রুনি মোবাইলে ফোন করে নয়নকে তাদের বাড়িতে আসতে বলে। নিহত নয়ন তার বন্ধু তুষারকে সঙ্গে নিয়ে তার প্রেমিকা রুনির বাড়িতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর রুনির বাবা মা ভাইসহ স্বজনরা নিহত নয়নকে আটক করে অস্ত্রের মুখে তাদের বাড়ির অদুরে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর আসামীরা নয়নকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রেল লাইনে ফেলে রাখে। রেলওয়ে পুলিশ ও সিআইডি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটি তদন্তের ভার পিবিআইকে প্রদান করে আদালত । পরে গত ২৩ নভেম্বর কিলিং মিশনে অংশ নেয়া জুয়েলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল ঘটনায় তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে ঘটনার সময় কিলিং মিশনে অংশ নেয়াদের নাম জানায়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে তুষারকে গ্রেফতার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, মামলাটি বর্তমানে তদস্তাধীন আছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। তদন্তের স্বার্থে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের নাম পরিচয় প্রকাশ করেন নি তিনি।
×