ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ

‘বসনিয়ার কসাই’ ম্লাদিচের বিচারের রায় বুধবার

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২০ নভেম্বর ২০১৭

‘বসনিয়ার কসাই’ ম্লাদিচের বিচারের রায় বুধবার

গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বুধবার বিচারের রায়ের মুখোমুখি রাতকো ম্লাদিচ সার্বদের রক্ষায় নিজেকে একজন ধর্মযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু তার বাহিনীর হাতে ব্যাপক গণহত্যার জন্য তাকে ‘বসনিয়ার কসাই’ আখ্যা দেয়া হয়েছে। নব্বইয়ের দশকের গৃহযুদ্ধে সার্বীয় বাহিনীর নিষ্ঠুর কমান্ডার ম্লাদিচ এক বর্বর পরিকল্পনা হাতে নেন। তা হল, বসনিয়ার বিশাল অঞ্চলকে নৃগোষ্ঠী ক্রোট ও মুসলিমমুক্ত করবেন। কেবল সার্বরাই একমাত্র থাকবে। খবর এএফপির। ষোল বছর পলাতক থাকার পর ২০১১ সালে তিনি গ্রেফতার হন। তখন তার শরীরের অবস্থা খুবই নাজুক। কিন্তু হেগে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের কাঠগড়ায় তার সেই ঔদ্ধত্য একটুও অনুজ্জ্বল হয়নি। ভগ্ন শরীরের ৭৪ বছর বয়সের বৃদ্ধ এখনও সার্বদের কাছে নায়ক হিসেবে রয়ে গেছেন। সাবেক বসনিয়া ও হারজেগোবিনার রাজধানী সারায়েভোতে ৪৪ মাস অবরোধের সময় গৃহযুদ্ধে নিহতদের পরিবার ও স্রেব্রেনিৎসায় আট হাজার মুসলিম হত্যার ঘটনায় তিনি চিরদিন অপরাধী বিবেচিত হবেন। সাংবাদিক জুলিয়ান বর্জার তার ‘কসাইয়ের বিচার’ নামের বইয়ে লিখেন, অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন সার্বদের ওপর তুর্কীদের গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে বসনীয় ছিটমহলে ম্লাদিচ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বইটি গত বছর প্রকাশিত হয়েছে। ম্লাদিচ কারাগারে আটক আতঙ্কিত মুসলিম নারীদের আশ্বস্ত করেন, তাদের প্রিয়জনরা ভাল আছেন। অথচ একই সময় তার সৈন্যরা পুরুষদের ধরে এনে এক জায়গায় করে তাদের হত্যা করে। বর্জার বলেন, ম্লাদিচ আট হাজার শিশু ও বয়স্ক মুসলিমদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তিনি গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের মাটিতে এমন নৃশংস হত্যাকা-ের ঘটনা আর ঘটেনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ম্লাদিচের ভাগ্যে কী ঘটে, তা তিনি বুধবার জানতে পারবেন। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ তার বিরুদ্ধে এগারো অভিযোগ রয়েছে। নিজের বিরুদ্ধে সব অপরাধ অস্বীকার করেছেন ম্লাদিচ। ২০১১ সালে তাকে যখন প্রথম বারের মতো আদালতে হাজির করা হয়, তখন তিনি বিচার কার্যক্রমকে ‘ঘৃণ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার দেশ ও মানুষের সুরক্ষা দিয়েছি। বসনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের বজিনোভিসি গ্রামে জন্ম নেয়া ম্লাদিচের রক্তপাত ও বিয়োগান্তক ঘটনার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্রোয়েশিয়ার উশটাহা অঞ্চলে যুদ্ধে তার বাবার মৃত্যু হয়। বড় হয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং পদোন্নতি পেয়ে যুগোস্লাভিয়া সেনাবাহিনীর কর্নেল হন।
×