ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ড. আর এম দেবনাথ

চাল, গম, শাক-সবজি, ফলমূল ওষুধের হিসাব ॥ ব্যাখ্যা দরকার

প্রকাশিত: ০৩:৩১, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

চাল, গম, শাক-সবজি, ফলমূল ওষুধের হিসাব ॥ ব্যাখ্যা দরকার

বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (বিবিএস)-এর সাম্প্রতিক খানা জরিপের তথ্য নিয়ে বেশ বিপদে পড়েছি। ‘খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬’-এর তথ্য কয়েকদিন আগে খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছে। এতে সন্নিবেশিত হয়েছে বহু রকমের জরুরী তথ্য যা সরকার এবং বেসরকারী খাতের লোকদের কাজে লাগে। যেমন খানা জরিপে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে তার মধ্যে আছে : ধনী-গরিবের আয়, সার্বিক ও অতি দারিদ্র্যের চিত্র, দারিদ্র্য হ্রাসের গতি-প্রকৃতি, খাদ্যাভ্যাস, দরিদ্রতম অঞ্চলের তালিকা, আয়-বৈষম্য, ভোগ ব্যয় সূচক, পরিবারের আয়-ব্যয় সূচক, পাকাবাড়ি, বিশুদ্ধ পানীয় জল, প্রোটিন গ্রহণ, স্যানিটারি ব্যবস্থা ইত্যাদির ওপর তথ্য। বলা বাহুল্য, এসব তথ্য খুবই জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এসব যখন সরকারী তথ্য। কিন্তু মুশকিল হয়েছে এক জায়গায়। এই জরিপে যেসব তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে তার সঙ্গে বহুল ব্যবহৃত অতীত তথ্যের কোন মিল পাওয়া যায় না। অনেক তথ্য সাদা চোখে যা দেখা যায় তাকে অস্বীকার করে। অনেক তথ্য বাস্তবতাকে অস্বীকার করে। এসব তথ্য আমলে নিলে এতদিন যা লিখেছি, বিশ্বাস করেছি তার অনেকটাই ভিত্তিহীন হয়ে পড়ে। এখানেই হয়েছে বিপদ। যেমন ধরা যাক, দারিদ্র্যের তথ্য। আমরা বিশ্বাস করছি দারিদ্র্য হ্রাস পাচ্ছে এবং তা সার্বিকভাবেই সারাদেশে। কিন্তু ‘বিবিএস’ খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬ বলছে বেশ ভিন্ন কথা। দেখা যাচ্ছে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে কয়েকটি জেলার চিত্র বেশ ভাল। এগুলোর মধ্যে আছে : নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, গাজীপুর, ফরিদপুর, ঢাকা, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার ও সিলেট। সাদা চোখেও তা বোঝা যায়। আবার খুবই খারাপ চিত্র যেসব জেলায় সেগুলো হচ্ছে : কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, বান্দরবান, মাগুরা, কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি। এখানে গ-গোল লাগে অনেকভাবে। কুড়িগ্রাম দারিদ্র্যের চিত্র অনেকদিন থেকে। এখনও যদি সেখানে ৭১ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকে তাহলে প্রশ্ন সরকারের বিভিন্ন বিভাগ যে দাবি করছে তা সত্য হয় কীভাবে? ধরা যাক, দিনাজপুরের কথা। সেই দিনাজপুর এখন আর নেই। দৃশ্যত দিনাজপুরের কিছু উন্নতি হয়েছে। শিল্প-কারখানা হয়েছে, ব্যবসার ছোঁয়াও লেগেছে বলে শুনি। দিনাজপুরের মিহি চাল সারা বাংলাদেশের লোক খায়। দিনাজপুর চালের জায়গা। এক সময় ছিল বরিশালের বালাম, ময়মনসিংহের বিরুই চাল। আজ এ দুটো নেই। কিন্তু দিনাজপুর বিখ্যাত হয়েছে চালের জন্য। সেই দিনাজপুরের ৬৪ শতাংশ লোকই দারিদ্র্যসীমার নিচে- এটা ভাবা যায়। কিশোরগঞ্জ ঢাকার নিকটবর্তী জেলা। ভৈরব, কটিয়াদী ইত্যাদি জায়গা বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ। পাট হয় প্রচুর। মাছের জন্য কিশোরগঞ্জ বিখ্যাত। বিদেশী ‘রেমিটেন্স’ও কটিয়াদী ভালই করছে। অথচ তথ্যে দেখছি কিশোরগঞ্জের ৫৪ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে? এসব তথ্য বহু প্রশ্ন জাগায়। দারিদ্র্য দূরীকরণের সাফল্যকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। সাদা চোখে যা দেখা যায়, মানুষের যে বিশ্বাস ও ধারণা তার বিপরীতে অবস্থান করছে এসব তথ্য। আমি এই নিবন্ধ লেখার আগে বর্তমান ও সাবেক অনেক নীতিনির্ধারক পর্যায়ের লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছে এসব তথ্য বিস্ময়কর, চিন্তা জাগানিয়া। তারা বুঝতে পারছেন না কোথায় কী হচ্ছে? আমার নিজেরও তাই। দেখা যাচ্ছে সবাই আরও বেশি ভাবিত খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের তথ্যে। বিস্ময়কর সব তথ্য। খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬তে বলা হচ্ছে ‘চাল ভোগ’, মাথাপিছু চাল ভোগ (পার ক্যাপিটা রাইস কনজামশন) দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তবে কী ‘গম-ভোগ’, মাথাপিছু ‘গম ভোগ’ (পার ক্যাপিটা হুইট কনজামশন) বাড়ছে? না, তাও নয়। বরং গম খাওয়া আরও বেশি হারে হ্রাস পাচ্ছে। হতে পারে তাহলে মানুষ বেশি বেশি শাক-সবজি খাচ্ছে। না, তাও নয়। ২০১০ সালে যা খেত ২০১৬ সালেও মোটামুটি তাই। ফলমূল ও দুধ খাওয়া হ্রাস পেয়েছে বিগত ছয় বছরে। তা হলে, খারাপভাবে বলতে হয় মানুষ ‘ঘাস’, খাচ্ছে বেশি করে। এটা বলা তো শোভন নয়। এখানেই বিপদ। এতদিন চুটিয়ে লিখেছি, সরাসরি তথ্য দিয়েই লিখেছি, বাস্তবে দেখে দেখে লিখেছি যে, মানুষ, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত এমনকি গরিবরাও এখন বেশি বেশি আটা খাচ্ছে। রুটি খাচ্ছে। অথচ গম আমাদের বেশি হয় না, হওয়ার সম্ভাবনাও কম। অতএব বেশ পরিমাণ গম প্রতিবছর আমদানি করতে হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরেই গম আমদানি হয়েছে সাড়ে তেতাল্লিশ লাখ মেট্রিক টন। এখন প্রশ্ন, মাথাপিছু গম-রুটি ভোগ যদি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কমছেই তাহলে এত গম আমদানি হলো কেন? এর নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। আশা করি, বিবিএস বা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এর উত্তর খুঁজে বের করার জন্য আরেকটি জরিপ করে আমাদের আলোকিত করবে। শুধু গম কেন চালের ব্যাপারেও দেখা যাচ্ছে একই বিভ্রান্তিকর তথ্য। আমি বহুবার এই কলামে এবং অন্যত্র সগর্ব লিখেছি যে, আমরা কিঞ্চিত হলেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একবার, দুইবার আমরা শ্রীলঙ্কায় চাল রফতানিও করেছি। সব সময় অবশ্য নয়। এমতাবস্থায় বলেছি আমরা চালে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন দেখা যাচ্ছে আমরা কৃপণতা করেছি। কারণ বিবিএসের খানা জরিপ ২০১৬ এর তথ্য বিশ্বাস করলে আমাদের চাল উদ্বৃত্ত থাকে প্রচুর। