ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাসপাতালে অপারেশনের দায়িত্ব রোবটের ডয়েচে ভেলে

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

হাসপাতালে অপারেশনের দায়িত্ব রোবটের ডয়েচে ভেলে

জার্মানির বোখুম শহরের হাসপাতালে রোবট একজন কর্মী। সার্জন কম্পিউটারে দাঁড়িয়ে রোবট চালাচ্ছেন, রোবট পেশেন্টের শরীরে অপারেশন করছে। রোবট পেশেন্টদের খাবার নিয়ে আসছে, পেশেন্টের জ্বর মাপা হলে, তা লিখে রাখছে। দুই ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলছে, সার্জনরা অপারেশন টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে। পেশেন্টের অন্ত্রনালীর ক্যান্সার। করে আরও চার ঘণ্টা অপারেশন চলবে। বেশিও লাগতে পারে। সিস্টার আর ডাক্তাররা ছড়া বোখুমের আউগুস্টা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে একটি রোবটও আছে। তার নাম দ্য ভিঞ্চি। সে যে কোন মানুষের চেয়ে নিখুঁতভাবে স্কাল্পেল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারে। চীফ সার্জন বেনো মান রোবটটিকে চালান। তার প্রতিটি নড়াচড়া পেশেন্টের শরীরের ভেতর রোবটের ‘হাতগুলোর’ নড়াচড়ায় পরিবর্তিত হয়, এক মিলিমিটার হেরফের হয় না। এ ছাড়া রোবট ক্লান্তি বলে কিছু জানে না। ড. মান বলেন, ‘অপারেটর সব সময় আমি। রোবট আমার কাজটা সহজ করে দেয়, আমি যা করতে চাই, রোবট তা পেশেন্টের শরীরে নিখুঁতভাবে করে দেয়। আমি যদি রোবট ছাড়া অপারেশন করি, তাহলে সেটা দুই তিন ঘণ্টার বেশি ভালভাবে করা সম্ভব নয়, বুঝতেই পারছেন। তারপর হাত নড়ে যায়, কিংবা হাত কাঁপতে শুরু করে। এখানে সে সব বিপত্তি নেই।’ কিচেনে তখন চরম ব্যস্ততা। প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মিলের ব্যবস্থা করতে হয়। বিভাগ অনুযায়ী রোবটরা খাবারের ওয়াগনটিকে ঠিক ঠিক জায়গায় পেঁৗঁছে দেয়। হাসপাতালের লম্বা করিডর ধরে খাবার পৌঁছে যায় সঠিক বিভাগে। মানুষের সাহায্য লাগে না। পেশেন্ট বা হাসপাতাল কর্মীরা পথে পড়লেও খাবারের গাড়ি সেটা ঠিকমতো কাটিয়ে যায়, সঠিক রাস্তা বেছে নিয়ে আগে থেকে প্রোগ্রাম করা লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। রোবট পৌঁছালে সিস্টাররা খবর পান যে, এবার পেশেন্টদের খাবার দেয়ার সময় হয়েছে। নার্স কাটিয়া আর্নস শোনালেন, ‘বহু পেশেন্ট এটা দেখে অবাক হয়ে যান। অপেক্ষা করেন, রোবট কখন আসবে অথবা জিজ্ঞেস করেন, খাবারের ট্রেগুলো কখন নিয়ে যাওয়া হবে। যাতে তারা সেটা দেখতে পারেন।’ মাল-বওয়া রোবটগুলোর কল্যাণে ২০টা লোকের কাজ বেঁচে গেছে অবশ্য কার চাকরি না খেয়ে। কেননা লক্ষ্য ছিল অন্য, আউগুস্টা হাসপাতালের মানবসম্পদ বিভাগের মোনিকা বর্গগ্রেবে যা বললেন : ‘একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স পাওয়া আজকাল খুব সহজ নয়। তার ওপর যদি এসব নার্সকে দিয়ে এমন সব কাজ করানো হয়, যার সঙ্গে পেশেন্টদের পরিচর্যার কোন সম্পর্ক নেই, যেমন জিনিসপত্র আনা , তাহলে সেটা একটা অপ্রয়োজনীয় কাজ। সেক্ষেত্রে দেখতে হয়, কাজটা আর কারওকে দিয়ে করানো যায় কিনা। যা আমরা রোবটদের দিয়ে করাচ্ছি।’ শীঘ্রই পেশেন্টদের রক্তচাপ বা জ্বর মাপার মতো দৈনন্দিন কাজে রোবটদের সাহায্য নেয়া হবে। সিস্টার টেম্পারেচার মাপবেন, কিন্তু সেটা নথিবদ্ধ করার কাজ করবে রোবট, স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কাজেই নার্সের হাতে পেশেন্টদের জন্য আরও বেশি সময় বাঁচবে।
×