ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার মানুষ বানানো ও রংপুরের ঘটনা -স্বদেশ রায়

প্রকাশিত: ০৩:৩৬, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

খালেদার মানুষ বানানো ও রংপুরের ঘটনা -স্বদেশ রায়

বেগম জিয়ার জনসভায় উপস্থিত ছিলেন এলাকার এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার হঠাৎ একটা সুযোগ হলো। তাঁদের কথার ভেতর দিয়ে জানতে পারলাম, বেগম জিয়ার এত বেশি শেখ হাসিনাবিরোধী কথা মানুষ পছন্দ করেননি। তাঁদের বক্তব্যে শেখ হাসিনাবিরোধী এত কথা তিনি না বললেও পারতেন। তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন করি, খালেদা তো শেখ হাসিনাবিরোধী রাজনীতি করেন, তিনি তো হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলবেনই। তাঁদের কথা অনেকটা সোজাসাপটা, তাঁরা বলেন, দেখেন শেখ হাসিনা এই দেশের জন্য যা করেছেন তা আর কেউ কোন দিন করেননি। খালেদা জিয়া নিজে হলেও করতে পারতেন না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে এসব কথা এখন মানুষ শুনতে চায় না। তাঁদের কথা শুনে মনে পড়ল শ্রদ্ধেয় আতাউস সামাদ ভাইয়ের কথা। ১৯৯১ সালে দৈনিক বাংলা মোড়ে খালেদা জিয়া মিটিং করছেন। সামাদ ভাই ও আমি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নোট নিচ্ছি। খালেদা জিয়ার ভাষণ চলছে। এর ভেতর হঠাৎ খালেদা জিয়া বললেন, ‘ওই যে এক নেতা ছিলেন, যার সময় মানুষ কলাপাতায় খেত, কাপড়ের বদলে জাল পরত...’ এটুকু বলতেই সামাদ ভাই আমার হাত চেপে ধরলেন, তিনি বললেন, একি করলেন বেগম জিয়া! যে মানুষটা দেশ দিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে উনি কথা বললেন- তাছাড়া শেখ সাহেব (সামাদ ভাই বেশিরভাগ সময় শেখ সাহেব বলতেন) ওনার নিজের জীবনের জন্য যা করেছেন সেটাও উনি ভুলে গেলেন। বলে তিনি একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন- স্বদেশ, রাজনীতিবিদদের ভাষা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমরা সোহ্রাওয়ার্দী সাহেব, মওলানা সাহেব, শেখ সাহেব এনাদের ভাষণ শুনে নিজেদের পরিশীলিত করেছি। সেই ’৯১ থেকে এখনও অবধি বেগম জিয়া তাঁর ভাষণের ধরন বদলাননি বরং পার্লামেন্টে পার্লামেন্ট মেম্বারকে উদ্দেশ করে তিনি তাঁকে বলেছেন, ‘চুপ বেয়াদব’। সাধারণ মানুষ, তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী হন আর পার্লামেন্ট মেম্বার হন সবাইকে তিনি ‘বাটলার’ মনে করেন। গাজী উল হকের বাসায় মির্জা গোলাম হাফিজকে বলতে শুনেছি গাজী উল হককে, ‘না গাজী আর রাজনীতি করতে ইচ্ছে করে না, জিয়াও যে সম্মানটুকু দিত তাঁর স্ত্রী সেটুকুও দেয় না।’ যা হোক, এলাকার ওই লোকদের সঙ্গে কথা বলার পরেও বিষয়টি নিয়ে অত ভাবিনি, কেন মানুষ শেখ হাসিনাবিরোধী কথা পছন্দ করছেন না। এর ভেতর টেলিফোনে কথা হলো আওয়ামী লীগের এক প্রবীণ নেতার সঙ্গে। যার প্রাকটিক্যাল রাজনৈতিক বোধ উপমহাদেশের প্রথম সারির রাজনীতিবিদদের সমান। তিনি ফোন করে বললেন, একটা বিষয় লক্ষ্য করেছ, খালেদা জিয়ার জনসভায় যে সব মিছিল গিয়েছিল তাতে শেখ হাসিনাবিরোধী স্লোগান কম ছিল। তাঁকে প্রশ্ন করি, আপনি জানলেন কীভাবে? তিনি জানালেন, নিজের একটা প্রয়োজনে তিনি তখন ওই এলাকায় ছিলেন এবং তিনি খুব লক্ষ্য করে শুনেছেন, বেশিরভাগ স্লোগান ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, এর অর্থ কি? তিনি বলেন, অর্থ অতি সোজা। মানুষ শেখ হাসিনার বিকল্প কাউকে ভাবছে না, তবে শেখ হাসিনাকে একটা বার্তা দিচ্ছেন- তিনি যাতে স্থানীয় নেতা পরিবর্তন করেন। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের সঙ্গে আমি শতভাগ একমত। কারণ, এই কলামেও আগেও লিখেছি শেখ হাসিনার এখন যে জনপ্রিয়তা তাতে তাঁর প্রতিনিধি খালেদা জিয়ার ঘাঁটি বগুড়াতেও জিতবে। কিন্তু তাকে বগুড়ার ওই সব নেতাকে বদল করতে হবে- যাদের রিক্সাওয়ালার কাছ থেকে চাঁদা নেয়া বন্ধ করে এসেছেন তাঁর দলের সেক্রেটারি। এমনি শুধু বগুড়ায় নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতারা জুয়ার আসর বসিয়ে টাকার ভাগ নিচ্ছে। আর বেশি ক্ষেত্রে এসব জায়গায় তারা জামায়াত ও বিএনপির সঙ্গে মিলে কাজ করছে। তাই শেখ হাসিনার দরকার লোভহীন সত্যিকার কোন চোখ দিয়ে গোটা দেশ দেখে- বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় নেতা বদলানো ও প্রকৃত সৎ নেতাদের সামনে নিয়ে আসা। কাজটি খুব কঠিন। কারণ, কনটেম্পট চ্যালেঞ্জ মামলা চালানোর পর থেকে গত প্রায় তিন বছর আইন অঙ্গনে শেখ হাসিনার অনেককে দেখার সুযোগ হয়েছে। অনেকের আমলনামা যোগাড়ও করেছি। অথচ তাদের বাইরে থেকে চেনার উপায় নেই। বরং বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের ওপর থেকে অনৈতিক ও দুর্নীতির মূর্তিমান ব্যক্তিটি চলে যাওয়ার পরে আইন অঙ্গনের আওয়ামী লীগের ওই সব লোকের আচরণ দেখে এখন হাসি পায়। ব্যারিস্টার তাপস এক ব্যক্তিকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন, তাপস শতভাগ সঠিক ছিলেন। আসলে তাঁর সহায়তা না থাকলে ষোড়শ সংশোধনীর মামলা সুপ্রীমকোর্টে চলতে পারত না, অনৈতিক কাজ করা ও দুর্নীতিগ্রস্ত ওই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি পাকিস্তানের হুমকিও দিতে পারতেন না। অথচ তারই সহযোগী আইন অঙ্গনের আওয়ামী লীগের সেই সব লোক এখন যেভাবে বদলে গেছে তাতে শেখ হাসিনা সত্য-মিথ্যা চিনবেন কীভাবে, এটা আমাদের মতো সাধারণের প্রশ্ন। তবে সাধারণের কাছে যা অসম্ভব নেতা সেই কাজই করতে পারেন। তাছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আজ প্রশ্নাতীত। তাই এগুলোও তাঁর কাছে অসম্ভব নয়। বেগম জিয়া শেখ হাসিনাকে আক্রমণ করা ছাড়া আরও একটি কথা বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগকে মানুষ বানাবেন। রাজনীতিবিদ হয়ে মানুষ তৈরির কথা শুনে মনে পড়ল ছোটবেলায় যখন রাজনীতি বুঝতাম না সে সময়ে পড়া একটি বিষয়। সে সময়ে কোন একটা বইয়ে পড়েছিলাম, বইটির নাম ঠিক মনে নেই- দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের একটি কথা। তিনি বলেছিলেন, আমি সর্বস্ব ত্যাগ করে রাজনীতি করতে এসেছি- দেশকে, দেশের মানুষকে কিছু দেয়ার জন্য। আর সে কাজে আমার প্রথম প্রয়োজন মানুষ তৈরি করা। আমার প্রথম সন্তান সুভাষ, তাকে আমি সোনার মানুষ তৈরি করতে চাই ভারতবর্ষের জন্য। তাঁর কথা শুনে তৎকালীন দেশবন্ধুর স্বরাজ পার্টির নেতা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, সুভাষই হবে আপনার আদর্শের প্রকৃত সন্তান। সুভাষের ভেতর দিয়েই আমরা আপনার পূর্ণতা দেখতে পাব। সুভাষ চন্দ্রের জীবনাবসান ঘটেছে ৪৪ বছরের মতো বয়সে। তার ভেতরই তিনি নেতাজী হয়েছেন এবং ভারতের সেরা মানুষটিই হয়েছেন। সুভাষ বোস থেকে শুরু করে অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সকলেই ছিলেন দেশবন্ধুর অনুসারী। বেগম জিয়ার অনুসারী কারা! বেগম জিয়ার সোনার ছেলে ছিল পিন্টু। তাকেই তিনি ছাত্রদলের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ নিয়ে অনেক কথা। স্নেহভাজন ছোটবোন প্রখ্যাত সাংবাদিক মুন্নী সাহার কথা নিয়ে বলতে হয়, ‘ছাত্রলীগ প্রথম আলোর একটি প্রিয় সাবজেক্ট।’ প্রথম আলোও কিন্তু শত চেষ্টা করেও আজও পর্যন্ত বের করতে পারেনি, ছাত্রলীগের কোন সভাপতি পিন্টুর একশ’ ভাগের একভাগ সন্ত্রাসী। তাছাড়া তারা কেউ পিন্টুর মতো অতটা গুণী নয় যে, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে আর বেশি দূর না গিয়েই ছাত্রদলের সভাপতি হতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। শোনা যায় শিক্ষা-দীক্ষায় পিন্টুও খালেদা জিয়ার সমমানের ছিলেন। এ ছাড়া খালেদা আরও মানুষ বানিয়েছেন, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, লুকিং ফর শত্রুজ বাবর, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি আরেক পিন্টু এমনকি তার ভাই তাইজুদ্দিনও খালেদার বানানো মানুষ। তবে শেখ হাসিনার ও রেহানার ভাগ্য ভাল, তাঁরা তাদের ছেলেমেয়েদের আগের থেকেই মানুষ করেছেন। তাঁরা সকলে পশ্চিমা শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত ও বিনয়ী। সর্বোপরি, নিজ নিজ পেশায় প্রতিষ্ঠিত। নইলে বেগম জিয়া ক্ষমতায় গিয়ে যদি তাঁদেরও মানুষ করার দায়িত্ব নিতেন তাহলে তো সমূহ বিপদ ছিল শেখ হাসিনা ও রেহানার জন্য। কারণ, বেগম জিয়া তাঁর নিজের দুই ছেলেকে এমনই মানুষ করেছেন, একজন ড্রাগ এডিকটেড হয়ে অকালে মারা গেলেন। আরেকজন দেশে খুন, ঘুষ ও দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য ‘হাওয়া ভবন’ করেছিলেন। এই হাওয়া ভবনখ্যাত তারেক রহমান এখন লন্ডনে নির্বাসিত অথচ বিলাসী জীবনযাপন করছে। ব্রিটেন সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার জানতে চাইতে পারে, তারেক রহমান সেখানে যে এভাবে বিলাসী জীবনযাপন করছে তার আয়ের উৎস কি? তিনি কী করেন সেখানে, তার অর্থ অলৌকিক জাদুতে আসে না জুয়ায় আসে? তবে খালেদা জিয়ার ভাষণের এই অংশ বাস্তবে ভয়াবহ। কারণ দেশের মেজরিটি মানুষ আওয়ামী লীগ করে। এখন তিনি যদি আওয়ামী লীগারদের মানুষ করতে গিয়ে ঘরে ঘরে তারেক রহমান ও কোকো তৈরি দেন তাহলে তো বাংলাদেশে অলৌকিক জাদু বা জুয়ার অর্থ আর ড্রাগ ঘরে ঘরে ঢুকে যাবে। এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথ কি? দেশের মানুষকে তো এই একটি কারণে বেগম জিয়াকে যে কোন ভাবে হোক ক্ষমতার বাইরে রাখতে হবে। নইলে ঘরে ঘরে জুয়া ও ড্রাগ ঢুকে যাবে। ঘরে ঘরে যদি পিন্টু, তারেক ও কোকো থাকে তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কী হবে ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। এখন স্রষ্টার কাছে শুধু দেশের মানুষের একটাই প্রার্থনা, ত্রিশ লাখ শহীদের দেশে হে স্রষ্টা! তুমি একমাত্র দুর্গতকে রক্ষা করতে পার। তুমি আর যাই হোক, এ দেশে ঘরে ঘরে পিন্টু, তারেক, কোকো দিও না। আশা করি, পরম করুণাময় বিশ্বস্রষ্টা শহীদের রক্তে কেনা এ দেশকে ওই দোজখসম অবস্থানে নিয়ে যাবে না। স্রষ্টার প্রতি যাদের অগাধ বিশ্বাস, তারা আর যাই হোক স্রষ্টার সৃষ্টি কোন জীবকে আঘাত করতে পারে না। বরং সকল জীবের, সকল ধর্মের, সকল পথের মানুষের প্রতি বিশ্বাসীদের থাকবে পরম শ্রদ্ধা। রংপুরে স্রষ্টার অবমাননার নামে, স্রষ্টার প্রেরিত পুরুষের অবমাননার নামে, তাঁর সৃষ্ট মানুষের ওপর যে আঘাত করা হয়েছে ধর্মের নামে- এই কাজ যারা করেছে তাদের আর যাই হোক ধার্মিক বলা যায় না। খুব কাছের থেকে মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশকে দেখেছি। নিজ ধর্মের প্রতি কোনরূপ লাভ-লোকসান ছাড়া এমন শতভাগ আনুগত্য আমি অন্য কোন মানুষকে আমার জীবনে দেখার সুযোগ এখনও পাইনি। তাঁর ধর্ম বিশ্বাসে কখনই অন্য ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের প্রতি আঘাত হানার কোন বিন্দুমাত্র সুযোগ ছিল না। একটি সত্য আমাদের সকলকে মানতে হবে, ধর্মের