ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ

৬৭ শতাংশ অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকার জড়িত

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

৬৭ শতাংশ অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকার জড়িত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ৬৭ শতাংশ অনলাইন ব্যাংকিং জালিয়াতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যাংকাররা জড়িত। আইটি বিশেষজ্ঞ এবং আইটি ফার্মের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যাংকাররা এ জালিয়াতি করে থাকেন। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ জালিয়াতি ব্যাংক কর্মকর্তা এবং আইটি বিশেষজ্ঞরা ঘটায়। শুধু ব্যাংক কর্মকর্তারা ১৮ শতাংশ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ৯ শতাংশ জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকার এবং আইটি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশ রয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ৫০টি ঘটনা বিশ্লেষণ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে বিআইবিএম। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটরিয়ামে ‘অল্টারনেটিভ ডেলিভারি চ্যানেল : অপরচুনিটিজ এ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব দ্য নিউ ব্যাংকিং ইনভারমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোঃ আবুল বশর। ৎপ্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর বলেন, অনলাইনভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু হওয়ায় ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় অনেকাংশে কমে গেছে। মাত্র দুই লাখ জনবল দিয়ে এতগুলো ব্যাংক কয়েক হাজার শাখা পরিচালনা করছে। অনলাইন ব্যাংকিং চালু না হলে এতগুলো শাখা পরিচালনায় ১০ লাখেরও বেশি জনবল প্রয়োজন হতো। ডেপুটি গবর্নর বলেন, বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুবই ভাল। কিন্তু এর অপব্যবহার হলে আর্থিক খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আনা হচ্ছে। ব্যাংকারদের প্রযুক্তির অপব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে আর্থিক খাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মাহবুবুর রহমান আলমের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং জালিয়াতির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে এটিএম এবং প্লাস্টিক কার্ডের মাধ্যমে। জালিয়াতি ঘটনার মধ্যে ২৫ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘটছে। এসিপিএস এবং ইএফটির মাধ্যমে ঘটছে ১৫ শতাংশ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে ১২ শতাংশ, ব্যাংকিং সফটওয়্যায়ের মাধ্যমে ৩ শতাংশ এবং সুইফটের মাধ্যমে ২ শতাংশ জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। ১০ টাকার হিসাব খোলার সুযোগ দিয়ে শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবাইকে যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি করা যায়, তার পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের আইটিতে দক্ষতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, বাংলাদেশের সব নাগরিককে ১০ টাকার হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
×