ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এক কোটি ২৭ লাখ মানুষ উপকৃত ॥ নীরব বিপ্লব

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

এক কোটি ২৭ লাখ মানুষ উপকৃত ॥ নীরব বিপ্লব

আনোয়ার রোজেন ॥ চাচা, আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতে আসছিলাম। ‘একটু খাড়ান। গরুটারে খাইতে দেই আগে।’ কর্মব্যস্ত মোঃ আক্কাস আলী এভাবেই সাড়া দিলেন। তার সামনে বাধা লাল ও কালো রঙের দুটি গাভী। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের কেউপুর গ্রামের সত্তরোর্ধ এই মানুষটি একসময় ভিক্ষা করতেন। পরনির্ভর, মর্যাদাহীন জীবন ছিল সহায়-সম্বলহীন আক্কাসের। সম্পদ বলতে স্ত্রীর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া দুই শতাংশ জমি আর তার ওপর কোনরকমে অস্তিত্ব জানান দেয়া একটি ঝুপড়ি ঘর। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ‘সমৃদ্ধি কর্মসূচী’ বদলে দিয়েছে আক্কাস আলীর জীবন। শুধু তিনি নন, পিরোজপুর সদর উপজেলার সিকদারমল্লিক ইউনিয়নের মনোরঞ্জন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ইসারুল, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের রবিউলদের মতো সারাদেশের ১ কোটি ২৭ লাখ মানুষের জীবন বদলে নীরবে কাজ করছে ক্ষুদ্রঋণ অর্থায়নকারী জাতীয় এই প্রতিষ্ঠান। এসব মানুষের কেউ ছিলেন ভিক্ষুক, কেউ করতেন দিনমজুরের কাজ, কেউবা বেকার, প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার, কেউবা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ওদের মধ্যে মিল একটাই, ওরা সবাই প্রান্তিক মানুষ এবং হতদরিদ্র। নিজেদের উদ্যম আর প্রচেষ্টায় দারিদ্র্যের শেকল ভাঙার সাহস দেখাচ্ছেন তারা। মূলত বিশ্বের সামনে তারাই আজ দারিদ্র্যবিমোচনের ‘রোলমডেল’। প্রায় তিন দশক ধরে দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের এই সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লড়াইয়ে পাশে আছে পিকেএসএফ। এ প্রসঙ্গে পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ আবদুল করিম বলেন, ১৯৯০ সালে পিকেএসএফ যখন যাত্রা শুরু করে, তখন দুই হাজার ১২ সেবাগ্রহীতা ছিল। সে সময় ২৩ সহযোগী সংস্থা ছিল। মূলত ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েই পিকেএসএফ যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে আমরা ক্ষুদ্রঋণের পরিবর্তে দিচ্ছি ‘উপযুক্ত ঋণ’। একজন ভিক্ষুকের পুনর্বাসনের জন্য আমরা ১ লাখ টাকা দিই। আর একজন উদ্যোক্তাকে আমরা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিচ্ছি। সুতরাং এখন এটা আর ক্ষুদ্র ঋণেই সীমাবদ্ধ নেই। পিকেএসএফ মনে করে, দারিদ্র্য বহুমাত্রিক; শুধু ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে এ দারিদ্র্য দূর করা ও মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই আর্থিক সেবার পাশাপাশি বহুমাত্রিক দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য পিকেএসএফ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানারকম কর্মকা- পরিচালনা করছে। বর্তমানে সারাদেশে আমাদের কার্যক্রম বিস্তৃত। দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচী পরিচালনা করছে। তাদের থেকে পিকেএসএফের স্বাতন্ত্র্য কোথায়Ñ এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ড. মোঃ জসীম উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, মূলত ঋণ বা অনুদান গ্রহীতার মানবিক উন্নয়ন এবং সামাজিক উত্তরণে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত থাকাই পিকেএসএফকে অন্যান্য ঋণদান সংস্থা থেকে আলাদা করেছে। তাছাড়া আমাদের কাজের ধরনও আলাদা। আমরা লোকাল এনজিওর মাধ্যমে আমাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করি। যাদের আমরা সহযোগী সংস্থা বলি। এমন ২৭৭ সহযোগী সংস্থা রয়েছে আমাদের। সারাদেশে এসব সংস্থার আট হাজার ৬০০ এর বেশি ইউনিট আছে, যেগুলো আমাদের শাখা হিসেবে কাজ করে। এরা নিঝুম দ্বীপ থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করা উচিত। কেউ চাইলেই পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা হতে পারে না। এজন্য কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয়। এক্ষেত্রে পিকেএসএফের সততা ও স্বচ্ছতার মান অনুসরণীয় বলে আমি মনে করি। পিকেএসএফ সহযোগী সংস্থার কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারক করে। কারণ স্থানীয় এনজিওগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়নেও আমরা কাজ করি। খেলাপী নেই, ঋণ পরিশোধের হার প্রায় শতভাগ ॥ এক্ষেত্রে দেশের বড় বড় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পিকেএসএফ দৃষ্টান্ত হতে পারে। পিকেএসএফ সরাসরি গ্রাহককে ঋণ দেয় না, দেয় সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে। সহযোগী সংস্থাগুলো মাঠপর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও ঋণ আদায় করে পিকেএসএফকে ফেরত দেয়। মাঠপর্যায়ের গ্রহীতা হতে সহযোগী সংস্থা এবং সহযোগী সংস্থা হতে পিকেএসএফ উভয়ক্ষেত্রে ঋণ আদায়ের হার প্রায় শতভাগ। দেশজুড়ে পিকেএসএফের ঋণগ্রহীতা সদস্যের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি। এর মধ্যে শতকরা প্রায় ৯২ জন ঋণগ্রহীতাই নারী। পিকেএসএফ সূত্রে জানা গেছে, জুন ২০১৭ পর্যন্ত পিকেএসএফ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী/প্রকল্পের বিপরীতে সহযোগী সংস্থা পর্যায়ে প্রায় তিন হাজার ১১৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। আর পিকেএসএফ থেকে সহযোগী সংস্থায় ক্রমপুঞ্জিভূত ঋণ বিতরণের পরিমাণ ২৭ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা এবং সহযোগী সংস্থা হতে ঋণ আদায় শতকরা ৯৯ দশমিক ২৯। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পিকেএসএফ হতে পাওয়া অর্থে সহযোগী সংস্থাগুলো মাঠপর্যায়ে সদস্যদের মধ্যে মোট ৩৬ হাজার ১১৪ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এই সময় পর্যন্ত সহযোগী সংস্থা হতে ঋণগ্রহীতা পর্যায়ে ক্রমপুঞ্জিভূত ঋণ বিতরণের পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। ঋণগ্রহীতা হতে সহযোগী সংস্থা পর্যায়ে ঋণ আদায় হার শতকরা ৯৯ দশমিক ৭০। জুন ২০১৭ পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে ঋণগ্রহীতাদের স্থিতির পরিমাণ ২১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা। ক্ষুদ্রঋণ থেকে উপযুক্ত ঋণ ॥ শুরুর দিকে কেবল ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পিকেএসএফের ঋণদান কার্যক্রমে নীতিগত ও প্রয়োগগত পরিবর্তন এসেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ঋণ কেন্দ্রিকতাকে পিকেএসএফ মানব উন্নয়ন কেন্দ্রিকতায় রূপান্তর করেছে। ঋণের অঙ্কের চেয়ে মানুষের প্রয়োজন ও জীবনবোধকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ঋণ গরিব মানুষের কপাল ফেরানোর একমাত্র কোন মাধ্যম নয়। গরিব মানুষের দরকার হলো নিজের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ‘উপযুক্ত আর্থিক সহযোগিতা’। পিকেএসএফ এখন সেই কাজটিই করছে। এ প্রসঙ্গে পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবদুল করিম বলেন, এখন শুধু ক্ষুদ্র ঋণ নয়, ঋণের পাশাপাশি আমরা প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিচ্ছি। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটা প্যাকেজ। অর্থ ও অর্থ বহির্ভূত উভয় সেবা দিচ্ছি। উদ্দেশ্য হলোÑ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করা। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা গুচ্ছ চিহ্নিত করেছি। যেমনÑ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাদুকা শিল্প, যশোরে গদখালির ফুল ও গ্রীষ্মকালীন টমেটো, ঝাউদিয়ার গরু মোটাতাজাকরণ, কুষ্টিয়ায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন, সাতক্ষীরায় কাঁকড়া ও কুচিয়ার চাষ, মৌলভীবাজারে টার্কির চাষ, সুন্দরবন এলাকায় মধু চাষ ইত্যাদি। এভাবে আমরা ব্যবসা গুচ্ছ তৈরি করেছি। এখানে অর্থায়ন করছি, প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যাতে তারা উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়। পিকেএসএফের বহুমাত্রিক কার্যক্রম ॥ জানা গেছে, সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে পিকেএসএফ দেশজুড়ে বর্তমানে ৭টি মেইনস্ট্রিম প্রোগ্রাম, ৭টি প্রকল্প এবং ৭টি স্পেশাল প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে অগ্রাধিকার পাচ্ছে সমন্বিত উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচী। পিকেএসএফ এর নাম দিয়েছে ‘সমৃদ্ধি কর্মসূচী’। এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও প্রশিক্ষণসহ সমন্বিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম আছে। আগামী ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের কাতারে এবং আগামী ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। একই লক্ষ্যে পিকেএসএফও তাদের কর্মসূচী সাজিয়েছে। পিকেএসএফের মূল কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, এনরিচ বা সমৃদ্ধি কর্মসূচী, জাগরণ, অগ্রসর, সুফলন, বুনিয়াদ, এগ্রিকালচার ইউনিট, ফিশারিজ এ্যান্ড লাইভস্টক ইউনিট, সোশ্যাল