ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর অঞ্চলে এবারও গম চাষ নিষেধ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২০ নভেম্বর ২০১৭

যশোর অঞ্চলে এবারও গম চাষ নিষেধ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ব্লাস্ট সংক্রমণের আশঙ্কায় যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি জেলার কৃষকদের এবারও গম চাষ না করতে পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। গম চাষে কৃষকদের শুধু নিরুৎসাহিতই করছে না সংশ্লিষ্টরা, চলতি রবি মৌসুমে গমের বীজ বিতরণ থেকেও বিরত রয়েছে বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন)। আর এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও মেহেরপুর জেলায় এবার গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে না। এদিকে গমের বদলে ভুট্টা, মসুর, সরিষা ও শীতকালীন সবজি চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। ব্লাস্টের সংক্রমণে গম চাষে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে এসব ফসল করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে দেশে সর্বপ্রথম গমে ব্লাস্টের সংক্রমণ হয় যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায়। এসব জেলার ১৪ হাজার ৮৬৩ হেক্টর গমের ক্ষেত ব্লাস্ট নামক ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬৫৭ হেক্টর জমির গম ব্লাস্ট সংক্রমণে পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে যায়। এর পরের বছর এসব জেলায় গমের আবাদ অনেক কমে যায়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও মেহেরপুর জেলায় ৫৭ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়। পরবর্তী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আবাদ এক তৃতীয়াংশে নেমে আসে। ওই অর্থবছরে এসব জেলায় ১৮ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যান বিশেষজ্ঞ ফয়েজ উদ্দীন জানান, গমের ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত রোগ। গমের শীষ বের হওয়া থেকে ফুল ফোটার সময়ে আবহাওয়া স্যাঁতসেঁতে ও গরম তুলনামূলক বেশি থাকলে এ রোগের আক্রমণ ঘটে। প্রধানত গমের শীষে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। শীষের আক্রান্ত স্থানে কালো দাগ পড়ে এবং আক্রান্ত স্থানের উপরের অংশ সাদা হয়ে যায়। আর শীষের গোড়া আক্রান্ত হলে শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। আক্রান্ত শীষের দানা অপুষ্ট হয় ও কুঁচকে যায়। বাতাসের মাধ্যমে ও আক্রান্ত বীজের মাধ্যমে ব্লাস্ট রোগ ছড়ায়। এজন্য ব্লাস্ট আক্রান্ত জমি থেকে বীজ গম সংগ্রহ করা যাবে না বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক চন্ডী দাস কুন্ডু জানান, গম চাষ করে ব্লাস্ট সংক্রমণের কারণে কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য চাষীদের সরিষা, মসুর ভুট্টাসহ শীতকালীন ফসল চাষের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। দুই থেকে তিন বছর কৃষক যদি গমের বদলে অন্য ফসল করে তাহলে মাঠ থেকে ব্লাস্টের জীবাণু দূর হয়ে যাবে। কৃষকরা যাতে গম চাষ থেকে দূরে থাকেন সেজন্য বিএডিসি চলতি মৌসুমে যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর এলাকায় বীজ বিতরণ করছে না।
×