ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিডিআর বিদ্রোহ ॥ হত্যা মামলার আপীলের রায় কাল

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

বিডিআর বিদ্রোহ ॥ হত্যা মামলার আপীলের রায় কাল

বিকাশ দত্ত ॥ বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির মৃত্যুদন্ড অনুমোদন ও আসামিদের আপীলের রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল রবিবার। ৯ নবেম্বর এ মামলা সুপ্রীমকোর্টের ওয়েবসাইটে দৈনন্দিন কার্যাতলিকায় রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। ১৩ এপ্রিল উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি ) রাখা হয়। বিচারপতি মোঃ শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করে। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার। আসামির সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপীল শুনানির জন্য ২০১৫ সালে এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। এ মামলায় শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল শুনানি করছেন। আসামিপক্ষে রয়েছেন- এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এসএম শাহজাহান, এএসএম আবদুল মুবিন, মোঃ আমিনুল ইসলাম, দাউদুর রহমান মিনা, শামীম সরদার প্রমুখ। দ্রুত আপীল শুনানি করার জন্য সুপ্রীমকোর্টের বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বমোট ৩৭ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়েছে। এজন্য মোট ১২ লাখ ৯৫ হাজার পৃষ্ঠার ৩৫ কপি ও অতিরিক্ত ২ কপি পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপীলের শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ বেঞ্চটি গঠন করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। পরদিন ৫ জানুয়ারি বসে ১৮ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করে দেন বিশেষ বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে রক্তাক্ত বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই ঘটনার পর ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। আর হত্যাকা-ের বিচার চলে বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোঃ আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর এ হত্যা মামলার যে রায় ঘোষণা করেন, তাতে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। মামলার সাড়ে ৮০০ আসামির মধ্যে ওই রায়ের দিন পর্যন্ত জীবিত ছিলেন ৮৪৬ জন। তাদের মধ্যে ১৬১ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদ-। পাশাপাশি অস্ত্র লুটের দায়ে তাদের আরও ১০ বছরের কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জারিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদন্ড দেন বিচারক। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে তিন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দেয়া হয়। কারও কারও সাজার আদেশ হয় একাধিক ধারায়। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে ২৭৭ জনকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। মৃত্যুদন্ডে দন্ডিতরা সবাই বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্য ছিলেন। যাবজ্জীন কারাদন্ডে দন্ডিতদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন। এর মধ্যে নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই রায়ের এক বছরেরও বেশি সময় পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল ও জেল আপীল করে আসামিপক্ষ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষও খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ও সাজা বাড়াতে আপীল করে।
×