ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে মাঠ প্রশাসনে ৮ নারী ইউএনও

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

টাঙ্গাইলে মাঠ প্রশাসনে ৮ নারী ইউএনও

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। উন্নয়নে নারীদের গৌরবময় অগ্রযাত্রা। এ অগ্রযাত্রায় সমাজকে অন্ধত্ব থেকে আলোর পথে আনতে নারীদের দায়িত্বও অপরিসীম। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন এখন একটি অন্যতম আলোচিত বিষয়। তারই প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলাতে। টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বর্তমানে ৮টিতে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ভিশন ২০২১-এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শুধু পুরুষ কর্মকর্তারাই দক্ষতা, যোগ্যতার মাপকাঠিতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে- এ ধারণা ভুল প্রমাণিত করে বিশাল এ কর্মযজ্ঞে নারীরা কিন্তু আর পিছিয়ে নেই। প্রশাসনের শীর্ষপদে থাকা এখন নারী ইউএনওরা সফলতা আর নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে নিরলসভাবে দেশের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। টাঙ্গাইল জেলার ৮টি উপজেলার নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) হলেন- টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিনাত জাহান। তিনি প্রশাসনের ২৭তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা সিদ্দিকা। তিনি প্রশাসনের ৩০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। গোপালপুর উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা শারমিন। তিনি প্রশাসনের ২৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী সরকার রাখী। তিনি প্রশাসনের ২৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা শাহীন। তিনি প্রশাসনের ২৭তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন। তিনি প্রশাসনের ২৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামছুন নাহান স্বপ্না। তিনি প্রশাসনের ৩০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। কালিহাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা আক্তার। তিনি প্রশাসনের ২৭তম বিসিএসে উত্তীর্ণ। নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রধান কাজ হলো- উপজেলায় অবস্থিত সকল বিভাগের কাজকর্মের সমন্বয় সাধন করা। মাদকমুক্ত, যৌতুক-বাল্যবিবাহ রোধ ও জঙ্গীমুক্ত সামাজিক ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ কাজের ভার তাদের ওপর ন্যস্ত। এছাড়াও এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি উপজেলার সকল দায়িত্ব তদারকি করে থাকেন। পাশাপাশি জেলার সঙ্গে সমন্বয় করে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মাঝে-মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নারী ইউএনওরা। সাধারণ, রাজস্ব, ফৌজদারি ও উন্নয়ন প্রশাসন বিষয়ে দায়িত্ব পালনের ভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)। এছাড়াও অন্য দায়িত্ব হলো- আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকা- তদারকি করা, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ তদারকি ও বাস্তবায়ন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন, আশ্রয়ণ প্রকল্প, আদর্শ গ্রাম, আবাসন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, অসহায় মানুষদের বিভিন্ন আশ্রয়নে সংস্থানকরণ, সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং যৌতুক-বাল্যবিবাহ রোধে পুরুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতোই দক্ষভাবে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন এই ৮ নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, ‘ইউএনও হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয় না। প্রশাসনে তৃণমূল পর্যায়ে এখন নারীদের কর্মক্ষেত্র ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। একজন ইউএনও হিসেবে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে হয় জানিয়ে তিনি টিনিউজকে বলেন, সেক্ষেত্রে আমরা অনেক লজিস্টিক সাপোর্ট পেয়ে থাকি। এতে করে আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পন্ন করা যায়।’
×