স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে অসাধু সিন্ডিকেট। প্রকৌশল বিভাগের চরম অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণে প্রভাবশালী চক্র ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে ট্রেন চলাচল। এদিকে, প্রধান ও বিভাগীয় ভূমি অফিস একের পর এক অভিযান পরিচালনা করলেও ভূমি রক্ষা করতে পারছে না। ভূমিদস্যুরা রেল লাইন ঘেঁষেই নির্মাণ করেছে অবৈধ দোকানপাট ও বস্তিঘর। অথচ, রেল লাইনের উভয়দিকে ১০ ফুটের মধ্যে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ হলেও বন্ধ নেই দখল।
তবে বেশিরভাগ রেল লাইনকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কাঁচাবাজার, গুদামঘর, বিভিন্ন রাজনৈতিক সাইন বোর্ড সর্বস্ব সংগঠনের দফতর ও দোকানঘর গড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। এ ধরনের অনিয়ম বন্ধে ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের দুটি এস্টেট বিভাগ। গত ১৫ নবেম্বর চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাট এলাকায় ধুমঘাট ও চিনকী আস্তানা স্টেশন এলাকায় দেড়শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছে একটি অভিযান টিম। পাহাড়তলীর ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও রেলওয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত রেজার নেতৃত্বে একটি টিম ৫ ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে রেলের প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন প্রভাবশালী মহল এসব স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল। আবার রেলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ স্থাপনা নিজ দায়িত্বে উচ্ছেদের নোটিস দেয়া হলেও প্রকৌশল বিভাগকে ম্যানেজ করেই প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবৈধ দখলে রেখেছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক আমলে মন্ত্রী ও এমপির দোহাই দিয়ে এসব জায়গা দখলে বলে স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরও অভিযোগ রয়েছে চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন, কদমতলী, ষোলশহর স্টেশন, জানালীহাট স্টেশন, সল্টগোলা রেল ক্রসিং, ফৌজদারহাট লেভেল ক্রসিং, পাহাড়তলী সিডিএ মার্কেট রেলগেট, কৈবল্যধাম লেভেল ক্রসিংসহ নগরীসহ প্রায় ১৬টি রেল স্টেশন এলাকায় এ ধরনের অবৈধ স্থাপনা ও বাজার রয়েছে। অবৈধ দখলদার চক্রের অপচেষ্টার কারণে এ উচ্ছেদ অভিযান বছরের পর বছর বিলম্বিত হয়। একশ্রেণীর ভাসমান ব্যবসায়ীকে কেন্দ্র করে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তুলেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাণিজ্যের অন্যতম আখড়া। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের জানালীহাট স্টেশন এলাকায় রেল লাইনকে ঘিরে গড়ে ওঠা প্রায় আ্ড়ই শ’ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় গত বৃহস্পতিবার।
অভিযানে প্রায় ৮০ কোটি টাকা মূল্যের দেড় একর জায়গা উদ্ধার করেছে। কিন্তু প্রকৌশল বিভাগ কোন উদ্যোগ না নেয়ায় আবারও বেদখল হয়ে যাচ্ছে এই মূল্যবান ভূমি। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর দোহাজারী রুটের জানালীহাট স্টেশন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা ছিল। এ ব্যাপারে রেলের ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ইসরাত রেজা জানান, উচ্ছেদের আগে লিখিত, মৌখিক এমনকি মাইকিং করেও তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু তারা সরকারী দফতরের আদেশ না মানায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে। রেল লাইনের উভয় দিকে গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে স্থাপনা তৈরি করা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু ঐ এলাকায় অনেকটা রেল লাইন ঘেঁষেই তৈরি করা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। ফলে আমাদের বুলডোজারেরও অনেক সময় লেগেছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: