ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জামালপুর হাসপাতালের জেনারেটর বিকল ১৮ মাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

জামালপুর হাসপাতালের জেনারেটর বিকল ১৮ মাস

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ২২ নবেম্বর ॥ ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক জেনারেটরটি বিকল হয়ে গেছে। ১৮ মাস ধরে চলছে এর মেরামত কাজ। ১৬ নবেম্বর রাতে পিডিবির লোডশেডিংয়ের সময় টানা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় গোটা হাসপাতাল অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকলেও জেনারেটর চালু না করায় বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ ও শহরবাসীর মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মূলত: উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওই জেনারেটরটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জেনারেটরটি ২৫০ কেভি বিদ্যুত সরবরাহ ক্ষমতাসম্পন্ন। ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শেষের দিকে প্রায় ২৫ লাখ ২৪ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয়ে এই বৈদ্যুতিক জেনারেটরটি স্থাপন করা হয়। জেনারেটর চালানোর জন্য ডিজেলের মজুদ থাকলে পিডিবির লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এই জেনারেটর দিয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ, সব ওয়ার্ড, অস্ত্রোপচার কক্ষ ও আবাসিক ভবনসহ গোটা হাসপাতালের বিদ্যুত চাহিদা মেটানো যায়। কিন্তু উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই জেনারেটরটি স্থাপনের পর থেকে হাতুরে মিস্ত্রি দিয়ে মেরামত করার কারণে দিনে দিনে এটি বিকল হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ জুন সকাল ১০টা ৩৩ মিনিট থেকে ১১টা ৩ মিনিট পর্যন্ত অর্থাৎ আধা ঘণ্টা সময় চালু রেখে জেনারেটর ব্যবহার করা হয়েছে। এতে খরচ হয় ১৩ লিটার ডিজেল। এর কয়েকদিন আগে ২০০ লিটার ডিজেল ক্রয় করা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রায় ১৮ মাস ধরে জেনারেটরটি আর চালু করা হয়নি। জেনারেটরটিতে বড় ধরনের ত্রুটি দেখা দিলেও জামালপুরের স্থানীয় একজন হাতুরে মিস্ত্রি দিয়ে তা মেরামত করাচ্ছেন। কিন্তু ওই মিস্ত্রি তার মেরামত কাজ শেষ করে এখনও তা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত বা মৌখিক কোনোভাবেই নিশ্চিত করেননি। হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ের হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, জেনারেটর মেরামতের মজুরি বাবদ ওই মিস্ত্রি প্রায় ১ লাখ টাকার বিল করেছেন। টাকা বরাদ্দ না থাকায় তার বিল পরিশোধ করা হয়নি। তবে তেলের মজুদ থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যখন যা তেল লাগবে তা ক্রয় করে দুর্যোগের মুহূর্তে জেনারেটর চালু করার আদেশ থাকলেও জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা মানছেন না। কর্তৃপক্ষের চরম উদাসিনতার কারণে প্রায় ১৮ মাস ধরে জেনারেটরটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় পিডিবির লোডশেডিংয়ের সময় জরুরী মুহূর্তে দিনেও চিকিৎসা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হয়। অন্যদিকে রাতে পরিণত হয় ভূতুরে অবস্থার। হাসপাতাল এলাকায় রাতে বিদ্যুত না থাকলে একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হয়, অন্যদিকে বিদ্যুতবিহীন ভূতুরে সময়ে বিশেষ করে রাতে মাদকাসক্ত এবং ছিনতাইকারীদের দ্বারা অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন। ১৬ নবেম্বর রাত পৌনে ৮টা থেকে রাত ১১টা ৯ মিনিট পর্যন্ত টানা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পিডিবির লোডশেডিংয়ের সময় হাসপাতালের জেনারেটরটি চালু না করায় এ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর লোকজন এবং শহরবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
×