ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জিতল মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানের উত্তরসূরিরা

আফগান যুবাদের ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ২০ নভেম্বর ২০১৭

আফগান যুবাদের ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস গড়ল যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান যুবারা। অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপের চূড়ান্ত লড়াইয়ে শক্তিধর পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিল মোহাম্মদ নবী-রশিদ খানের উত্তরসূরিরা। কুয়ালালামপুরে স্বপ্ন পূরণের মঞ্চে নাভিদ ওবাইদবাহিনীর জয় ১৮৫ রানে! ৭ উইকেটে ২৪৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পর পাকিদের মাত্র ৬৩ রানে (২২.১ ওভার) অলআউট করে দিয়েছে আফগানিস্তান!! বড়দের এশিয়া কাপের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারানো, টি২০’র বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করা, আইসিসি থেকে টেস্টের মর্যাদা (দ্বিতীয় স্তর) পাওয়াÑ ঝড়ের বেগে আফগান ক্রিকেটের উঠে আসারই উদাহরণ, এই যুবারা তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করলেন। সেটিও নিকটতম প্রতিবেশী সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের লজ্জায় ডুবিয়ে, যে পাকিস্তানী ক্রিকেটাররা নবী-শেহজাদ-রশিদ-ওবাইদদের আইডল। ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিকে পেছনে ফেলে আফগান যুবাদের এ সফল্য নিশ্চয়ই সোনার হরফে লেখা থাকবে। গ্রুপপর্বে পাকিস্তানকে ৫৭ রানে অলআউট করেছিল আফগানিস্তান। ফাইনালেও প্রায় একই চিত্র। শিরোপার লড়াইয়ে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি পাকিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে আফগানিস্তানের গড়া ২৪৮ রানের জবাব দিতে নেমে উপমহাদেশীয় ক্রিকেটের পরাশক্তি দেশটির যুবারা গুঁড়িয়ে গেছে মাত্র ৬৩ রানে। ১৮৫ রানের বিরাট জয়ে ক্রিকেটে নিজেদের আগমনী বার্তাটা উচ্চৈঃস্বরেই জানিয়ে রাখল আফগানরা। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দৃঢ়তার সঙ্গে খেলেছেন তরুণ আফগানিন্তান ব্যাটসম্যানরা। ৬১ রানের ওপেনিং জুটির পর দারুণ এক সেঞ্চুরি উপহার দেন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ইকরাম ফাইজি। ১১৩ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনিই। দুই ওপেনার রহমতউল্লাহ গুবরাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের যথাক্রমে ৪০ ও ৩৬ রানের ইনিংস দুটিও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত, কিন্তু মিডলঅর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সেটি হয়নি। তবে ইতিহাস গড়া দিনে সেই আক্ষেপটা পুরোপুরি ভুলিয়ে দেন আফগান বোলাররা। ২৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানরা ছিলেন শুরু থেকেই দিশেহারা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে তাদের ইনিংস শেষ হয় মাত্র ৬৩ রানেই! আফগানিস্তানের অফস্পিনার মুজিব জাদরান ১৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট! লেগস্পিনার কাইস আহমেদের শিকার সংখ্যা ৩। মূলত এই দুই স্পিনার মিলেই পাকিস্তানকে শেষ করে দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে বৃষ্টি-দুর্ভাগ্যে পাকিস্তানের কাছে হারতে হয় বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের ২৭৪ রানের জবাবে পাকিস্তান ৩৯ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৯ রান তুলতেই বৃষ্টি নামে। এরপর আর খেলা না হওয়ায় অভিনব ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে পাকিস্তানকে ২ রানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়! প্রতিযোগিতার গ্রুপপর্বে ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পা রেখেছিল বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দল। উল্লেখ্য, ২০১২ প্রথম অনুর্ধ-১৯ এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। পরের দু’বার টানা শিরোপা জেতে ভারত (২০১৪, ২০১৬)। আর চতুর্থ আসরে এসে প্রথমবার শেষ চারে উঠেই বাজিমাত করল আফগানিস্তান। তাও পাকিস্তানকে এভাবে লজ্জায় ডুবিয়ে!
×