ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাইসম্যানের পাশে সিমোন বিলিস

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২২ নভেম্বর ২০১৭

রাইসম্যানের পাশে সিমোন বিলিস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি এক টুইটার বার্তায় নিজের টিমের চিকিৎসকের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা জিমন্যাস্ট এ্যালি রাইসম্যান। এরপরই এ্যালি রাইসম্যানের পাশে এসে দাঁড়ান অনেকেই। তবে স্বদেশী সতীর্থের পাশে না দাঁড়িয়ে বরং সমালোচনা করেন গ্যাবি ডগলাস। টুইটারে তিনি রাইসম্যানের খোলামেলা পোশাক পরিধানের সমালোচনা করেন। এ প্রসঙ্গে রাইসম্যানের স্ট্যাটাসে গ্যাবি ডগলাস কমেন্ট করেন, ‘মেয়ে হিসেবে ভদ্র এবং উচ্চশ্রেণীর পোশাক পরিধান করাটা আমাদেরই দায়িত্ব।’ এরপরই মুখ খোলেন আমেরিকার বিস্ময় বালিকা সিমোন বিলিস। গ্যাবি ডগলাসের এই কমেন্টের স্ক্রিনশটসহ তিনি টুইট বার্তায় লিখেন, ‘ব্যথিত। আমাকে এটাও দেখতে হলো। সত্যিই আমি ব্যথিত, তবে মোটেও বিস্মিত নই। এটা দেখে আমার চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসল। তোমার সতীর্থ হিসেবে আমি আরও বেশি কিছু প্রত্যাশা করেছিলাম। চেয়েছিলাম তুমি তার পাশে দাঁড়াবে।’ এ সময় এ্যালি রাইসম্যানের পাশে দাঁড়িয়ে সিমোন বিলিস লিখেছেন, ‘আমি তোমার পাশে আছি এ্যালি, তোমাকে সমর্থন করি। আরও শক্তভাবে দাঁড়াও।’ ততক্ষণে অবশ্য গ্যাবি ডগলাস তার কমেন্ট ডিলিট করে ফেলেন। শুধু তাই নয়, নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চান তিনি। এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে ডগলাস লিখেছেন, ‘আমি সঠিকভাবে রিপ্লে দিতে পারিনি। এরজন্য আমি গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ মাত্র ১৮ বছর বয়সেই লন্ডন অলিম্পিকে দেশের হয়ে দু’টি সোনা এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন রাইসমান। তার আকর্ষণীয় ফিগারে মুগ্ধ-বিমোহিত পৃথিবীর কোটি কোটি ভক্ত-অনুরাগী। ইএসপিএন-এর বিখ্যাত বডি ইস্যু ম্যাগাজিনে এ নগ্ন শরীরে পোজ দিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। সে সময় পৃথিবীজুড়ে তার সমালোচনা হলেও রাইসম্যান তা নিয়ে মোটেও ভীত ছিলেন না। নিজের আকর্ষণীয় ফিগার নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আশঙ্কায় না ভুগে নিজের মাসেলগুলোকে ভালবাসতে শিখেছি। আমি এটাকে কোন খুঁত মনে করি না। কারণ এই পেশির কারণেই আমি আজ সারাবিশ্বে পরিচিত। পেশির জন্যই আমি জিমন্যাস্ট হতে পেরেছি। অতি সাধারণ পোশাক পরে থাকলেও আপনি একজন জিমন্যাস্টকে চিনতে ভুল করবেন না। এই খেলার প্রচ- শারীরিক শক্তির প্রয়োজন হয়। ফলে পেশিবহুল শরীর থাকা তো অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি একটা টি-শার্ট পরে থাকলেও ফুটে ওঠে।’ শুধু এ্যালি রাইসম্যান নয়, যুক্তরাষ্ট্রের টিম চিকিৎসক ল্যারি নাসেরের বিপক্ষে অসংখ্য যৌনতার অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিন আগে যেমন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আমেরিকারই আরেক তারকা জিমন্যাস্ট ম্যাককায়লা মারোনি। ল্যারি নাসেরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তারকা জিমন্যাস্ট ম্যাককায়লা মারোনি বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন থেকেই শুরু হয়েছিল তা। টেক্সাসে তখন আমি প্রথম জাতীয় দলের অনুশীলন কাম্পে যোগদান করি। ক্রীড়াজগত থেকে বিদায় নেয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্তই তার শিকার হয়েছিলাম আমি। যে কোন সময় যে কোন অবস্থাতেই সুযোগ পাওয়া মাত্রই আমাকে ব্যবহার করতো সে।’ ল্যারি নাসের গত তিন দশক ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্ট দলের চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এমন বহু যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। তারই পেরিপ্রেক্ষিতে গত নবেম্বরে গ্রেফতার করা হয় ল্যারি নাসেরকে। সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে ফিফার সাবেক সভাপতি সেপ ব্লাটারের বিরুদ্ধেও। যুক্তরাষ্ট্রেরই নারী দলের সাবেক গোলকিপার হোপ সলো অভিযোগ করেন, ব্লাটার তাকে যৌন হয়রানি করেছেন। ২০১৩ সালে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে সাবেক ফিফা সভাপতি নাকি তার শরীরে হাত দিয়েছিলেন। ৩৬ বছর বয়সী সাবেক এই নারী ফুটবলার সলো বলেন, ‘আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করো না এই কথাটা তার মুখের ওপর বলা হয়নি। তবে আমি সবকিছুই সরাসরি সামলাতে পছন্দ করি। তখন আমি উপস্থাপনা নিয়ে নার্ভাস ছিলাম। আমাকে ব্যালন ডি’অর তুলে দিতে হয়েছিল। সেই ঘটনার পর আমি তার সঙ্গে দেখা করিনি। সেটা আরও খারাপ হয়েছে।’
×