ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দারুণ জয়ে শীর্ষে খুলনা

সিলেটকে হারিয়ে চিটাগংয়ের দ্বিতীয় জয়

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

সিলেটকে হারিয়ে চিটাগংয়ের দ্বিতীয় জয়

জাহিদুল আলম জয় ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেটে বাজে সময় কাটানো চিটাগং ভাইকিংস ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। শুক্রবার রাতে হোমগ্রাউন্ডে আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেয়েছে বন্দর নগরীর দলটি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সকে ৪০ রানে হারিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২১১ রানের পাহাড় গড়ে চিটাগং। ২১২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভাল হলেও ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭১ রানে শেষ হয় সিলেটের ইনিংস। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে মাত্র ৯ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে উঠে এসেছে খুলনা টাইটান্স। একই ভেন্যুতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৮ রান করে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা। ১৫৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করতে সক্ষম হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার রংপুর। আগের দুটি পর্বে কিছুই করতে পারেনি চিটাগং ভাইকিংস। ঘরের মাঠে পরিচিত কন্ডিশনে জ্বলে উঠেন দলটির ক্রিকেটাররা। আগের ম্যাচগুলোতে হেরে ফুঁসছিলেন রঞ্চি-রাজা-ভ্যান জাইলরা। সুযোগ পেয়ে নিজেদের স্বরূপে ফিরিয়েছেন। সিলেট সিক্সার্সের বোলিং লাইন আপকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ২০ ওভারে ২১১ রন করে ভাইকিংসরা। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ দলীয় রান। সব মিলিয়ে বিপিএলে পঞ্চম সর্বোচ্চ। শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে ঝড় তোলেন চিটাগংয়ের রঞ্চি। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি সৌম্য সরকার। মাত্র এক রান করে ফিরে যান জাতীয় দলের ওপেনার। ২৫ বলে ৪১ রান করেন রঞ্চি। বেশি কিছু করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। তিন রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তবে এরপর ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন স্টিয়ান ভ্যান জাইল ও সিকান্দার রাজা। ২৬ বলে ৪০ রান করে ভ্যান জাইল আউট হলেও সিকান্দার রাজা রাজত্ব করেন। মাত্র ৪৫ বলে ৯৫ রান করেন জিম্বাবুইয়ের এই ব্যাটসম্যান। নয়টি চার ও ছয়টি ছক্কা মারেন তিনি। এ ছাড়া নজিবুল্লাহ জাদরান করেন অপরাজিত ১৯ রান। সিলেটের হয়ে কামরুল ইসলাম রাব্বি নেন দুটি উইকেট। বড় জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করেন সিলেটের দুই ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকা ও আন্দ্রে ফ্লেচার। উদ্বোধনী জুটিতে দু’জন করেন ৪৩ রান। এরপর দানুশকা ১০ রান করে আউট হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ফ্লেচার ও বাবর আজম দারুণ জুটি গড়ে সিলেটকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। কিন্তু দলীয় ১২৩ রানে ফ্লেচার, ১২৮ রানে বাবর ও ১২৯ রানে সাব্বির রহমান আউট হলে জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় নাসির হোসেনের দলের। এরপর শেষ দিকে শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর জন্যই সংগ্রাম করতে হয়েছে সিলেটকে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১৭১ রান করে সিলেট। দলের পক্ষে ফ্লেচার সর্বোচ্চ ৭১ ও বাবর করেন ৪১ রান। সাব্বির করেন মাত্র ৩ রান। চিটাগংয়ের তাসকিন আহমেদ ৩টি এবং সৌম্য সরকার ও স্টিয়ান ভ্যান জাইল দু’টি করে উইকেট লাভ করেন। প্রথম ম্যাচে শেষ পর্যন্ত দারুণভাবে লড়াই করেও হারতে হয়েছে রংপুর রাইডার্সকে। খুলনার দেয়া ১৫৮ রানের জবাবে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই পৌঁছে গিয়েছিল মাশরাফির দল। তবে শেষ দিকে জুনায়েদ খানের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ৯ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা বাজে হয় রংপুরের। ২০ রানের মধ্যে দলের প্রধান দুই ভরসা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও ক্রিস গেইলকে হারিয়ে বসে রংপুর রাইডার্স। মাত্র দুই রান করেন ম্যাককালাম। আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান গেইল বিদায় নেন ৯ বলে ১৬ রান করে। দলীয় ২৯ রানে মোহাম্মদ মিঠুন আউট হলে একেবারে খাদের কিনারে নেমে যায় মাশরাফির দল। এরপর ফজলে মাহমুদ আরও বিপদে ঠেলে দেন দলকে। এখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের দলটি। রবি বোপারা ও তরুণ ক্রিকেটার নাহিদুল হক মিলে যোগ করেন ১০০ রান। ৩৪ বলে ৫০ রান পূর্ণ করেন নাহিদুল। পরে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বোপারাও। তবে শেষ ওভারগুলোতে বোলারদের ওপর সেভাবে শাসন করতে পারেননি তারা। ৪৩ বলে ৫৮ রান করেন নাহিদুল। ৪৪ বলে ৫৯ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন রবি বোপারা। খুলনার আফিফ হোসেন নেন দুটি উইকেট। এর আগে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৫৮ রান তোলে খুলনা টাইটান্স। ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই রিলে রুশোকে হারায় খুলনা। ৪ বলে ১১ রান করেন তিনি। তৃতীয় ওভারে আফিফ হোসেন ফিরলে চাপে পড়ে তারা। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ইনিংসটা সামলানোর দায়িত্ব নেন। ২০ রানের বেশি করতে পারেননি শান্ত। দলীয় ৫৯ রানে মাহমুদুল্লাহকে একা রেখে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। এরপর লড়াইটা একাই নিজের কাঁধে তুলে নেন দলনায়ক মাহমুদুল্লাহ। নিকোলাস পুরানকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকাটা সচল রাখেন তিনি। ২০ বলে ১৬ রান করে পুরান ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ১৩০ রানে তিনি যখন ফিরে যান, তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করে ৩৬ বলে ৫৯ রানের ঝলমলে ইনিংস। এরপর কার্লোস ব্রার্থওয়েট ও আরিফুল হকরা স্কোর বাড়ানোর চেষ্টা করলেও ১৫৮ রানের বেশি করতে পারেনি খুলনা। ব্রার্থওয়েট ১১ ও আরিফুল ১৬ রান করেন। রংপুরের রুবেল হোসেন তিনটি ও লাসিথ মালিঙ্গা নেন দুটি উইকেট। পয়েন্ট তালিকা দল ম্যাচ জয় হার পরিত্যক্ত পয়েন্ট রানরেট খুলনা ৮ ৫ ২ ১ ১১ ০.০২৫ কুমিল্লা ৬ ৫ ১ ০ ১০ ০.৭৫৬ ঢাকা ৮ ৪ ৩ ১ ৯ ১.৫২৪ সিলেট ৯ ৩ ৫ ১ ৭ -০.৮৬৯ রংপুর ৭ ৩ ৪ ০ ৬ -০.৩১৭ চিটাগং ৭ ২ ৪ ১ ৫ -০.২০১ রাজশাহী ৭ ২ ৫ ০ ৪ -০.৮০৫
×