ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জমি বিক্রির টাকায় বিডি ওয়েল্ডিংয়ের মুনাফা

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

জমি বিক্রির টাকায় বিডি ওয়েল্ডিংয়ের মুনাফা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেড় বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকলেও ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোডস লিমিটেড। তবে আগের মতোই এবারও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোন লভ্যাংশ দিতে পারেনি প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এর শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৯৫ পয়সা। কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উৎপাদন বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রামের জমি বিক্রির অর্থে মুনাফায় ফিরেছে বিডি ওয়েল্ডিং। কারখানার জমি বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত ৪২ কোটি টাকায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও ঢাকায় নতুন কারখানার জন্য নতুন জমি কেনার পর কিছু অর্থ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে আয় হিসেবে যোগ হয়েছে। এ অর্থেই পরিচালন ব্যয় মিটিয়ে বছর শেষে মুনাফা দেখাতে সক্ষম হয়েছে বিডি ওয়েল্ডিং। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৯৫ পয়সা। যদিও আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩ টাকা ১৩ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ার প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪ পয়সা। এদিকে সর্বশেষ হিসাব বছরের জন্য আগের মতোই কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি কোম্পানির কর্মকর্তারা। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য এজেন্ডা বাস্তবায়নে আগামী ২৭ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ ঘোষণা করেছে কোম্পানি। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ ডিসেম্বর। জানা গেছে, চট্টগ্রামের কারখানার জমি বিক্রি করার পর এরই মধ্যে ঢাকার ধামরাইয়ে জমি কিনে নতুন করে কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে বিডি ওয়েল্ডিং। চট্টগ্রামের কারখানার যন্ত্রপাতিও সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ শেষে আগামী এক বছরের মধ্যেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার আশা করছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা। প্রসঙ্গত, লোকসান ও ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার একটি দুষ্টচক্রে আটকে গিয়েছিল ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোড রড ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস উৎপাদক বিডি ওয়েল্ডিং। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) ঋণখেলাপি হিসেবে কোম্পানিটির নাম উঠে আসে। এ কারণে অন্য কোন ব্যাংকের কাছ থেকেও ঋণ পাচ্ছিল না তারা। এক সময় কাঁচামাল আমদানি করলেও ব্যাংকের সমর্থন না পাওয়ায় এক পর্যায়ে স্থানীয় আমদানিকারকদের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে কাঁচামাল কিনে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছিল কোম্পানিটি। বছরের পর বছর প্রতিযোগীদের কাছে বাজার হারিয়ে ২০১৫ সালে এসে লোকসানে পড়ে তারা। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য চট্টগ্রামস্থ কারখানার ২৪৯ ডেসিমাল বন্ধকী জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানির পর্ষদ। চলতি বছরের জুনে বিএসআরএম গ্রুপের কাছে জমিটি ৪২ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেয় কোম্পানি। জমি বিক্রির টাকা থেকে সাউথইস্ট ব্যাংকের ২২ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করা হয়। আর অবশিষ্ট টাকা জমি ক্রয় ও সেখানে কারখানা স্থাপনে ব্যয়ের ঘোষণা দেয় কোম্পানি।
×