ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তিন লাখ ৫৯ হাজার সরকারী পদ শূন্য

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২১ নভেম্বর ২০১৭

তিন লাখ ৫৯ হাজার সরকারী পদ শূন্য

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতরে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি পদ শূন্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আর সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোন পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে প্রশ্নের উত্তর দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রশ্নোত্তরে সংসদে মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদফতরে প্রথম শ্রেণীর (গ্রেড-৯ থেকে তদুর্ধ) ৪৮ হাজার ২৪৬টি, দ্বিতীয় শ্রেণীর অর্থাৎ ১০ম থেকে ১২তম গ্রেডে ৫৪ হাজার ২৯৪টি, তৃতীয় শ্রেণীর (১৩-১৭তম গ্রেডের) ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৩৭টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণীর (১৮-২০তম গ্রেডে) ৭৩ হাজার ৯৮৪টি পদ শূন্য রয়েছে। তিনি জানান, সরকারী অফিসগুলোতে শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সংস্থাসমূহের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরকারী কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৮ম, ৯ম, ও ১০-১২ গ্রেডের অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর পদে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ সংস্থার জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সেশনজট নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩/২৪ বছরে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করে থাকে। তিনি জানান, সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় ¯œাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করার পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর লাগলেও তা গণনা করা হয় না। মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ বছর হতে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে, ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের উর্ধে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনুর্ধ ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। তাই বয়স বাড়ানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের আপাতত নেই। সরকার দলীয় অপর সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী জানান, গত অর্থবছরে সরকারের ভিভিআইপি এবং ভিআইপিগণের জেলা সফরসহ বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনে মোটর এবং জলযানের জন্য গ্যাস ও জ্বালানি খাতে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অপচয় রোধে উপসচিব থেকে সিনিয়র সচিব কর্মকর্তাদের যানবাহন চলাচলের জন্য জ্বালানির পরিমাণ নির্ধারণ করা আছে।
×