ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলনের হুমকি

রাসিকে বুলবুল অনুসারীদের নিয়োগের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

রাসিকে বুলবুল অনুসারীদের নিয়োগের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল না করেই এবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে (রাসিক) দৈনিক মজুরিভিত্তিক ১২ শ্রমিক কর্মচারীকে অস্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের সকলেই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের অনুসারী বলে অভিযোগ উঠেছে। আকস্মিকভাবে এ নিয়োগ দেয়ায় সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক এবং কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা অভিযোগ করেন, মেয়র বুলবুল তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছেন। পূর্বের ছাঁটাইকৃত ১৫৪ দৈনিক মজুভিত্তিক শ্রমিক ও কর্মচারীকে পুনর্বহাল না করেই এবার তার অনুসারীদের নিয়োগ দিয়েছেন। ফলে মেয়র সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। শ্রমিক ও কর্মচারীদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করেই এ ধরনের নিয়োগ মেনে নেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তারা। এরই মধ্যে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা রাসিক সচিব মাহাবুবুর রহমানের সঙ্গে করে তাদের ক্ষোভের বিষয়টি জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত ৯ ও ১২ নবেম্বর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ১২ শ্রমিক ও কর্মচারীকে অস্থায়ী নিয়োগ দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর বিএনপির এক নেতা জানান, যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর বাইরে দু-একজন ব্যবসায়ীও রয়েছেন। যেমন যন্ত্রকৌশল বিভাগে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে শাহেদুজ্জামানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, গত জুলাই মাসে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং ১৫৪ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক ও কর্মচারীকে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়ন। আন্দোলনের তীব্রতায় সেসময় মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিক ও কর্মচারীদের পুনর্বহালের আশ্বাস দেন। মেয়রের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মচারী ইউনিয়ন আন্দোলন থেকে সরে আসে। তবে নতুনভাবে নিয়োগ দেয়ায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজমীর আহমেদ বলেন, আমরা সচিবের সঙ্গে দেখা করে নতুনভাবে নিয়োগ দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছি। ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল না করে নতুনভাবে কীভাবে নিয়োগ দেয়া হলো সে ব্যাপারে সচিব কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল এবং নিয়োগকৃতদের চাকরি বাতিলের দাবিতে শীঘ্রই আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছে তিনি। কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল শেখ বলেন, চার মাস পেরিয়ে গেলেও মেয়র কর্মরত দুই হাজার দুইশ শ্রমিক-কর্মচারীর ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন করেননি। ইতোমধ্যে তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে তার অনুসারীদের নিয়োগ দিয়েছেন। এটা মেনে নেয়া হবে না। প্রয়োজনবোধে মেয়র বুলবুলকে অপসারণের মতো কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে। তবে এ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, সিটি কর্পোরেশনে দক্ষ শ্রমিক ও কর্মচারীর অভাব রয়েছে। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা সকলেই দক্ষ শ্রমিক ও কর্মচারী। আর রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি অযৌক্তিক। সিটি কর্পোরেশনের প্রয়োজনেই বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
×