ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝলক

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

ঝলক

পুরস্কার ‘মুড়ো ভুনা’ চীনা নাগরিক লিউ শিংটিং। সম্প্রতি অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে দুপুরের খাবারের জন্য বের হন। স্থানীয় একটি হোটেলে মাছের মুড়ো ভুনা খাওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু পথের মাঝে হঠাৎ দেখলেন অন্য আরেকটি গাড়ি পাশের একটি লেকের মধ্যে পড়ে গেছে। দেরি করলেন না লিউ। সঙ্গে সঙ্গে তিনিও নেমে পড়লেন পানিতে। গর্ভবতী এক নারীসহ চারজনকে উদ্ধার করলেন। নাটকীয়ভাবে জীবন বাঁচানোর এই খবর শুনে হোটেলের মালিক তাকে সারাজীবন মাছের মাথা সরবরাহ করার ঘোষণা দেন। লিউ বলেন, তখন আমার চিন্তা করা বা ভয় পাওয়ার একদম সময় ছিল না। প্রথমেই আমি জীবন বাঁচানোর বিষয়টা চিন্তা করি এবং পানিতে ঝাঁপ দেই। তিনি আরও বলেন, জুতা এবং জামাকাপড় না খুলেই পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়াটা বিপজ্জনক ছিল। কিন্তু বিষয়টা খুবই জরুরী ছিল। এরপর পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে গাড়ির আরোহীদের জানালা দিয়ে বের করে আনি। এ ঘটনার পর চীনের কিয়ানডাও লেক ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ লিউ শিংটিংয়ের জন্য আজীবন মাছের মুড়োর তরকারি সরবরাহের ঘোষণা দেন। এতে খুশি লিউ শিংটিং। -পিপলস টাইমস অবলম্বনে কমছে রাতের দৈর্ঘ্য কৃত্রিম আলোর প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে রাতের দৈর্ঘ্য কমে আসছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের জীবন ধারনের ওপর। রাতের আলোর উজ্জ্বলতা মাপতে বিশেষভাবে বানানো নাসার স্যাটেলাইট রেডিওমিটারের সাহায্যে পরিচালিত এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তোলা গত পাঁচ বছরের রাতের চিত্র পরীক্ষা করে গবেষকরা এ তথ্য পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এলইডি ও ফ্লুরোসেন্ট বাতির অধিক ব্যবহারে বিশ্বের অনেক দেশ থেকেই রাত হারিয়ে যেতে বসেছে। আবার বিভিন্ন দেশে রাতের উজ্জ্বলতার হারে তারতম্য দেখা গেছে। ‘উজ্জ্বল রাতের’ জন্য বিশেষভাবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র ও স্পেনে গড়পড়তা একই রকম থাকলেও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে কৃত্রিম আলোর ব্যবহার ও এর উজ্জ্বলতার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো দেশে রাতের উজ্জ্বলতার পরিমাণ কমেছে। স্যাটেলাইটের ছবিতে ঝকমকে উপকূল ও মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা শহরগুলোতে রাতের আলো চমৎকার দেখালেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই প্রবণতা মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। গত বছর মার্কিন মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল, অতি তীব্র কিন্তু দুর্বল নক্সার এলইডি বাতির নীল আলো মানুষের ঘুমের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের বাতি ব্যবহার কমিয়ে আনতে বিভিন্ন কমিউনিটিকে উৎসাহিত করার কথাও তখন বলা হয়। অপর এক গবেষণায় বলা হয়, কৃত্রিম আলোর কারণে নিশাচর পতঙ্গের কর্মকাণ্ড বদলে যায়। এবং পরাগায়ন বাধাগ্রস্ত হয়। শুধু তাই নয়, শহর এলাকায় বাতির পরিমাণ বাড়ায় নিশাচর পাখির আচরণেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গবেষক দলের প্রধান ক্রিস্টোফার কাইবা বলেন, কৃত্রিম আলোর এ ব্যবহার পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মার্কিন মুলুকে রাতের বাতির উজ্জ্বলতা অনেকটা আগের মতো রয়েছে। তবে ব্রিটেন ও জার্মানিতে উল্টো; উজ্জ্বলতা বেড়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, কৃত্রিম আলোর পরিমাণ এখন এতটাই বেড়েছে যে ইউরোপে এখন রাতে প্রাকৃতিক আলো খুঁজে পাওয়াই দায়। এই ধরনের কৃত্রিম আলো মানুষের দৃষ্টিসীমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এ ক্ষতি সহজে পূরণ হবে না। তবে শহর এলাকায় রাতে অল্প আলোক ক্ষমতার বাতি জ্বালিয়ে দৃষ্টিসীমার ক্ষতি ঠেকানো সম্ভব বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রখ্যাত সায়েন্স সাময়িকী ‘সায়েন্স এ্যাডভান্সে’ প্রকাশিত হয়েছে। -বিবিসি অবলম্বনে
×