নামে অন্য ধর্মের লোকের ওপর যখন কোন আঘাত হয় এখানে ধর্মীয় বিশ্বাস থাকে না; এখানে ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। রংপুরে নিরীহ, দরিদ্র ও কম শিক্ষিত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে রাজনীতির খেলার ঘুঁটি বানিয়েছে যারা- তাদের ওপর আঘাত করেছে যারা, তাদের বাড়িঘর লুট করেছে, আগুন দিয়েছে যারা- তাদের বিরুদ্ধে শুধু আইনী ব্যবস্থা নিলে হবে না। এলাকার মানুষ, দেশের মানুষেরও দায় আছে এখানে। এদের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। রংপুরে ওই দিন যে সকল হামলাকারী পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছে তাদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের ও বিএনপির কর্মী। তাই এখন দেশের নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে, সারাদেশে সামাজিকভাবে জামায়াত-শিবিরের ও বিএনপির কর্মীদের প্রতিহত করা, তাদের চিহ্নিত করার কাজে। কারণ, জামায়াতের মতো ক্যাডারভিত্তিক দল কখনই স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ কাজ করেনি। তাছাড়া এ কাজে দেখা যাচ্ছে খুলনার এক ব্যক্তিও জড়িত। তাই দেশের প্রকৃত নাগরিক সমাজকে (তথাকথিত ছদ্মমৌলবাদী ওই সব সুজন নয়) এখনই সজাগ হতে হবে। কারণ আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির এ কাজ আরও বেশি করবে। তাদের এখন থেকে কীভাবে প্রতিহত করা যায় এ জন্য প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেভাবে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে হিন্দুদেরও ভীত হলে চলবে না। তাদের নিজেদেরও প্রতিরোধে নামতে হবে। মনে রাখতে হবে কোন হিন্দুই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক নন বা মাইনরিটি নন। সংবিধান অনুযায়ী সমান অধিকারে অধিকারী। এ দেশেই তাদের শক্ত হয়ে থাকতে হবে। এ ধরনের কয়েকটি ঘটনার ভেতর এবারে সরকার অনেক বেশি শক্ত অবস্থান নিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালিয়ে বন্ধ করেছে হামলা। তবে তার পরেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা আছে। তিন দিন ধরে এলাকায় এ নিয়ে ঘোঁট পাকানো হচ্ছিল। পুলিশও জানে। তাহলে পুলিশ কেন মূল হোতাদের আগে থেকে গ্রেফতার করল না? কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রেসকে জানিয়ে দিল না এ ধরনের একটি ঘটনা ফেসবুকের মাধ্যমে সাজানো হচ্ছে। এগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খুঁজে বের করতে হবে। সর্বোপরি তাকে মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচনের আগে এই এক বছর বিএনপি ও জামায়াত এমনি নানা খেলা খেলবে, কোথাও কোথাও তারা আওয়ামী লীগকেও কৌশলে এর সঙ্গে জড়াবে। তাই আগামী এক বছর তাঁর জন্য অনেক কঠিন সময়। জঙ্গী আছে, আরও সহিংসতা আসবে, গুপ্তহত্যা আসবে, হিন্দুদের ওপর আঘাত করার চেষ্টা করবে। এগুলো নিয়ে তাই সরকার ও নাগরিক সমাজকে এখন থেকেই সজাগ হতে হবে। অন্যদিকে এই লেখা যখন শেষ করছি তখন খবর পেলাম, অশিক্ষিত, ফেসবুক চালাতে পারে না এমন যে টিটু রায়ের নামে ফেসবুক পোস্ট দেয়া হয়েছিল- তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে কেন গ্রেফতার করা হবে? খুলনার যে মওলানা মূল পোস্টটি দেয় তাকে গ্রেফতার না করে কেন টিটু রায়কে গ্রেফতার করা হলো? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বুঝে এ কাজটি করলেন, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজকে এ প্রশ্নটি অবশ্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করতে হবে। [email protected]
×