ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

২৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় রাবি ছাত্রীকে অপহরণ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২০ নভেম্বর ২০১৭

২৫ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় রাবি ছাত্রীকে অপহরণ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ জোর করে তালাকনামা প্রত্যাহারের মাধ্যমে নতুন করে সংসার করার আশায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছিল। ছাত্রীটির পাঠানো তালাকনামা প্রত্যাহারের জন্যই অপহরণের পর তাকে ঢাকার একটি কাজী অফিসেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকেই ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। রবিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মাহবুবর রহমান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, কাজী অফিস থেকে ওই ছাত্রীর সাবেক স্বামী সোহেল রানা ও জাহিদুল ইসলাম নামে মাইক্রোবাসের এক চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সোহেল রানার বাবাকেও গ্রেফতার করা হয়। তার নাম জয়নাল আবেদীন। তাকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ঢাকা থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অপহৃত ছাত্রীর বাবা জানান, বিয়ের ১৬ দিনের মাথায় সোহেল রানা ২৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে কয়েক দফায় দুই পরিবারের মধ্যে দেন দরবার হয়। সর্বশেষ সোহেলের পরিবারের সদস্যরা জানায়, একটি হায়েস্ট মাইক্রোবাস কিনে দিতে হবে। এ ছাড়া সোহেলকে মানানো যাচ্ছে না। এরপর তারা বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অপহৃত ছাত্রীর বাবা আরও জানান, সোহেল রানা মাদকাসক্ত। যৌতুকের টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তার মেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকে সোহেল রানা মোবাইলে তার মেয়েকে বিরক্ত করত এবং হুমকি দিত। এ বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদেরও জানানো হয়েছিল বলে জানান তিনি। পুলিশ কমিশনার জানান, রাবির বাংলা বিভাগের শেষবর্ষের ওই শিক্ষার্থী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজি এলাকার আমজাদ হোসেনের মেয়ে। গত ডিসেম্বরে সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সম্প্রতি তিনি তার স্বামীর কাছে তালাকনামা পাঠিয়েছেন। তালাকের বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ অবস্থায় তালাকনামা প্রত্যাহারের মাধ্যমে নতুন করে সংসার শুরুর আশায় তাকে অপহরণ করা হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন সোহেল রানা। পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান জানান, ওই ছাত্রীসহ গ্রেফতার সবাইকেই শনিবার রাতে রাজশাহী নিয়ে আসা হয়। রবিবার বিকেলে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিন আদালতে ওই ছাত্রীর জবানবন্দীও রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়েছে।
×