ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আয়ান নূর

ইভানোভিচের দিনকাল

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ নভেম্বর ২০১৭

ইভানোভিচের দিনকাল

টেনিস কোর্টে আলো ছড়ানো তারকাদের মধ্যে আনা ইভানোভিচ অন্যতম। টেনিসের সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের চূড়াতেও উঠেছেন সার্বিয়ার এই টেনিস তারকা। চোট-ফর্মহীনতার গল্পটা ছিল তার নিয়মিত সঙ্গী। কিন্তু কখনোই হাল ছাড়েননি তিনি। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বারবারই এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। গত বছরের শেষের দিকে হঠাৎ করেই টেনিসকে বিদায় বলে দেন ইভানোভিচ। টেনিসকে বিদায় বলার পর এই মুহূর্তে পুরোদস্তুর সংসারী ইভানোভিচ। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে বাস্তিয়ান শোয়েইন স্টেইগারের সঙ্গে একত্রে বাস করছেন ২৯ বছর বয়সী সার্বিয়ান তারকা আনা ইভানোভিচ। সেখানে থাকার কারণটাও খুব সুস্পষ্ট। বিশ্বকাপজয়ী সাবেক জার্মান তারকা শোয়েইন স্টেইগার যে মেজর লীগ সকারে শিকাগো ফায়ারের জার্সিতে খেলছেন। কোর্টের লড়াইয়ে সার্বিয়ার ইভানোভিচ যেমনই ছিলেন না কেন প্রেমের মাঠে কিন্তু দুর্বার! প্রেমিক বাস্তিয়ান শোয়েইন স্টেইগারকে যে গত বছরই জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন তিনি। দুই জগতের দুই তারকা হয়েও দারুণ উপভোগ্য সময় পার করছেন এখন তারা। একজন টেনিসে আরেকজন ফুটবলে। দুই তারকা দুই দেশের হলেও মনের টানে মিলে গেছেন একই বিন্দুতে। ইভানোভিচ-শোয়েইন স্টেইগারের প্রেমের সূত্রপাত ছিল ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। হাতে-হাত রেখে নিউইয়র্কের রাস্তায় আনা ইভানোভিচ আর বাস্তিয়ান শোয়েইন স্টেইগারকে হাঁটতে দেখা যায়। এরপর গত বছর বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। সম্প্রতি শোনা যায় ইভানোভিচের অন্তঃসত্ত্বার গুঞ্জন। তবে এ বিষয়ে এখনও মুখ খুলেননি তারকা দম্পত্তির কেউই। জার্মানির ইতিহাসের অন্যতম সফল ফুটবলার শোয়েইন স্টেইগার। ২০১৪ সালে বিশ্বজয়ী জার্মান দলের একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। সে সময়ে ফিলিপ লাম ছিলেন অধিনায়ক। বিশ্বকাপের পরই অবসরের সিদ্ধান্ত নেন লাম। তারপরই জার্মানির অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত হন শোয়েইন স্টেইগার। ইউরো কাপে জার্মানিকে শিরোপা উপহার দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যর্থ হন শোয়েইনি। সাবেক বেয়ার্ন মিউনিখের এই তারকা ফুটবলার জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেছেন গত ইউরো কাপের সেমিফাইনালে। সে ম্যাচে জার্মানি তারই নেতৃত্বে ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল। জাতীয় দলের হয়ে ১২০ ম্যাচ খেলেছেন শোয়েইন স্টেইগার। এই সময়ের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে ২৪টি গোল করেছেন তিনি। জাতীয় দলকে বিদায় বললেও ক্লাব ফুটবলে এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। স্বদেশী ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখকে বিদায় বলার পর যোগ দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। তবে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেও নিজেকে মেলে ধরতে না পারা জার্মান তারকা এখন খেলছেন মেজর লীগ সকারের দল শিকাগো ফায়ারের জার্সিতে। অন্য দিকে গত এক দশক ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আনা ইভানোভিচ। তবে স্বপ্নের মেলবন্ধন খোঁজে পান ২০০৮ সালে। সে বছরই প্রথম কোন গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করলেও