ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জুবায়ের বারি

ভেড়াও মানুষ চিনতে পারে

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

ভেড়াও মানুষ চিনতে পারে

গবেষকদের মতে, স্নায়ুজনিত চিকিৎসা সম্পর্কে আরও বেশি করে জানা সম্ভব হবে ভেড়ার মাধ্যমে। ভেড়া প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে তারাও পরিচিত মানুষকে চিনতে পারে। সেই ক্ষমতা তাদের রয়েছে। ব্রিটেনে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, একবার যখন এই প্রাণীটিকে কোন একজন মানুষের ছবি দেখানো হয়েছে, পরে ওই প্রাণীটি আবার তাকে চিনতে পেরেছে। কয়েকজন চলচ্চিত্র তারকা, সংবাদ পাঠক এবং রাজনীতিকের ছবি ব্যবহার করে এই পরীক্ষাটি চালানো হয়। প্রথমে আটটি ভেড়াকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদের দেখানো হয় বিখ্যাত লোকজনের ছবি। বারবার দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় কোন ছবিটা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার, বা কোন ছবিটা অভিনেত্রী এমা ওয়াটসনের। তারপর প্রশিক্ষিত ভেড়াগুলোকে ছবি বাছাই করতে বলা হয়েছে। দেখা গেছে, তারা অপরিচিত ছবির তুলনায় পরিচিত লোকজনের ছবিই বেশি ধরতে পারছে। বিশেষ করে যারা সেলেব্রিটি তাদের ছবি। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই গবেষণা থেকে স্নায়ু-জনিত চিকিৎসা সম্পর্কে আরও বেশি করে জানা সম্ভব হবে। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে হানটিংটন্স এবং পারকিনসন্স। কীভাবে চালানো হয়েছে এ গবেষণা? যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি প্রফেসর জেনি মরটন, তিনি বলছেন, বিস্ময়করভাবে দেখা গেছে, এ কাজটা তারা বেশ ভালভাবেই করতে পেরেছে। ‘তাদের সুপরিচিত চার ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই তারা চিনে ফেলেছে কোন ছবিটি কার। এই পরীক্ষায় আমরা কম্পিউটারের স্ক্রিন ব্যবহার করেছি। একসঙ্গে দুটো করে ছবি তোলা হয়েছিল। একটি ছবি ছিল ওই সেলিব্রিটিদের একজনের। অন্যটি ছিল এমনি কোন একটি বস্তু বা অপরিচিত কোন ব্যক্তি।’ ‘ভেড়াগুলোকে শেখানো হয়েছিল সেলিব্রেটি ব্যক্তিদের ছবি চিহ্নিত করার জন্যে। দেখা গেছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভেড়া সেলিব্রেটি ব্যক্তির ছবিই বাররার তুলেছে এবং যখনই তারা পেরেছে, প্রত্যেকবারই তাদের খাবার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।’ এখন প্রশ্ন হতে পারে- এ গবেষণায় ভেড়া কেন ব্যবহার করা হলো? গবেষক জেনি মরটন বলছেন, ‘প্রথম কথা হলো ভেড়ার মস্তিষ্ক অনেক বড় হয়। এখন আপনি যদি চিকিৎসার ব্যাপারে কোন মস্তিষ্কের ওপর গবেষণা করতে চান তাহলে আকারের দিক থেকে ইঁদুর আর মানুষের মস্তিষ্কের মাঝামাঝি ভেড়ার মস্তিষ্ক। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে- ভেড়ার মস্তিষ্ক এমন যে তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া যায়। শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষণের ফলে সেখানে যে ধরনের পরিবর্তন ঘটে সেটা পরিমাপও করা যায় এবং তৃতীয়ত ভেড়াকে আপনি প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যেই রেখে দিতে পারেন।’ গবেষণার ফলাফল হলো- মানুষ ও বানর যেভাবে পরিচিত মানুষকে চিনতে পারে, কোন কিছু চিহ্নিত করার ব্যাপারে ভেড়ার মস্তিষ্কও একইভাবে কাজ করে। এর আগেও ভেড়ার ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, তারা অন্য ভেড়াকেও চিনতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এরপর তারা পরীক্ষা করে দেখবেন ভেড়া মানুষের মুখের ভঙ্গি আলাদা করে কতটা ধরতে পারে।
×