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোট চালের উৎপাদন অর্থনৈতিক জরিপ মোতাবেক ছিল তিন কোটি ৪৭ লাখ মেট্রিক টন। অথচ ‘বিবিএস’-এর মাথাপিছু চাল ভোগের তথ্যানুযায়ী চাল লাগে মাত্র দুই কোটি ২১ লাখ টন। তাহলেই প্রশ্নÑ এই চাল গেল কোথায়? বিবিএস বলছে, ২০১৬ সালে লোকসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫০ লাখ। আর মাথাপিছু মানুষ চাল খেয়েছে ৩৬৭ গ্রাম। ২০১০ সালে মাথাপিছু আমরা চাল ভোগ করেছি ৪১৬ গ্রাম। অর্থাৎ ছয় বছরে কমেছে ৪৭ গ্রাম। অথচ ১৯৯৫ থেকে ২০১০ সাল অর্থাৎ ১৫ বছরে হ্রাস পেয়েছে ৪৮ গ্রাম। ছয় বছরের সমান ১৫ বছর। কেমন মনে হয় না পরিবর্তনটি। শর্করা গ্রহণ সমানে হ্রাস পাচ্ছে, শাক-সবজি খাওয়ায় কোন পরিবর্তন নেই, ফলমূল ও দুধ খাওয়া হ্রাস পেয়েছে, প্রোটিন গ্রহণ কমেছে মাথাপিছু ৬৬ গ্রাম থেকে ৬৩ গ্রামে। এমতাবস্থায় হিসাব কীভাবে মেলাই? মেলাতে হলে কয়েকটি পথ ধরতে হয়। যদি খানা জরিপের তথ্য সঠিক ধরে নিই অর্থাৎ মাথাপিছু ভাত-খাওয়া, রুটি খাওয়ার তথ্যকে সঠিক ধরে নিই তাহলে জনসংখ্যার তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করতে হয়। কেবল জনসংখ্যা যদি সাড়ে ষোলো কোটি না হয়ে সাড়ে সতেরো কোটি ধরে নিই তাহলে সরকারের খাদ্যশস্য উৎপাদন এবং আমদানির তথ্য মিলতে পারে। কিন্তু এটি হলে আমরা জনসংখ্যা হ্রাসে সফলতা অর্জনের যে দাবি করি তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মাথাপিছু আয়সহ আরও অনেক তথ্য ভিত্তিহীন হয়ে যায়। এক কথায় সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অনেক হিসাবই নষ্ট হয়ে যায়। সরকারের অনেক প্রক্ষেপণ ও পরিকল্পনা সংশোধন করতে হয়। তাই নয় কী? এই হওয়ার পরিকল্পনা কমিশন দেবে আশা করি। যদি জনসংখ্যার পরিসংখ্যান সঠিক মনে করা হয় তাহলে মাথাপিছু খাদ্য গ্রহণের তথ্যকে প্রশ্ন করতে হয়। সাদা চোখে বাস্তবে যা দেখা যাচ্ছে তা হচ্ছে অনেক মানুষ এখন মিহি চাল খায়, মোটা চাল অপছন্দ করে। আবার গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ দুই বেলার বদলে তিন বেলা ভাত খায়। প্রতি বছর নতুন শিশু আসছে। কতজন আসছে তার হিসাব অবশ্য নির্ভর করে জন্মহার কত ধরা হবে। যতই ধরা হোক না কেন ২৫-৩০ লাখ তো হবে কমপক্ষে। এসব দৃশ্যমান ঘটনা ধরে বলা যায় ভাত খাওয়া যদি কমেও থাকে তাহলে তা ‘বিবিএসের’ বর্তমান হিসাবের মতো হবে না। এর কিছু প্রমাণও আছে। শত হোক বিবিএসই তো একমাত্র তথ্য সূত্র নয়। বিবিএস বাদে ‘বিআইডিএস’ (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ) রয়েছে। এটি একটি নামকরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান। তারা সরকারের পক্ষে কাজ করে, জরিপ করে, গবেষণা করে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তাদের সাহায্য নেয়। বিদেশী সাহায্য সংস্থাগুলোও তাদের কাজে লাগায়। আমি যতটুকু জানি খাদ্য মন্ত্রণালয় ২০১২ সালে ‘বিআইডিএস’কে দিয়ে একটা গবেষণা করায়। উদ্দেশ্য ‘খাদ্য চাহিদা পরিকল্পনা’র জন্য তথ্য সংগ্রহ করা। তাদের হিসাবে ২০১২ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু চালের ভোগ ছিল ৪৬৩ গ্রাম। উল্লেখ্য, ‘বিবিএস’-এর ২০১০ সালের হিসাব ছিল মাথাপিছু ৪১৬ গ্রাম। তাহলে দেখা যাচ্ছে দুই প্রতিষ্ঠানের হিসাবের মধ্যে তফাত আছে কিছু। দুই বছরে ৪৭ গ্রাম বেশি চাল লাগছে মাথাপিছু। বলা বাহুল্য, ‘বিবিএস’ থেকে কোনভাবেই ফেলনা প্রতিষ্ঠান নয় ‘বিআইডিএস’। গুণমানে তাদের সুনাম বরং বেশি। দেশের প্রথিতযশা গবেষকরা এখানে কাজ করেন। সেই তুলনায় ‘বিবিএস’ তত সুনাম অর্জন করতে পারেনি। দুই দিন পর পরই ‘বিবিএস’-এর ওপর খবর প্রকাশিত হয়। তাদের লোকবল মারাত্মকভাবে কম। মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষিত