ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি আনন্দের ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি আনন্দের ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে বিএনপির বোধোদয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালী জাতিকে কীভাবে উজ্জীবিত করেছিল, তা তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান তার এক লেখায়ও লিখে গেলেও তাঁর গড়া দল বিএনপি বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকার করে না। তবে দীর্ঘদিন পর হলেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্বীকৃতি উদযাপনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশের অমত না থাকার কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি আনন্দের। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তোষামোদী ছেড়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যবস্থা করুন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে খুব বড় সমাবেশ হচ্ছে। এই সমাবেশকে বলা হচ্ছে এটা কোন রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, এটা হচ্ছে একটা রাষ্ট্রীয় নাগরিক সমাবেশ। এটা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, ইউনেস্কো সেটা তালিকাভুক্তি করেছে, সেজন্য এই সমাবেশ। তো ভাল কথা। আমরা তো মনে করি যে, এটা আনন্দের কথা। তবে প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজকে চিঠি দেয়া হয়েছে না আসলে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না। ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়েছে না আসলে পাঁচ দিনের বেতন কাটা যাবে। সকালে দেখে এসেছি, বড় বড় বাসে স্কুলের বাচ্চাদের তোলা হচ্ছে। সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, একদিকে আপনারা সমস্ত মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিচ্ছেন। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢেকে দিচ্ছেন। অন্যদিকে মানুষকে প্রতারিত করছেন। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় অথচ নাগরিকদের সব স্বাধীনতা হরণ করে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন ক্ষমতায় আছেন কিছু দিনের জন্য। খুব আনন্দিত হচ্ছেন, বগল বাজাচ্ছেন যে আমরা তো ক্ষমতায় এসে যাব, কোন চিন্তা নেই, বিএনপি না আসলে না আসবে। কিন্তু বিএনপি না আসলে নির্বাচন হবে না। এদেশের মানুষ অবশ্যই আগামী নির্বাচনে সমস্ত দলকে দেখতে চায়। আপনারা মানুষের কাছে যান, তাদের হৃদয়ের ভাষাটা বুঝুন, চোখের ভাষাটা বুঝুন, দেয়ালের লিখনটা পড়ুন, দেখুন তারা কী বলছে। তারা সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন সম্ভব যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তোষামোদী ছেড়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিন। আপনি তোষামোদী করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে চান। তাই সংলাপকালে জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করে বিএনপিকে খুব খুশি করার চেষ্টা করছেন। আবার শেখ মুজিবুর রহমানকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বলে আওয়ামী লীগকেও খুশি করেছেন। ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কাউকে তোষামোদী করার তো দরকার নেই। কথা বলে লাভ হবে না কাজ দেখান। কাজের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আপনারা নিরপেক্ষতা প্রমাণ করুন। শুধু নির্বাচনের আগে ৯০ দিন নিরপেক্ষ থাকবেন তা হবে না। ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করুন। তবে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে ভোট হলে সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না। তাহলে সব কিছু আওয়ামী লীগ করে যাবে। তারা মহাসুখে হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনী প্রচার চালাবে। আর আমরা একটা মিটিংও করতে পারব না, একটা সত্য কথাও বলতে পারব না। আমরা কোর্টের বারান্দায় ঘুরব, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সপ্তাহে সপ্তাহে হাজিরা দিতে হবে, আমাদের সব নেতাকর্মীদের হাজিরা দিতে হবে- এভাবে নির্বাচন হবে না। সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। আর বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার এবং ভোটের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি অংশ না নিলে আগামীতে নির্বাচন হবে না। ফখরুল বলেন, আমরা ভুলে যাই যে মওলানা আব্দুল খান ভাসানীই প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম পাকিস্তানকে আসসালামু আলাইকুম বলেছিলেন। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর যখন পাকিস্তানের কেউ দেখতে আসেনি, তখন তিনি পল্টন ময়দানে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন ওরা কেউ দেখতে আসেনি। আসসালামু আলাইকুম পাকিস্তান, আমরা আর আপনাদের সঙ্গে নেই। তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী তার সারাটা জীবন মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। আজকে আমরা তা স্বীকার করি না। ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী জাকারিয়া খান চৌধুরী, নুর মোহাম্মদ খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, মেহেদি আহমেদ রুমী, প্রয়াত ন্যাপ নেতা মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে ন্যান্সি রহমার, ভাসানী স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুল হুদা প্রমুখ। নৃত্যশিল্পী ঝুনুকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ফখরুল ॥ অসুস্থ নৃত্যশিল্পী রাহিজা খানম ঝুনুকে ধানম-ির ল্যাবএইড হাসপাতালে গেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার সকালে তিনি হাসপাতালে গিয়ে রাহিজা খানম ঝুনুর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। উল্লেখ্য, ঝুনু উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, জাসাস সহ-সভাপতি শায়রুল কবির খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মৃত্যু ঘটেছে- মওদুদ ॥ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের মাধ্যমে দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে তারেক রহমানের ৫২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
×