স্বপ্নভঙ্গ হয় সার্বিয়ান তারকার। রাশিয়ার মারিয়া শারাপোভার কাছে হেরে যান তিনি। তারপরও হাল ছাড়েননি ইভানোভিচ। ফ্রেঞ্চ ওপেনে আবারও ফাইনালে জায়গা করে নেন। এবার আর স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি প্রতিপক্ষ। ফাইনালে দিনারা সাফিনাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো স্বপ্নের গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। টেনিস কোর্টে অসাধারণ পারফরমেন্স উপহার দেওয়ার সৌজন্যে সে বছরই বিশ্ব টেনিস র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর স্থানটি দখল করে নেন ইভানোভিচ। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ আট বছর। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আর কখনোই গ্র্যান্ডসøাম জিততে পারেননি তিনি। তবে কখনোই হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েননি ১৫টি ডব্লিউটিএ শিরোপা জেতা এই টেনিস তারকা। সবসময়ই কোর্টে থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বদা নিজের সেরাটা দিতে মত্ত থেকে ইভানোভিচ। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে বাধ্য হন টেনিসকে বিদায় বলতে। ইভানোভিচ বিদায় বলেছেন অথচ বয়সে ছত্রিশকেও ছাড়িয়ে যাওয়া সেরেনা উইলিয়ামস ঘোষণা দিচ্ছেন আবারও স্বরুপে ফেরার! গত সপ্তাহেই যিনি বিয়ে করেছেন। এ্যালেক্সিস ওহেনিয়ানের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরেই চুটিয়ে প্রেম করছেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। গত পহেলা সেপ্টেম্বর তাদের কোলজুড়ে ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তানও এসেছে। বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে গত বৃহস্পতিবার দু’জনে বিয়ের কাজটাও সেরে ফেলেন। টেনিসের মহাতারকা ও ভিন্নধর্মী ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট রেডিট-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার বিয়েকে ঘিরে পুরো দুনিয়ারই ভীষণ আগ্রহ ছিল। তবে নিউ অরলিন্সে আর্ট সেন্টারে আয়োজিত বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও সেলিব্রেটি ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। এর পরও আড়াইশ’ অতিথি উপস্থিত ছিলেন তাদের বিয়েতে। তারকা সঙ্গীতশিল্পী বিয়ন্সে নোয়েল, ভোগ ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক আনা উইনটোর, আমেরিকার টিভি তারকা কিম কার্দেশিয়ান, হলিউড তারকা ইভা লনগোরিয়া, সঙ্গীতশিল্পী সিয়েরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বিয়েতে। এ বিয়ের জন্য জ্যাজ সঙ্গীতের জন্য বিখ্যাত এ শহর ট্রাফিক জ্যামের কারণে প্রায় থমকে গিয়েছিল। কালো রঙের একটি ট্রেনে করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণকারীদের আর্ট সেন্টারে নিয়ে আসা হয়। এ ট্রেনযাত্রা দেখেই পুরো অরলিন্স থমকে গিয়েছিল। সেরেনার বিয়ে বলেই হাসিমুখে ট্রাফিক জ্যাম সহ্য করেছেন অরলিন্সের মানুষ। তার বিয়েতে টেনিস তারকাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছিলেন ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। ২৩টি গ্র্যান্ডস্লামের মালিক সেরেনার আগে আংটি বদলের পর্বটা সেরে নেন ডেনমার্কের এই টেনিস তারকাও। টুইটারে হাতে পরা আংটির ছবি পোস্ট করে তার ভক্ত-অনুরাগীদের চমকে দিয়েছিলেন সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। সেই ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, এই দিনটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক দিন। আমি আমার আত্মার দেখা পেয়েছি।’ ওজনিয়াকির বর হচ্ছেন আমেরিকান বাস্কেটবল তারকা ডেভিড লি।
×