ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গলাচিপা হাসপাতালে অজ্ঞাত জীবাণু আতঙ্ক

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২০ নভেম্বর ২০১৭

গলাচিপা হাসপাতালে অজ্ঞাত জীবাণু আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৫০ শষ্যা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ‘অজ্ঞাত জীবাণু’র সংক্রমণ ঘটেছে। জরুরী বিভাগে যারা অস্ত্রোপচারের চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এতে রোগীসহ হাসপাতালে কর্মরতদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। রোগীর সংখ্যা কমে চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় শনিবার পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডাঃ শাহ মোজাহিদুল ইসলাম জরুরী বিভাগসহ পুরো হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি জরুরী বিভাগ পুরনো ভবন থেকে নতুন ভবনে স্থানান্তর করে সমস্যার আপাত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আইইডিসিআরর বিশেষজ্ঞ টিমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত মাস দেড়েক ধরে জরুরী বিভাগে এ সমস্যা চলছে। জরুরী বিভাগে যাদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গলাচিপা শহরের হাসপাতাল রোডের নেপাল সাহার জেএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে বন্ধন সাহা প্রাইভেট পড়তে গিয়ে শিক্ষকের বাসার সিলিংফ্যানে মাথায় আঘাত পায়। ওই দিনই জরুরী বিভাগে তার মাথায় সেলাই দেয়া হয়। কিন্তু এতে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রথমে তাকে বরিশাল ও পরে ঢাকায় নেয়া হয় এবং এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় বন্ধন সাহার অভিভাবকরা চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসাকে দায়ী করেন। অভিভাবকের এ অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসকরা জানান, শুধু বন্ধন নয়, এ সময়ের মধ্যে জরুরী বিভাগে যাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, তাদের সমস্যা আরও গুরুতর হয়েছে। এমনকি হাসপাতালে ওয়ার্ডবয় আবদুল মোতালেব বাঁ হাতে এ্যালার্জিজনিত সমস্যার জন্য জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নেন। এতে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে তার পুরো বাঁ হাতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে জীবনহানির উপক্রম হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের আরও একাধিক কর্মচারী এ অবস্থায় পড়েছেন। জরুরী বিভাগের এ সমস্যা প্রসঙ্গে গলাচিপা হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মোঃ ইমাম সিকদার বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট ধারণা জরুরী বিভাগে ‘অজ্ঞাত জীবাণুর’ সংক্রমণ হয়েছে। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার জরুরী বিভাগ সংক্রমণ মুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জরুরী বিভাগে গত দেড় মাসে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের প্রায় সকলকেই পরবর্তীতে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. শাহ মোজাহিদুল ইসলাম ইসলাম শনিবার জরুরী বিভাগসহ হাসপাতালের সবগুলো ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ পুরনো ভবন থেকে সরিয়ে নতুন ভবনে অস্থায়ীভাবে স্থানাস্তর করে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এ সময় সিভিল সার্জন ডাঃ শাহ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এক সপ্তাহ সময় দেন। আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনা ইনস্টিটিউট অব ইপিডেমোলজি ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড রিসার্স (আইইডিসিআর) কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ জরুরী বিভাগের জন্য ক্লোটেক সলিউশন দিয়ে কক্ষ ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করার নির্দেশনা দিয়েছে। যদি এতেও কোন কাজ না হয় তাহলে পরবর্তীতে আইইডিসিআর এর বিশেষজ্ঞ টিম সরেজমিনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।
×