ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ক্লিনিক বা হাসপাতালের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য লাশ আটকে রাখা যাবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২১ নভেম্বর ২০১৭

চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য লাশ আটকে রাখা যাবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোন ক্লিনিক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসচ্ছল ব্যক্তির লাশ আটকে রাখতে পারবে না। একই সঙ্গে ওই চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে একটি তহবিল গঠন করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে বাগেরহাটে পরকীয়ার জেরে বড় ভাই হত্যার দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ছোট ভাইয়ের দ- কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বড় ভাইয়ের স্ত্রীসহ দুজনের যাবজ্জীবন দ- বহাল রেখেছেন আদালত। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছন। চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে কোন ক্লিনিক বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসচ্ছল ব্যক্তির লাশ জিম্মি করে রাখার কোন সুযোগ নেই মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। রায়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে- চিকিৎসার খরচ পরিশোধে অক্ষমতার কারণে কোন ক্লিনিক বা হাসপাতাল মৃত ব্যক্তির লাশ জিম্মি করে রাখতে পারবে না। বিল পরিশোধে অক্ষম গরিব রোগীদের চিকিৎসার খরচ পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে একটি তহবিল গঠন করতে হবে। প্রথম নির্দেশনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে একটি সার্কুলার জারি করতে হবে। দেশে অনুমোদিত সব ক্লিনিক-হাসপাতালে যাতে ওই সার্কুলার পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সিটি হাসপাতাল থেকে ২০১২ সালের ৮ জুন সেই শিশুর লাশ হস্তান্তর না করা এবং অভিভাবকরা সন্তানের লাশ নিতে না পারার বিষয়টি অমানবিক; তাতে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে ওই হাসপাতালকে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। ২০১২ সালের ৮ জুন মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে অসচ্ছল এক ব্যক্তি তার সন্তানকে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে সন্তানটি মারা গেলে ২৬ হাজার টাকা বেশি বিল দাবি করে লাশ হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। পরে এই নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন মনজিল মোরসেদ। ভাই হত্যায় হাইকোর্টে ভাই-ভাবীর যাবজ্জীবন ॥ বাগেরহাটে পরকীয়ার জেরে বড় ভাই হত্যার দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ছোট ভাইয়ের দ- কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বড় ভাইয়ের স্ত্রীসহ দুজনের যাবজ্জীবন দ- বহাল রেখেছেন আদালত। সোমবার বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ড. মোঃ বশির উল্লাহ ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফজলুল হক ভূইয়া ও সাইদুল ইসলাম। মামলার বিবরণে জানা যায়, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হাজারী ২০০৮ সালের ২৩ আক্টোবর রাতে ঘরের সিঁধ কেটে মোয়াজ্জাম শেখের ছেলে এসকেন্দারকে জবাই করে হত্যা করে। এসকেন্দার শেখের ভাই মাহমুদ শেখ ও তার স্ত্রী পারভীন খাতুন পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকা- ঘটায়। এ ঘটনার পরদিন ২৪ আক্টোবর নিহতের বাবা মোয়াজ্জাম শেখ বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০১১ সালের ২৮ জুলাই বাগেরহাটের অতিরিক্তি জেলা দায়রা জজ মোঃ রেজাউল করিম মাহমুদ শেখকে মৃত্যুদ- এবং এসকেন্দারের স্ত্রী পারভীন খাতুন (২৯) ও অপর আসামি আসাদ তালুকদারকে (৩৫) যাবজ্জীবন দ- দেন। পরে ডেথ রেফারেন্সে আপীলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট সোমবার উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন।
×