ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চতুর্থ স্ত্রীকেও বেধড়ক মারধর করে বাড়িছাড়া করলেন কথিত পীর

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

চতুর্থ স্ত্রীকেও বেধড়ক মারধর করে বাড়িছাড়া করলেন কথিত পীর

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৭ নবেম্বর ॥ এবার চার নম্বর স্ত্রী চার সন্তানের জননী আছমা বেগমকে বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে স্বামী মোঃ আলতাপ হোসেন ওরফে মিন্টু হুজুর। বাড়ি থেকে মারতে মারতে পড়শি শহীদুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফের চুলের মুঠি ধরে ধানক্ষেতে ফেলে পেটানো হয়। কিল-ঘুষি-লাথির আঘাত ছিল নির্মম। এমনকি ঘরে এনে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এ পর্যায়ে অর্ধচেতন অবস্থায় পড়ে থাকে সে। একদিন পরে অসহায় আছমাকে তার দরিদ্র বাবা স্বজনদের সহায়তায় উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় স্বামী আলতাপ চার সন্তানকেও সঙ্গে নিতে দেয়নি। কাকুতিমিনতি করেছিল ছোট্ট একমাত্র মেয়ে চার বছরের ইনাকে দেয়ার, তাও দেয়া হয়নি। এখন শ্রমজীবী বাবা ইসমাইল হোসেনের ঘাড়ে চিকিৎসাসহ সকল বোঝা চেপে বসেছে। আর অসহায় আছমা হাসপাতালের শয্যায় চোখের পানি ঝরাচ্ছে। বালিয়াতলী ইউনিয়নের দীঘর বালিয়ালী গ্রামের আলতাপ হোসেনের সঙ্গে চাকামইয়ার আছমার বিয়ে হয় অন্তত একযুগ আগে। আছমা আরও জানান, এর আগেও আলতাপ হোসেন ওরফে মিন্টু হুজুর তিনটি বিয়ে করেছে। আছমা ছিল তার চতুর্থ স্ত্রী। একেক করে সবাইকে মারধর করে সন্তানসহ সংসারছাড়া করেছে। এরপর পঞ্চম স্ত্রী মরিয়মকেও এক ছেলেসহ মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এটি নাকি আলতাপ হোসেনের কৌশল। তিনি কোন স্ত্রীকে তালাকা দেন না। স্বেচ্ছায় স্ত্রীরা তালাক দিয়ে চলে যায়। অথবা বাড়িছাড়া। মোট নয় সন্তান আলতাপ হোসেনের। স্ত্রীর ভাষায়, তার স্বামী পীর সাহেব। হাজার হাজার মুরিদান বানায়। যার মধ্যে মহিলাও রয়েছে। অনৈতিক কাজের অভিযোগ করেন আছমা। এসব কাজে বাধা দেয়া এবং যৌতুক বাবদ টাকা, গরু, জিনিস (স্বর্ণালঙ্কার) না দেয়ায় তার ওপর এমন নির্দয় নির্যাতন বহুবার হয়েছে। অভিযুক্ত আলতাপ হোসেন বলেন, আমার বদ নসীব। রাগের মাথায় একটু মেরেছি, এটি সঠিক। কিন্তু যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। চতুর্থ স্ত্রী আছমা বেগম এমন কিছু কাজ করেছে যা এক কথায় অকারেন্স। বাকি চার স্ত্রীও নিজেদের ভুলের কারণে চলে গেছেন। ভুলের সংশোধন তারা করতে পারেনি। আমি কাউকে অযথা হয়রানি করিনি। এটি তার দুর্ভাগ্য বলেছেন তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, একবার এই স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে তিনি ডেকে শাসিয়ে দিয়েছেন।
×