ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপার আশা ছেড়ে দিয়েছেন রোনাল্ডো-জিদান

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২০ নভেম্বর ২০১৭

শিরোপার আশা ছেড়ে দিয়েছেন রোনাল্ডো-জিদান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক সাধনার পর গত মৌসুমে স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধার করে রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু এক মৌসুম পরই সেই মুকুট হারানোর শঙ্কায় পড়ে গেছে গ্যালাক্টিকোরা। কেননা লীগের প্রথম ১২ ম্যাচ শেষেই যে শীর্ষে থাকা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার চেয়ে ১০ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। শনিবার রাতে মাদ্রিদ ডার্বিতে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে অতিথি রিয়াল। আরেক ম্যাচে লুইস সুয়ারেজের জোড়া গোলে ভর করে বার্সিলোনা ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে লেগানেসকে। আর তাতেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর পয়েন্টের ফারাক আরও বেড়েছে। বর্তমানে ১২টি করে ম্যাচ শেষে শীর্ষে থাকা বার্সার পয়েন্ট ৩৪। সেখানে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রিয়াল। ১১ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ভ্যালেন্সিয়া। এখনও লীগের প্রথমপর্বের সাতটি করে ম্যাচ বাকি। আর এখনই পয়েন্টের ব্যবধান দশ। শিরোপা যে রিয়াল হারাতে বসেছে সেটা শুধূ ভক্ত-সমর্থকরাই নন, বুঝতে পারছেন দলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও কোচ জিনেদিন জিদান। মাদ্রিদ ডার্বি শেষে নাকি দু’জনের কণ্ঠেই ঝরেছে হতাশার সুর। তাদের কথার সুরে মনে হচ্ছে এখন আর শিরোপার বিষয়টি তাদের হাতে নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা যদি হোঁচট খায় তবেই সুযোগ আসবে রামোস, মার্সেলো, কাসেমিরোদের। এ্যাটলেটিকোর নতুন মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপোলিটানোতে স্বাগতিকদের শুরুটা ভালই হয়। অন্যদিকে রিয়ালের প্রথম সুযোগটা আসে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে। কিন্তু জুয়ানফ্র্যানের পাস থেকে রোনাল্ডোর পা ঘুরে আসা বল থেকে লুকা মডরিচ কোন সুখবর দিতে পারেননি। সফরকারী মাদ্রিদ ধীরে ধীরে বলের পজিশন নিজেদের অধীনে নেয়। কিন্তু কোনকিছুতেই গোলের দেখা পায়নি। রোনাল্ডোর পাস থেকে টনি ক্রুসের শট এ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে আটকে দেন। সার্জিও রামোসের নাকের হাড়ে চিড় ধরায় বিরতির পর তার পরিবর্তে মাঠে নামে নাচো। এবারের মৌসুমে আক্রমণ ভাগে রিয়ালের ব্যর্থতার পিছনে রোনাল্ডোকে অনেকাংশেই দায়ী করা হচ্ছে। এই ম্যাচের প্রথমার্ধে মডরিচের পাস থেকে সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন এই পর্তুগীজ তারকা। অন্যদিকে আরেকটি ব্যর্থ দিন কাটানো এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যানকে ম্যাচ শেষের ১৫ মিনিট আগে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন কোচ দিয়াগো সিমিওনে। অনেকটা বিরক্তির সুরেই এই ফ্রেঞ্চম্যান সম্পর্কে ম্যাচ শেষে কোচ সিমিওনে বলেন, কেউ যদি আমার পরিবারে থাকে তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি তার সঙ্গে থাকব। এবারের মৌসুমে দুই মাদ্রিদই গোলের সামনে গিয়ে নিজেদের ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই এ্যাটলেটিকোকে দারুণ একটি গোলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন এঞ্জেল কোরেয়া। ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান বলেন, আমাদের আজ গোলের অভাব ছিল। কিন্তু তার বাইরে আমি মনে করি খেলোয়াড়রা ভালই খেলেছে, এর থেকে আরও বেশি তাদের প্রাপ্য ছিল। ১০ পয়েন্ট অনেক বেশি। কিন্তু আমি নিশ্চিত এর পরিবর্তন হবেই। কারণ বার্সাও সবসময়ই জিতবে না। আমরাও ভালভাবেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। বার্সিলোনা খারাপ করলে তার দল একটা সময় এগিয়ে যাবে, বিশ্বাস করেন জিনেদিন জিদান। এ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ম্যাচে ড্র করলেও রিয়াল খারাপ খেলেনি, দাবি জিদানের। এ সম্পর্কে রিয়াল কোচ বলেন, আমাদের পারফর্মেন্স ভাল ছিল। আমরা কেবল গোলটাই মিস করেছি। খেলোয়াড়দের জন্য খারাপ লাগছে। তারা আরও বেশি কিছুর দাবিদার ছিল। আমার আসলে তাদের নিয়ে সমালোচনা করার উপায় নেই। তবে এই ফরাসী কিংবদন্তি স্বীকার করেন, শিরোপা ধরে রাখতে হলে পরের ম্যাচগুলোতে তাদের ভাল করতে হবে। এ্যাটলেটিকো কোচ সিমিওনে বলেন, প্রথম ২৫ মিনিটে বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে আমাদের খেলা দেখলেই বোঝা যাবে আমরা কেমন খেলেছি। বার্সিলোনার জয়ের পরে রিয়ালও জয়ের জন্য মরিয়া ছিল। গোল করতে গিয়ে আজ কিছুটা কষ্ট হয়েছে। কোরেয়ার ওই গোলটি হয়ে গেলে ম্যাচের ভাগ্য হয়তো বা পরিবর্তন হতে পারতো। উল্লেখ্য, কোরেয়ার একটি গোল বাতিল করেন রেফারি। অন্যদিকে সরাসরি রোনাল্ডোর বক্তব্য পাওয়া না গেলেও জানা গেছে, তিনি নাকি সতীর্থদের জানিয়েছেন লা লিগার শিরোপা এবার সম্ভব নয়! আরেক ম্যাচে লেগানেসের বিরুদ্ধে সুয়ারেজ গোল দু’টি করেন ম্যাচের ২৮ ও ৬০ মিনিটে। কাতালানদের হয়ে অপর গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার পাউলিনহো। তিনি গোলটি করেন ৯০ মিনিটে। ম্যাচ শেষে সুয়ারেজ বলেছেন, দল জিতেছে এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ম্যাচে সবসময়ই আমরা আমাদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু মাঝে মাঝে সেটা সম্ভব হয় না।
×