কর্মী নেই, অফিসার পদের লোকের অভাব। দক্ষতার অভাব পদে পদে। এই ক’দিন আগেই ‘বিবিএস’-এর ওপর একটা স্টোরি ছাপা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ‘জিডিপি’ প্রবৃদ্ধির হিসাব করতে গিয়ে ‘প্যাঁচ’ লেগেছে। উৎপাদনের ভিত্তিতে হিসাব করলে প্রবৃদ্ধির হার হয় ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। আয়-ব্যয়ের ভিত্তিতে করলে হয় ৫ দশমিক ২১ শতাংশ। দুই শতাংশের সমস্যা কিন্তু বিশাল বড় ব্যবধান। ‘বিবিএস’ শেষ পর্যন্ত হয়ত হিসাব ‘মেলাবে’। এই যে, ‘মেলাবে’ এর প্যাঁচে কী চালের ভোগের হিসাব পড়েছে? জানি না। কোথাও না কোথাও একটা কিন্তু আছে। নতুবা আন্তঃপ্রতিষ্ঠান, আন্তঃমন্ত্রণালয় হিসাবের মধ্যে এত পার্থক্য হবে কেন? সরকার একটি এর ভাল-মন্দ এক। এমন নয় যে, এক মন্ত্রণালয়ের লাভ অন্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষতি। তা তো নয়। তাহলে চালের হিসাবে গ-গোল হবে কেন? কীভাবে, কী কারণে, কী অবস্থায় মাথাপিছু চালের ভোগ, গমের ভোগ কমছে তার ব্যাখ্যা দরকার। বিশেষ করে যেখানে শাক-সবজি, ফল-মূল, দুধের ভোগ বাড়েনি, বরং কমেছে। তবে কী চালের অন্যবিধ ব্যবহারও হচ্ছে? আজকাল দেখা যাচ্ছে পশুখাদ্য হিসেবে চালের ব্যবহার হচ্ছে, গমের ব্যবহার হচ্ছে। মাছের খাবার হিসেবে, পাঙ্গাশ মাছের খাবার হিসেবে চালের ব্যবহার হচ্ছে। এসব চোখে দেখা ঘটনা। দেশের জমিতে মাঠে এখন আগের মতো ঘাস নেই। সরিষার তেল তৈরির সময় খৈল হতো। খৈল ছিল গরুর খাদ্য। এখন সরিষার তেলের বদলে মানুষ খাচ্ছে সয়াবিন। অতএব খৈলের ব্যবহার প্রায় শূন্য। যেটাকে আমরা ‘খড়’ বলি তা ছিল গরুর খাদ্য। আজকাল ধানের গাছ খুব শক্ত। এসব পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে কম। এর প্রেক্ষাপটে এক ধরনের চালকে, নিম্নমান গমকে মানুষ মাছের খাদ্য ও পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। এর কী কোন হিসাব আছে? মনে হয় না। আবার বীজের জন্য বেশকিছু ধান ব্যবহৃত হয়। ইঁদুর, পোকায় খায় অনেক ধান। এসবের হিসাব আছে কী? চালের উৎপাদন এবং ভোগের হিসাবে সময় কী এসবের হিসাব ধরা হয়? তার পরেও কথা আছে। যে চাল উৎপাদন হয় তার একটা অংশ কৃষকরা নিজেরাই ভোগ করে। উদ্বৃত্ত কৃষকরা চালের একটা অংশ তাদের স্টকে রাখে, এটা হয় অনেক সময় রিভলবিং স্টক। এতে কত চাল আটকা পড়ে যা সরকারের হিসাবে আছে অথচ বাজারে নেই। এসব বিষয় কী চালের হিসাবে এবং ভোগের হিসেবে আসে? আমার জানা নেই। তবে এ কথা বলতে পারি চাল ও খাদ্যশস্য পরিকল্পনার জন্য সঠিক তথ্য দরকার নির্ভরযোগ্য তথ্য দরকার। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় এসব হিসেবে জড়িত থাকা দরকার। তা না হলে ভুল বোঝাবুঝি হয়। অহেতুক ‘মিডিয়ায়’ আলোচনা হয়। আলোচনাটা রাস্তার ওপর নয়। চাল, ভাতের ওপর, খাদ্যশস্যের ওপর। বড় স্পর্শকাতর বিষয়। অতএব ‘বিবিএস’ তার প্রকাশিত তথ্যের ব্যাখ্যা দিক। কীভাবে তারা কোথায় কোথায় জরিপ করে এসব তথ্য পেল তা দেশবাসীকে জানানো হোক। নতুবা বিতর্কের জন্ম হবে। সরকার প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। অথচ নির্বাচন সামনে। এমতাবস্থায় আমার মনে আরেকটি প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কি জানেন এসব তথ্যের কথা। তিনি কি সন্তুষ্ট এসবে? লেখক : সাবেক শিক্ষক, ঢাবি
×