ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবেছিল যারা জনগণ তাদের ভোট দেবে না

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবেছিল যারা জনগণ তাদের ভোট দেবে না

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, যারা জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে, জনগণের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করে, যাদের চরিত্র দুর্নীতিতে আগাগোড়া মোড়া। যাদের এতো গুণ তাদের জনগণ কেন ভোট দেবে? তারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে? বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, যাদের বিবেক আছে তারা অন্তত ওদের (বিএনপি-জামায়াত) কোনদিন ভোট দেবে না, ভোট দিতে পারে না। তাদের ভোট দিয়ে আর অশান্তি টেনে আনবে না। এই আপদকে ফিরিয়ে আনবে না। তাই ওদের স্বপ্ন দেখে কোন লাভ নেই, বড় বড় কথা বলেও লাভ নেই। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ শান্তি চায়, উন্নতি চায়। আজ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে, মানুষ শান্তিতে আছে। তাই যারা (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা চুরি করে খায়, দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে, জনগণ তাদের অন্তত ভোট দেবে না, দিতে পারে না। এটাই হলো বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষে স্পীকার সংসদ অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের আদেশ পাঠ করেন। শেষ হওয়া ১৮তম অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল দশটি। এই অধিবেশনেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্থান পাওয়ায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বসম্মতক্রমে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। গুম-খুন প্রসঙ্গে বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুম-খুন নানাভাবেই হচ্ছে, আবার যারা নিখোঁজ হচ্ছে তাদের অনেকে আবার ফেরতও আসছে। এটা কী শুধু বাংলাদেশে হচ্ছে? যুক্তরাজ্যে ২ লাখ ৪৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক গুম হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা আরও ভয়াবহ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশে ১৬ কোটির ওপরে জনগণ বাস করে। আমরা এতো মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। কিন্তু উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা কতো? উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরও তাদের দেশে এত গুম হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা যখনই অভিযোগ পাচ্ছি তা খতিয়ে দেখছি। দেশে একজন স্বনামধন্য আঁতেল (ফরহাদ মযহার) আছেন তিনি নাকি গুম হয়ে গেলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তিনি খুলনায় নিউমার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা তো অহরহই ঘটছে। তিনি বলেন, আগে দেশের অবস্থা কী ছিল? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি। আমরা সেই অবস্থার পরিবর্তন করেছি। প্রতিবছরই শিক্ষার্থীদের আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করছি। শিক্ষার হার ৭২ ভাগে উন্নীত হয়েছে। পাসের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর সেসনজট নেই। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিতে তার কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আরেকটি দল আছে (বিএনপি), তারা নির্বাচনে আসেনি। এখন রাস্তায় রাস্তায় চিৎকার করে বেড়াচ্ছে। বলছে তারা সরকারকে নাকি টেনেই নামাবেন। এটা এমন এক লোক বললেন তার (মওদুদ) চরিত্র কী? ছাত্রাবস্থায় অন্য একটি দল করত। ব্যারিস্টারি করে দেশে ফেরার পর দেখলাম আমাদের বাড়ি থেকে নড়েন না। আঠার মতো পড়ে থাকেন। তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পিএ ছিলেন মোহাম্মদ হানিফ, তার পিএ হিসেবেও এই লোকটা কিছুদিন কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর তিনি বিএনপিতে গেলেন। এরপর গেলেন জাতীয় পার্টিতে। তিনি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। আবার জেনারেল এরশাদ চলে যাওয়ার পর আবারও গেল বিএনপিতে। তিনি বনানীতে চিটিং করে অবৈধভাবে একটি বাড়ি দখল করেছিলেন। আদালতের রায়ে সেই বাড়িটি হারিয়েছেন। এখন সেই ব্যক্তিটিই ঘোষণা দেন সরকারকে নাকি টেনেই নামাবেন। যিনি নিজেই মাটিতে পড়ে আছেন, তিনি কীভাবে টেনে নামাবেন? এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের সরকার উৎখাত ও নির্বাচন বানচালের নামে দেশজুড়ে ভয়াল নাশকতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, বিএনপি নেত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না। ৯২ দিন ধরে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়েছেন, ২৭ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছেন। জনগণের বাধায় বাধ্য হয়ে শুধু ঘরেই ফিরে যাননি, আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরেছেন। তিনি বলেন, যারা এভাবে মানুষ খুন করেছেন, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অর্থ পাচারের ঘটনা প্রমাণ হয়েছে, যিনি নিজে এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন। দুর্নীতিতে যাদের আগাগোড়া মোড়া, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছে, যারা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল ক্ষমতায় থাকতে। যাদের এত গুণ তাদের জনগণ ভোট দেবে কেন? জনগণকে কী ভোট দিয়ে জ্যান্ত মানুষ যারা পুড়িয়ে হত্যা করে সেই আপদকে আবার ফিরিয়ে আনবে? মানুষের জীবনকে আবার দুর্বিষহ করে তুলবে? প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ এটা বুঝতে পেরেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় এবং হবে। মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়, শান্তি চায়। উন্নতি চায়। এটা আওয়ামী লীগই যে করতে পারে তা প্রমাণ করেছি। আমরা দেশকে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। যারা জনগণের টাকা চুরি করে পাচার করেছে, এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। দিতে পারে না। আর অশান্তি টেনে আনবে না। যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি দেশের মানুষকে উন্নতি দিয়ে যাব। যাতে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠে। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলব, তার আকাক্সক্ষা আমরা পূরণ করব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যে জনগণের সেবক সেটা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। গত ৮ বছরে বাংলাদেশকে আমরা আর্থ-সামাজিকভাবে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি, বাংলাদেশকে বিশ্ব আর ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে দেখে না। বরং সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। জনগণের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস থাকতে হবে। ক্ষমতাটা যদি ভোগের বস্তু হয় তারা জাতিকে কিছু দিতে পারে না। আমাদের কাছে ক্ষমতা ভোগের নয় বরং কল্যাণে কাজ করছি বলেই দেশের এমন অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, অনেকে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তখনই আইপিইউ ও সিপিইউ মতো সারাবিশ্বের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা এই দুটি বৃহৎ সংস্থায় বাংলাদেশের দুজন সংসদ সদস্যকে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন, এটা একটা বিরল ঘটনা। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, সেটা বিশ্বের জনপ্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসে দেখে গেছেন। অনেকে বলে নির্বাচন অবৈধ। এটা শুনে মনে হয়, যারা একথা বলে শুধু তাদেরই জ্ঞানের ভা-ার আছে। আর বিশ্বের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যারা আমাদের দুজনকে নির্বাচিত করলেন তাদের মনে হয় কোন জ্ঞান নেই। তারা যেন না জেনেই বাংলাদেশকে ভোট দিয়ে গেলেন। দুটি সম্মেলনই অত্যন্ত সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাবিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশে কীভাবে গণতন্ত্রের চর্চা হয়। বিশ্বের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও তা দেখে গেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার স্বীকার করেছে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। সমঝোতা সই হয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে যৌক্তিক কারণে সমস্যার সমাধান করছি। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। সারাবিশ্ব অবাক প্রায় ১০ লাখ মানুষের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। সারাবিশ্ব আমাদের পক্ষে, সমর্থন দিচ্ছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে, একটি মানুষ গৃহহীন থাকবে না, প্রত্যেকে পেটভরে খাবে, উন্নত জীবন পাবে- সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’২১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ এবং ’৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবই ইনশা আল্লাহ। সরকারের উন্নয়ন ও সফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। হতদরিদ্র্যের হারও কমে গেছে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি বলেই জনগণ সুফল পাচ্ছে। ৮ বছরের মধ্যে ২৫ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করেছি, পদ্মাসহ ৪৮ বৃহৎ সেতু নির্মাণ করেছি। কর্ণফুলীর নিচে টানেল নির্মাণ করেছি। রেলকে আমরা নতুনভাবে জীবন দিয়েছি। খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের তৃতীয় এবং মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। আগে একজন শ্রমিক সারাদিন খেটে একবেলা খাবার চাল কিনতে পারত না। এখন একবেলা খেটে দিনমজুর ১০ কেজি চাল পর্যন্ত রোজগার করতে পারে। দেশে বেকারত্ব হ্রাস পেয়েছে, দেশে-বিদেশে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। সমগ্র বাংলাদেশকে আমরা ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে এসেছি। সংসদ নেতা বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের সরকার সেইভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন। বর্জ্যটা রাশিয়া নিয়ে যাবে, এটা নিয়ে দুচিন্তার কোন কারণ নেই। জার্মানির শহরের ভেতরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র আছে। পরিবেশের কোন ক্ষতি হলে আমরা তা করতাম না। আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে, তারা সবকিছুই বাঁকা চোখে দেখে, কোন কিছুই তাদের ভাল লাগে না। এরা কী বলল, তাদের কথা শুনে তো দেশের উন্নয়ন বন্ধ করে দিতে পারি না। দেশের মানুষকে আমাদের বিদ্যুত দিতে হবে। দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুত পাচ্ছে। শতভাগ মানুষের বিদ্যুত নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা নগরী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে- বিরোধী দলের নেতা ॥ সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখনও বাঙালী জাতিকে অনুপ্রাণিত করে। ঐতিহাসিক এই ভাষণটি আজ সারাবিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। কোন দেশে পর পর দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হওয়া সত্যিই বিরল ঘটনা। আইপিইউ ও সিপিইউ সম্মেলনে সারাবিশ্বের নেতারা যোগ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে গেছেন, প্রশংসা করেছেন। এটাও বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশই পারে একযোগে এমন দুটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার চালাকি করতে পারে। তাই সতর্কভাবে রোহিঙ্গাদের সেদেশে ফেরত পাঠানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। রাজধানী ঢাকা বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ঢাকাকে তিলোত্তমা নগর করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই ঢাকাই আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চুয়ান্নটা খাল ছিল ঢাকায়। এখন ৮/১০ খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। সেজন্য জলাবদ্ধতায় পড়তে হচ্ছে প্রায়শই। প্রত্যেকটা নদী, খাল নষ্ট হয়ে গেছে, দখল হয়ে গেছে। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে নদী-খাল উদ্ধারের। প্রত্যেকটা নদীও বর্জ্য দিয়ে ভরে গেছে, পানি নষ্ট হয়ে গেছে। যেভাবে চলছে, আগামীতে খাবার পানি মহাসঙ্কট দেখা দেবে। বিশ্বের ৬শ’ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৮০ কোটি মানুষ নিরাপদ পানি খাচ্ছে। তীব্র বায়ু দূষণে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিরোধী দলের নেতা আরও বলেন, চিকিৎসা মানুষের অধিকার হলেও এখন হাসপাতালে দালাল না ধরলে বেড পাওয়া যায় না। ডাক্তাররা মাত্র ৪৮ সেকেন্ড সময় দিচ্ছে রোগীদের। এ্যান্টিবায়োটিক যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। খাদ্য ভেজালও থামানো যাচ্ছে না। দেশের মানুষ ও নতুন প্রজন্মের শরীর স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে দেশের কী হবে? তিনি বলেন, দেশে এখন জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। এর মধ্যে ৫ কোটি মানুষেরই কোন কাজ নেই। কর্মসংস্থান না হওয়ায় মানুষ বিপথে যাচ্ছে। একের পর এক মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে। ঘরে বসে মানুষ খুন হচ্ছে। অনিরুদ্ধ রায় কয়েকদিন আগে ছাড়া পেয়েছে। কিন্তু সে কোথায় ছিল আমরা তা জানতে পারিনি। মাদকের ভয়াবহ ছোবলে দেশ আক্রান্ত। স্মার্টফোনের হাত থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে। রাত দশটার পর এ্যাপসগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।
×