এডভোকেসি এ্যান্ড নলেজ ডিসেমিনেশন ইউনিট এবং রেজাল্ট বেজড মনিটরিং। চলমান প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে প্রমোটিং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ফর পোভার্টি রিডাকশন বা সংক্ষেপে প্রসপার, প্রমোটিং এগ্রিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন এ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ (পেস), উজ্জীবিত, স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ), স্যানিটেশন মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রাম, সিসিসিপি এবং বাংলাদেশ ক্লাইটেম চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ)। বিশেষ কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে স্পেশাল ফান্ড, প্রোগ্রাম সাপোর্ট ফান্ড, সাহস এবং কেজিএফ প্রোগ্রাম। এ প্রসঙ্গে পিকেএসএফের বর্তমান সভাপতি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জমান আহমদ বলেন, দারিদ্র্য একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। এজন্য দরকার বহুমাত্রিক সমাধান। তাই ক্ষুদ্রঋণ নয়, মানুষকে কেন্দ্র করে পিকেএসএফের সব কর্মকা- সাজানো হয়েছে। এসব কর্মসূচীর মাধ্যমে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষার উন্নয়ন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও নিরাপদ স্যানিটেশনসহ মানুষের মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করাই পিকেএসএফের লক্ষ্য। পিকেএসএফের সাফল্য ও স্বীকৃতি ॥ গত প্রায় তিন দশকে ব্যক্তি পর্যায়ে দারিদ্র্যজয়ের অসংখ্য গল্পগাথা রয়েছে পিকেএসএফের। উত্তরবঙ্গের মঙ্গা পরিস্থিতির উন্নয়নে গত এক দশক ধরে কাজ করেছে পিকেএসএফ। সংযোগ কর্মসূচীর আওতায় ৫ লাখ ১০ হাজার অতিদরিদ্র পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে, যার ফলে ‘মঙ্গা’ শব্দটি এখন আর উচ্চারিত হয় না। অন্যান্য আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মতো এক্ষেত্রে পিকেএসএফেরও অবদান রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সরকার প্রতিষ্ঠিত পিকেএসএফ একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান। কারণ এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ দেশীয় ধ্যান-ধারণা এবং সম্পদের মাধ্যমে সফলভাবে দারিদ্র্যবিমোচন এবং উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রথাগত ক্ষুদ্রঋণের গ-ি পেরিয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। ভিক্ষুক পুনর্বাসনে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সফল পিকেএসএফ। এ প্রসঙ্গে পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবদুল করিম বলেন, আমরা প্রায় সাড়ে ৮০০ ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করেছি। আমরা ভিক্ষুককে তার স্বাক্ষর ও এলাকার প্রতিনিধির স্বাক্ষরের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা দিচ্ছি। তবে শর্ত হচ্ছে, সে যেন এ টাকা কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়, ভিক্ষায় আর না আসে। যদি ভিক্ষায় ফিরে আসে তবে টাকা আবার ফেরত দিতে হবে। স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা তাকে সহায়তা করছি। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) স্বীকৃত সংস্থা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে পিকেএসএফ। এ স্বীকৃতির ফলে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ইউএনডিপিসহ ৫৯ আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে পিকেএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় সরাসরি অর্থ সহায়তা পাওয়া সহজ হবে। দেশে জলবায়ু পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এ সংস্থার মাধ্যমে অর্থ সহায়তা পাবে। এছাড়া সংস্থাটি নিজেও এ তহবিলের জন্য আবেদন করতে পারবে। সম্প্রতি মিসরে অনুষ্ঠিত জিএসএফের বোর্ড সভায় এ স্বীকৃতি দেয়া হয়। গত প্রায় তিন দশকে পিকেএসএফের অভিযাত্রা মূল্যায়ন করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বেড়ে ওঠার সাক্ষী খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বললেন, পিকেএসএফের প্রবৃদ্ধি প্রতিফলিত হয়েছে এর কর্মকা-ের পরিমাণগত সম্প্রসারণে। আর শ্রী বৃদ্ধি প্রতিফলিত হয়েছে এর মানগত উন্নয়নে। উভয় ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও উৎকর্ষের কারণে দেশে-বিদেশে প্রতিষ্ঠানটির একটি ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে। পিকেএসএফ এখন স্বীকৃতির উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত।
×