ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

রাজশাহীকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস। রানার্সআপ রাজশাহী কিংস। চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপের মধ্যকার শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচ হয়। গত আসরের ফাইনালে যেমন রাজশাহীকে হারায় ঢাকা, তেমনি এবারও রাজশাহীকে হারিয়ে দেয় ঢাকা। ৬৮ রানে হারিয়ে দেয়। এভিন লুইস, কাইরন পোলার্ডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর শহীদ আফ্রিদি ও আবু হায়দার রনির অসাধারণ বোলিংয়ে এমন জয় মিলে ঢাকার। পয়েন্ট তালিকায় এককভাবে শীর্ষস্থানেও উঠে যায় ঢাকা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে টস জিতে রাজশাহী আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ঢাকা বিশাল রান গড়ে। ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ২০১ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যানই ঢাকাকে এতদূর নিয়ে আসেন। শুরুতে এভিন লুইসের (৬৪) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর শেষে কাইরন পোলার্ডের (৫২*) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ’শ রানের বেশি স্কোরবোর্ডে যোগ করে ঢাকা। হোসেন আলী ৩ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে আফ্রিদির (৪/২৬) স্পিন ঘূর্ণি ও রনির (৩/১১) গতির সামনে পড়ে ১৮.২ ওভারে ১৩৩ রান করতেই অলআউট হয় রাজশাহী। রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা অবশ্য শুরু থেকেই ছন্নছাড়া হয়ে পড়েন। ১১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর মুমিনুল হক ও জাকির হাসান মিলে দলকে ৫০ রানের উর্ধে নিয়ে যান। ৬০ রান হতেই এরপর আফ্রিদির বোলিং ঝলক মিলে। মুমিনুলকে (১৬) আউট করে দেন। আর ১১ রান স্কোরবোর্ডে যোগ হতেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা জাকিরকেও (৩৬) সাজঘরে পাঠান আফ্রিদি। ১ রান যোগ হতেই যখন মুশফিকুর রহীমকেও আউট করে দেন আফ্রিদি তখন যেন রাজশাহীর হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় রাজশাহী। কখন ম্যাচটি শেষ হবে সেই অপেক্ষা যেন থাকে। শুরুর ১০ ওভারে ৭২ রান করে রাজশাহী। ৫০ বলে আরও ৬১ রান করে রাজশাহী। তবে হারায় আরও ৫ উইকেট। অলআউট হয়ে যায়। ম্যাচও হার হয় বড় ব্যবধানেই। আফ্রিদি এদিন ব্যাট হাতে কিছু করে দেখাতে না পারলেও বল হাতে ঠিকই ঝলক দেখান। ৪ উইকেট তুলে নেন। আফ্রিদির বোলিং চমকেই রাজশাহীকে দ্রুতই অলআউট করে দেয়া গেছে। আবু হায়দার রনিও দুর্দান্ত বোলিং করেন। ৩ উইকেট শিকার করেন। দুই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান লুইস ও শহীদ আফ্রিদি ওপেনিংয়ে নেমেই ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে থাকেন। আফ্রিদি রান নিয়ে লুইসকে ব্যাট করার সুযোগ দেন। বাউন্ডারির পর বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন লুইস। দেখতে দেখতে ৪ ওভারেই ৫৩ রান হয়ে যায়। এমন সময় আফ্রিদি (১৫) আউট হয়ে যান। কিন্তু লুইস তার ব্যাটিং ঝলক ঠিকই বজায় রাখেন। ৭৫ রানে জহুরুল ইসলাম অমিও (১৩) সাজঘরে ফেরেন। ১০ ওভারেই ৯৯ রান হয়ে যায় ঢাকার। এমন সময় গিয়ে লুইস আউট হয়ে যান। ৩৮ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ রান করে আউট হন লুইস। এরপর যেন রানের গতি একটু কমে যায়। উইকেটও পড়তে থাকে। ৯৯ রানে গিয়ে নাদিফ চৌধুরীও আউট হন। ১৪তম ওভারে ১২৪ রানে গিয়ে সাকিব আল হাসানও (১১) সাজঘরে ফিরেন। স্কোরবোর্ড তখন যেন একটু দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু এরপর পোলার্ড ও কুমার সাঙ্গাকারা মিলে আবার রানে গতি এনে দেন। দুইজন মিলে মুহূর্তেই দলকে ১৫০ রানে নিয়ে যান। ততক্ষণে জয় পাওয়ার মতো রান হয়ে যায়। ২০তম ওভারের প্রথম বলে ১৮৬ রানে সাঙ্গাকারা (২৮) আউট হওয়ার পর পোলার্ড দলকে ২০১ রানে নিয়ে যান। ২০ রানের আগে একবার ও ৩০ রানের আগে আরেকবার ‘নতুন জীবন’ পাওয়া পোলার্ড ব্যাটিং ঝড় তোলেন। ২৫ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৫২ রান করেন। দলের স্কোরবোর্ডে বিশাল রানও যোগ করায় বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তাতে শেষ পর্যন্ত জয়ও মিলে। প্রথম ১০ ওভারে ৯৯ রান হয়েছিল। পরের ১০ ওভারে ১০২ রান হয়। শেষ ৮ ওভারেই হয় ৯৫ রান। এই জয়ে ঢাকা ৬ ম্যাচে চার জয়, এক হার ও এক ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানেও এককভাবে জায়গা করে নেয়। ঢাকা শুধু নিজেদের প্রথম ম্যাচটি হারে। এরপর টানা তিন ম্যাচে জয় পায়। পঞ্চম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। ষষ্ঠ ম্যাচে এসে আবারও জয় তুলে নেয় ঢাকা। দুর্দান্ত ফর্মে আছে ঢাকা। স্কোর ॥ ঢাকা-রাজশাহী ম্যাচ ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস ২০১/৭; ২০ ওভার (লুইস ৬৫, পোলার্ড ৫২*, সাঙ্গাকারা ২৮, আফ্রিদি ১৫; হোসেন ৩/৩৮)। রাজশাহী কিংস ইনিংস ১৩৩/১০; ১৮.২ ওভার (জাকির ৩৬, সামি ১৯, মুমিনুল ১৬, মিরাজ ১০; আফ্রিদি ৪/২৬, রনি ৩/১১)। ফল ॥ ঢাকা ডায়নামাইটস ৬৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ এভিন লুইস (ঢাকা ডায়নামাইটস)।
×