ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে যুবককে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

যশোরে যুবককে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ প্রতিপক্ষের বোমা হামলায় আহত মেহেদী হাসান রাজা নামে এক যুবককে হাসপাতালে ভর্তির কথা বলে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পেন্ডিং মামলায় না ফাঁসানো এবং রিমান্ডে না নেয়ার শর্তে পুলিশকে দেড় লাখ টাকা ঘুষ দেয়া হলেও অস্ত্র ও হেরোইন উদ্ধার মামলায় আদালতে তাকে সোপর্দ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন রাজার বোন নাজনীন নাহার। গত মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানি ছিল। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছে। পরিবারের দাবি, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পুলিশ মিথ্যা মামলায় মেহেদী হাসান রাজাকে ফাঁসিয়েছে। এজন্য বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য নেয়ার কথা বলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় তার নাম পরিবর্তন করে রাজীব লেখা হয়। তবে বাবার নাম ফজলুল করিম টুটুল ও ঠিকানা বারান্দী মোল্লাপাড়া লেখা আছে। ভুক্তভোগী যুবকের বোন নাজনীন নাহার অভিযোগ করেন, ভাই মেহেদী হাসান রাজা ঢাকায় থাকে। ১৪ নবেম্বর সকালে যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ায় বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় এলাকার মোড়ে পৌঁছলে প্রতিপক্ষের লোকজন রাজাকে উদ্দেশ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। এতে রাজা আহতও হয়। বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছিল। দুপুরে রাজাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুজ্জামান। কিন্তু মেহেদী হাসান রাজার নাম পরিবর্তন করে রাজীব নামে হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। এরপর ওসির সঙ্গে আলাপের কথা বলে রাজাকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় বসিয়ে রাখা হয়। পরিবারের লোকজন ছাড়াতে গেলে পুলিশ সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। আমরা রাত আড়াইটা পর্যন্ত থানায় অপেক্ষা করেছি। কিন্তু রাজাকে ছাড়েনি। পরের দিন (১৫ নবেম্বর) এসআই ওয়াহিদুজ্জামান বাদী হয়ে মেহেদী হাসান রাজার নামে অস্ত্র ও হেরোইন উদ্ধার মামলা দেয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। নাজনীন নাহার অভিযোগ করেন, ভাই (রাজা) আটকের পর পুলিশ পরিদর্শক আবুল বাসার ও শামসুদ্দোহা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুজ্জামান ও মোখলেছুজ্জামানকে ১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ঘুষ দেয়া হয়েছে। রাজার নামে পেন্ডিং মামলা দেবে না ও রিমান্ড শুনানিতে নেবে না- এই শর্তে চার কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়া হয়েছে। নিজেই ঘুষ দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় শান্তি কমিটির নামে একটি চক্র এলাকার লোকজনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ওইসব নেতা এলাকায় নানা অপকর্ম করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। মামলার তদন্ত কর্মকতা মোখলেছুজ্জামান বলেন, আমার বিরুদ্ধে টাকা লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। আমি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। মঙ্গলবার আদালতে রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত নামঞ্জুর করেছে। মামলা তদন্ত করছি। কোতোয়ালি থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, অস্ত্র ও হেরোইনসহ রাজাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
×